Monday, August 25, 2025

খরুন গ্রামে শোলার মূর্তিতে পুজো! এক বছর পর মহালয়ার দিন মায়ের নিরঞ্জন

Date:

Share post:

দেবর্ষি মজুমদার: বাংলার কোণায় কোণায় ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক প্রাচীন ও বনেদি বাড়ির পুজো। প্রতিটিরই কোনও না কোনও বিশেষত্ব রয়েছে। খরুন গ্রামের রায় জমিদার বাড়িতেও রয়েছে এমন একটি বিশেষত্ব। আর তার পিছনে রয়েছে একটি বহু প্রাচীন লোককথা। তা সত্যিই গল্প নাকি সত্যি ঘটনা তা অবশ্য আর জানা যায় না। রায় জমিদার বাড়িতে মাটির মূর্তিতে পুজো হয় না। ধাতুর মূর্তিতেও হয় না। তার বদলে পুজো হয় শোলার মূর্তিতে।

ঠিক একবছর পর এবার মা দুর্গার নিরঞ্জন হবে মহালয়ার দিন। তবে কোনও মৃন্ময়ী মূর্তি নয়। পটের একচালা দেবী মূর্তি হয় বীরভূমের রামপুরহাট থানার অন্তর্গত গ্রাম খরুণে। সারা বছর পটের মূর্তি মন্দিরে রেখে দেওয়া হয় ও তাঁর পুজো হয়। মহালয়ার দিন বিকেলে সেই  একচালা পট মূর্তি নিরঞ্জন হয়।এটাই এই পুজোর রীতি। এরপর পিতৃপক্ষের শেষে প্রতিপদের সূচনায় ঘটে জল ভরে এবং বলিদানের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়।

এখানে বিগত ৩৫৪ বছর ধরে শোলার মূর্তিতে পুজো হয়ে আসছে। এই চিরাচরিত প্রথা বা রীতি নিয়ে একটি উপকথা লোকমুখে শোনা যায়। গ্রামের জমিদার রাম নিধি রায় ও রামকানাই রায় এই পুজোর প্রবর্তন করেন। কথিত, রায় বংশের এক কুমারী মেয়ে মন্দিরে মাটির  দেবীকে সন্ধ্যারতি করতে যান। তারপর তিনি  আর মন্দির থেকে বের হননি। জমিদার বাড়ির লোক মন্দিরে ঢুকে দেখতে পান ওই কুমারীর পরিধেয় শাড়ির লাল পাড়ের অংশ বিশেষ। আর তারা বুঝতে পারেন, কি হয়েছে। তারপর থেকেই কাগজের পুজোর প্রচলন হয়।

পটে স্থানাভাবে রায়বাড়ির এই পুজোয় কার্তিক ও গণেশ নেই। সেই রীতির ব‍্যতিক্রম আজও হয়নি। তবে বর্তমানে কাগজের পরিবর্তে দেবীর শোলার পট মূর্তি হয়ে থাকে। গ্রামে রায় বাড়ি ছাড়া আরও চারটি সাবেকি পূজা হয়। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় ওই চার পুজো বাড়ির প্রতিনিধি রায় মণ্ডপে হাজির হন। তারপর সবাই  মিলে নব পত্রিকা নিয়ে দোলার ঘট ভরা হয়। এই পুজোর  আরেকটি  উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ  হলো সর্বত্র দশমীতে সিঁদুর খেলা হলেও, এখানে  সপ্তমীতে মহিলারা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন।

জমিদার বাড়ির  অন‍্যতম বংশধর তরুণ কুমার রায় বলেন,  মায়ের তিন দিন ভোগ হয়। একদিন লুচি ও দুদিন অন্ন ভোগ হয়। মায়ের ভোগে নবমীর দিন মাছ পোড়া ও মেটে ভাজা হয়। অষ্টমীতে সন্ধী পুজোর ছাগ বলি হয়। সপ্তমী, নবমীতেও হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত  রায় বংশের কোনও বাড়িতে হাঁড়ি চড়ে না। পরিবারের  প্রায় ৩০০ সদস্য এক জায়গাই পাত পেড়ে খান।

 

spot_img

Related articles

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...

আধারের অভাবে রেশন বঞ্চনা নয়, কড়া নির্দেশ খাদ্য দফতরের 

আধার কার্ড না–থাকা বা বায়োমেট্রিক যাচাই না–হওয়ার কারণে আর কোনও বৈধ রেশন গ্রাহককে খাদ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত...

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে সমকামী সম্পর্ক-ব্ল্যাকমেইল! তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য

হাওড়ায় বৃদ্ধ খুনের নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার সালকিয়ার অরবিন্দ রোডের বাসিন্দা অসীম দে (Asim de) খুন...

গাড়ির মালিকানা বদল ও রেজিস্ট্রেশন নবীকরণে বড় ছাড়, প্রক্রিয়া সহজ করল পরিবহণ দফতর 

রাজ্যের নন-ট্রান্সপোর্ট গাড়ির মালিকানা বদল ও রেজিস্ট্রেশন নবীকরণের জটিলতা এবার অনেকটাই সহজ হল। পরিবহণ দফতরের নতুন সিদ্ধান্তে গাড়ি...