ভোটের আগে নতুন পরিষেবা? আয়ের উৎস নিয়ে রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশকে প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের

শুক্রবার দুই রাজ্যের সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের একটি বেঞ্চ।

মাস খানেকের ব্যবধানে রাজস্থান- মধ্যপ্রদেশ (Rajasthan Madhyapradesh) সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট (Assembly Election)। মধ্যপ্রদেশ এখন বিজেপি সরকারের (BJP Government) হাতে আর রাজস্থানে ক্ষমতা রয়েছে কংগ্রেস (Congress)। দুই রাজ্যের সরকার (Government of West Bengal) নিজেদের শক্তি ধরে রাখতে ভোটের আগে একের পর এক নতুন সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে রাজ্যবাসীকে। কিন্তু এত খরচের উৎস কী? জনস্বার্থবাহী এক আবেদন গ্রহণ করে ঠিক এই প্রশ্নই করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme court)।

শুক্রবার দুই রাজ্যের সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের একটি বেঞ্চ। এখানেই শেষ নয় নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় সরকারকেও নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নতুন নতুন যে সুযোগ-সুবিধা বিলি করা হবে বলে প্রচার করা হচ্ছে সেই সংক্রান্ত খরচ কোথা থেকে আসবে তা জানতে আগামী এক মাসের মধ্যে এই নোটিশের জবাব দিতে হবে সরকারকে। এই দুই রাজ্যের সরকারের আয়ের নতুন কোন উৎস তৈরি হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে চায় শীর্ষ আদালত। সঙ্গে আসন্ন নির্বাচন প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রক হিসাবে সংশ্লিষ্ট সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলির বিরুদ্ধে কমিশন কি ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন করে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ।

বিজেপির আইনজীবী সাংসদ অশ্বিনী উপাধ্যায় গত বছর এধরণেরই একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় তিনি রাজনৈতিক দলগুলির সুবিধা বিলি করার বিষয়টি সার্বিকভাবে তুলে ধরেছিলেন। নতুন করে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান এবং বিজেপির দখলে থাকা মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকেছেন মধ্যপ্রদেশের সমাজকর্মী ভট্টুলাল জৈন। দুই রাজ্যেই শাসক দল ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, অর্ধেক দামে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, ছাত্রছাত্রীদের ল্যাপটপ, মোবাইল, মহিলাদের মাসে দেড়-দু’ হাজার টাকা ভাতা, কৃষি ঋণ মকুব, বেকার ভাতা ইত্যাদি সুবিধা ঘোষণা করেছে। মামলায় বলা হয়েছে, এইভাবে হরির লুটের মতো সরকারি টাকা বিলির ফলে আর্থিক অবস্থা ক্রমশ তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বারবার বলে এসেছেন যে, বিনামূল্যে একাধিক সুবিধা দেওয়ার ফলে রাস্তা, স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল তৈরির টাকা রাজ্য সরকারের হাতে থাকছে না। ফলে তাদের কেন্দ্রের দিকে অনেক বেশি করে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। তিনি বিরোধীদল শাসিত রাজ্যগুলিকে নিশানা করতে গেলেও বাস্তবে ধরা পড়েছে অন্য ছবি। কারণ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো এই ব্যাপারে অন্যদের থেকে কম যায় না। ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারাও এই একই পন্থা অবলম্বন করছে। নির্বাচন কমিশন আগে সুপ্রিমকোর্ট কে জানিয়েছিল যে ভোটের দিন ঘোষণার আগে পর্যন্ত রাজনৈতিক দল কীভাবে তাদের ভোট আদায়ের রণকৌশল তৈরি করবে তা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কমিশনের হাতে নেই। কোনও কিছু ভাবনাচিন্তা না করে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির ঘোষণা যাতে রাজ্যের সরকার না করে সেই বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়। প্রথমে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এই মামলা হয়েছিল পরে তা খারিজ হয়ে যাওয়ায় ফের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। সেই মামলার শুনানিতেই কড়া পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের।

Previous articleঅভিষেকের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা সুদীপ-মদন-বীরবাহা-শওকতের
Next articleরাজভবনের ধরনা মঞ্চে রথীন-দেবাংশুর নি.শানায় রাজ্যপাল