Wednesday, November 12, 2025

দশক ঘুরলেও মেলেনি ‘সুবিচার’! কামদুনিকে হাতিয়া.র করে নয়া রাজনীতি রামধনু জোটের   

Date:

Share post:

কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চের (Division Bench) রায়ে চরম হতাশা। এক দশক ঘুরলেও মেলেনি সুবিচার। আর সেকারণেই ফের লড়াইয়ের পথে কামদুনি (Kamduni Case)। বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা থেকে শুরু করে মোমবাতি মিছিল সবকিছুই চলছে। ফের কামদুনিকাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মহিলাদের। সুবিচারের আশায় প্রহর গুনছে কামদুনির বাসিন্দারা। শনিবার সকালে কামদুনির একাধিক জায়গায় চলে বিক্ষোভ। রাস্তা আটকেও বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের একটাই দাবি, আমাদের সুবিচার চাই। ইতিমধ্যে, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি (CID)। দোষীরা যাতে যথাযথ শাস্তি পায় সেকারণে তৎপর রাজ্য। তবে ঘোলা জলে মাছ ধরতে ফের রাজনীতির ময়দানে রামধনু জোটের প্রতিনিধিরা। এদিন সকাল হতেই কামদুনি পৌঁছে যান কংগ্রেসের (Congress) মাথা মোড়ানো নেতা কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi) ও সিপিএমের (CPIM) ‘সর্বহারা’ নেতা শতরূপ ঘোষ (Shatarup Ghosh) ও বিজেপির (BJP) অর্চনা মজুমদার (Archana Majumder)। তবে এদিন বেলা গড়াতেই ধীরে ধীরে কামদুনি পৌঁছন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, রেখা গোস্বামী, রমলা চক্রবর্তী। সেখানে গিয়ে রাস্তা আটকে বসে পড়েন তাঁরা। যার জেরে সপ্তাহের ব্যস্ততম দিনে চরম ভোগান্তি নিত্যযাত্রীদের।

কামদুনির প্রতিবাদী মুখ মৌসুমি কয়াল (Mousumi Kayal) এদিন জানান, আমরা আজ ফের রাস্তায় বসতে বাধ্য হলাম। ১০ বছর আগেও আমরা এই রাস্তায় বসতে বাধ্য হয়েছিলাম। আজও আমরা রাস্তায় বসতে বাধ্য হয়েছি। আমরা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের যে রায় পেয়েছি সেই রায় আমরা মানি না। আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছি। পাশাপাশি বিচারব্যবস্থার উপর ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। মৌসুমি বলেন, এই লজ্জার রায় আমরা চাই না। তবে এদিন শুধু মৌসুমি নন, সুবিচারের আশায় রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে বসে থাকতে দেখা যায় টুম্পা কয়ালকে। তাঁরা সুবিচারের আশায় এবার দিল্লির দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানান।

কামদুনি গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজাই কি বহাল থাকবে? নাকি অন্য কোনও রায় দেবে উচ্চ আদালত? এই প্রশ্ন নিয়েই শুক্রবার গোটা বাংলার নজর ছিল কলকাতা হাই কোর্টের দিকে। অবশেষে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ কামদুনির রায় শোনান। নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৬ অভিযুক্তের মধ্যে ৪ জন ছাড়া পেয়ে যান। যাদের মধ্যে একজনকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। তার ফাঁসির সাজা হয়েছিল নিম্ন আদালতে। বাকি দুই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালের ৭ জুন। উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে কলেজ থেকে ফেরার পথে প্রথমে গণধর্ষণ, তারপর নৃশংস ভাবে খুন করা হয় এক ছাত্রীকে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। দোষীদের চরম সাজার দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। এই ঘটনায় অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল মোট ৯ জনের। কিন্তু নিম্ম আদালতে মামলা চলাকালীনই মৃত্যু এক অভিযুক্তের। বেকসুর খালাস পেয়ে যায় আরও ২ জন। কলকাতায় নগর দায়রা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় বাকি ৬ জন। ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড, আর ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। পরে অভিযুক্তরা নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করলে মামলা গড়ায় হাই কোর্টে। যে ৬ জন দোষী সাব্যস্ত হয়, হাই কোর্টে সাজা কমানোর আবেদন জানায় তারা।

 

 

 

 

spot_img

Related articles

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...