ইটের বদলা পাটকেল, কানাডার কূটনীতিককে ভারত থেকে বহিষ্কার নয়াদিল্লির

জি২০ সামিটের(G-20 Summit) পর থেকেই ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল তা এবার চরম আকার নিল। কানাডায় খলিস্তানপন্থী এক শিখ আন্দোলনকারী হত্যার ঘটনায় ভারতের দিকে আঙুল তুলে কানাডায় নিযুক্ত এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ট্রুডোর দেশ। এর পাল্টা এবার ভারতে নিযুক্ত কানাডার(Canada) এক কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিল নয়াদিল্লি(New Delhi)। পাশাপাশি কানাডার দাবিকে অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক(Indian Forign Ministry)।

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের সারে শহরের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের পার্কিং লটে গুলি করে খুন করা হয় খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে। খালিস্তানি জঙ্গি নেতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারতকেই দায়ি করেন ট্রুডো। তাঁর দাবি, ভারত সরকারের চরই কানাডায় ঢুকে গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারের সভাপতি হরদীপ সিং নিজ্জরকে খুন করেছে। এই ঘটনায় ভারতের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কানাডাস্থিত ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানান, ওই ব্যক্তি ভারতের ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (আরএডব্লিউ)-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। যদিও তাঁর নাম জানাননি মেলানি। যদিও কানাডার এই অভিযোগে বেজায় ক্ষুব্ধ ভারত। কূটনৈতিক ভাষাতেই এর জবাব দিয়েছে নয়া দিল্লি। নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচির কথায়, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি খালিস্তানিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এমন অযৌক্তিক কথা বলছেন। পাশাপাশি আরও জানানো হয়, “কানাডার মাটিকে ব্যবহার করে ভারতের কোনও রকম হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একই ধরনের অভিযোগ কানাডার প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও করেছিলেন এবং তা সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।”

এর পর সরাসরি কানাডার সরকারকে খোঁচা দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, “এই ধরনের অপ্রমাণিত অভিযোগ আসলে খলিস্তানি জঙ্গি এবং চরম বা কট্টরপন্থীদের উপর থেকে নজর ঘোরাতে চায়। ঘটনাচক্রে, যাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে কানাডায় এবং যাঁরা ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে হুমকি দিয়ে চলেছে। এ বিষয়ে কানাডা সরকারের নিষ্ক্রিয়তা দীর্ঘস্থায়ী।” এই ঘটনায় ভারতে কানাডার হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কানাডার দূতাবাসে কর্মরত এক সিনিয়র কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ওই সিনিয়র কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।

উল্লেখ্য, জি২০ বৈঠকে ট্রুডো ও মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের তরফে জানানো হয়েছিল, কানাডা সরকারের মদত ছাড়া এমনটা হওয়ার কথা নয়। এমনকি তিনি এও বলেন, ভারত বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আর যে ভাবে কানাডার আশ্রয়ে থেকে এই ভারত বিরোধীরা দিনের পর দিন সংগঠিত অপরাধ করে চলেছে, তাতে কানাডার কাছেও বিষয়টি উদ্বেগের হওয়া উচিত। যদিও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পরই সাংবাদিক বৈঠকে ট্রুডো সাংবাদিক সম্মেলনে খলিস্তানি আন্দোলনকে তাঁর দেশে বসবাসকারী শিখদের বাক্ স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার বলে উল্লেখ করে ভারতের উদ্বেগকে একেবারে গুরুত্বই দিতে চাননি। ট্রুডোর ওই মন্তব্য ভালভাবে নেয়নি মোদি সরকার। সেই ঘটনার পর এবার ধাপে ধাপে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক চরম পর্যায়ে পৌঁছল।

Previous articleসিলভার পয়েন্ট হাইস্কুল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কলকাতা হাইকোর্টের! তদ*ন্তের নজরদারিতে কমিশনার
Next articleপাঞ্জাবে জনপ্রিয় কংগ্রেস নেতাকে খু.ন,দায় স্বীকার কানাডায় পালানো গ্যাং.স্টারের