বাংলায় এসে দেখুন কী কাজ করেছি: BGBS-এ লগ্নিকারীদের আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর


কুণাল ঘোষ
মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী

দুবাই: নিজেরা এসে দেখুন বাংলায় আমরা কী কী কাজ করেছি, বাংলা আজ কতটা এগিয়ে গিয়েছে। শুক্রবার, দুবাইয়ের (Dubai) শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে BGBS-এ যোগ দিতে লগ্নিকারীদের আহ্বান জানিয়ে বললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, লগ্নির সেরা ঠিকানা এখন পশ্চিমবঙ্গ। ভারতের বাণিজ্য ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ করছে বাংলা। বাংলা আজ সবদিক থেকে এগিয়ে।

 

প্রথমে মাদ্রিদ। তারপর বার্সেলোনা। এবার দুবাই। একের পর এক শিল্প সম্মেলন মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন স্থানীয় সময় ৪টে ৫ মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন, তার আগে বাংলার শিল্পপতিরা তাঁর শিল্পবন্ধু ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গয়না, চা-শিল্প, টেলিকম, পেট্রোলিয়াম সব ক্ষেত্রেই দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ রয়েছে। কৌশলগত অবস্থানের ক্ষেত্রে দুবাই ও বাংলার অনেক মিল রয়েছে। সংস্কৃতির দিক থেকেও এই দুই জায়গার মধ্যে মিল আছে। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যই বাংলার বিশেষত্ব ও ঐতিহ্য।

রাজ্য সরকারের অসংখ্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বাংলার ৯৯ শতাংশ মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। মহিলা থেকে শুরু করে সকলের জন্য সুরক্ষা রয়েছে বাংলায়। শিশুসুরক্ষা ও নারী ক্ষমতায়নে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে এক নম্বরে। তাঁর কথায়, আমরা মানবতার সেবা করি। এটাই উন্নয়নের মূল মন্ত্র। গতবছরের শিল্প-সম্মেলনে পার্টনার বা সহযোগী দেশ ছিল আরব আমিরশাহি। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করে আরব আমির শাহির মন্ত্রী ড. থানি বিন আহমেদ অল জেউদি। মূলত তাঁদের মধ্যে যে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়-
১. বাংলা ও আরব আমিরশাহির মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত করা এবং বাংলা থেকে দুবাই থেকে রফতানি করা
২. আরবের মন্ত্রীকে হিসেব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেখান বাংলা থেকে যত রফতানি হয় তার ১২% শতাংশ আরব আমিরশাহিতে যায়
৩. মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রসঙ্গে: সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলা এবং আগামী ২৩-২৪ আর্থিক বছরে বাংলার জিডিপি ২১২ বিলিয়ন হবে।

পরে এই বৈঠক নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: “৩৪ বছরের খরা কাটিয়ে বাংলায় সোনা ফলাচ্ছেন দিদি”, দুবাইয়ে বললেন শিল্পপতিরা

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প ভবিষ্যৎ। পর্যটন ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি করেছে বাংলা। পর্যটনে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

কেন বাংলায় বিনিয়োগ? মুখ্যমন্ত্রী তা ব্যাখ্যাও করেছেন। বাংলায় মেধাসম্পন্ন ও দক্ষ কর্মী রয়েছেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন ভারতের সফল চন্দ্র-অভিযানে ৪০ জন বাঙালি বিজ্ঞানীর অংশগ্রহণের বিষয়টি। বলেন, বাংলায় দক্ষ মানবসম্পদ রয়েছে। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার হল বাংলা। মাত্র ৩০ মিনিটে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশে যাওয়া যায়। উত্তর ভারতকে ধরতে গেলে আপনাকে বাংলায় কাজ করতে হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাতবারের সাংসদ, কয়লা-রেল-যুবকল্যাণ ক্রীড়ার মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলেছেন, তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী। নিজের দীর্ঘ রাজনৈতিক- প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, রাজ্য সরকারের কাজকে বহুবার সেরার স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজনৈতিক কারণে কিছু সংবাদমাধ্যম অপপ্রচার করলেও তাঁর মন্তব্য, নিজেরা এসে দেখুন কীভাবে কাজ করে বাংলা।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বিদ্যুৎ নিয়ে সমস্যা নেই। বয়ন থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র থেকে সিলিকন ভ্যালি, পর্যটন, ডেটা পলিসি, সর্বত্র বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে। নভেম্বর মাসে হতে চলা BGBS-এ লগ্নিকারীদের যোগ দেওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

 

Previous articleরাশিয়া-ইউক্রেন যু.দ্ধের পরিণতি কী? রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ভারতের   
Next article৩৪ বছর অতীত, বাংলায় এখন শিল্প বিপ্লব: দুবাইয়ে বললেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা