“ঠেলার নাম বাবাজি”, প্রবল আন্দোলনের মুখে পড়ে মুখ রক্ষার্থে অবশেষে বাংলায় এসে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি। সেখানে বুন্দেলখন্ডের লক্ষ্মীবাইয়ের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেছেন সাধ্বী। এছাড়াও টাকা আটকানোর জন্য দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘দিল্লিতে নিজের অফিস থেকে পালিয়ে যানননি তিনি। তৃণমূলের অভিযোগ মিথ্যা।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বীর সকল অভিযোগের এদিন ধরে ধরে জবাব দিল তৃণমূল।

নিজেকে লক্ষ্মীবাইয়ের সঙ্গে তুলনা করা সাধ্বী নিরঞ্জনকে বিশ্বাসঘাতক জয়াজিরাওয়ের সঙ্গে তুলনা করে তৃণমূলের তরফে লেখা হয়েছে, “সাধ্বী নিরঞ্জন নিজেকে ঝাঁসি কি রানির সঙ্গে তুলনা করেছেন, কাপুরুষের মতো পালিয়ে না যাওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু, হাস্যকরভাবে, হটাৎই তাঁর ফেসবুক লাইভ শেষ হয়ে গেল কেন? কারণ তিনি কানপুরের উড়ান ধরতে তাড়াহুড়ো করেছিলেন! বহিরাগত হিসাবে বাংলায় এটা তাঁর সাধারণ সৌজন্য সফর! তিনি বুন্দেলখন্ডকে তাঁর শিকড় হিসাবে দাবি করতে পারেন, কিন্তু তাঁর আচরণ জয়াজিরাও সিন্ধিয়ার মতো, যিনি রানী লক্ষ্মীবাইয়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।”

এদিন ধরে ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছে তৃণমূল। মোদি জমানায় গত ৯ বছরের খতিয়ান তুলে ধরে সাধ্বী বলেছিলেন, কংগ্রেস জমানার তুলনায় কীভাবে টাকার অঙ্ক বাড়ানো হয়েছে। এর জবাবে টুইটারে তৃণমূল জানায়, “জবকার্ড গ্রাহকদের বছরের পর বছর ধরে তৈরি হওয়া কর্মদিবসের ক্ষেত্রে বাংলা প্রথম হয়েছে। MGNREGS তহবিল বন্ধ হওয়ার পর থেকে বাংলা এই তালিকায় শীর্ষ স্থান থেকে নেমে নিচে এসেছে।” আর টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, এটা কোনও কথা নয়, আপনারা আদমশুমারি করছেন না। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সাথে জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়েছে, তাই প্রয়োজনীয়তার প্রেক্ষিতেই বেড়েছে টাকার অঙ্ক, এটা কোনও দান নয়। আর যদি সময়কালের তুলনাই করতে চান সেক্ষেত্রে আপনারা স্বীকার করে নিন আপনারা জমিদারি শুরু করেছেন। দিল্লির জমিদাররা MGNREGS-এর জন্য ৪৮টি কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছে এবং আবাস যোজনার জন্য ৬৯টি কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছে, রাজ্য সরকার সব কিছু মেনে নিয়েছে তবুও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে!

এছাড়া আবাস যোজনায় বাংলার সুবিধাভোগীদের সংখ্যা তুলে ধরে মোদি সরকার জয়ধ্বনি করতে দেখা যায় সাধ্বীকে। সে প্রসঙ্গে জবাব দিয়ে তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, “২০২১ সাল থেকে ১১.৩৬ লাখ মানুষ মাথার ওপর ছাদ ছাড়াই বসবাস করছেন। বিষ্ণুপুরে মাটির ঘর ধসে মারা গেল ৩ নিষ্পাপ শিশু প্রাণ হারাল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আপনি আপনার ব্যর্থতাকে অস্বীকার করতে পারেন?” দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূলের আন্দোলনকে এদিন ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। উত্তরে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, “বিজেপি নেতারা জনগণের অধিকারের জন্য আমাদের লড়াইকে “তামাশা,” “নৌটাঙ্কি,” “নাটক” বলে উপহাস করেছেন। অথচ রাজ্যবাসীর সমস্যা নিয়ে একটাও শব্দ খরচ না করে সাংবাদিক বৈঠক শেষে উত্তরপ্রদেশে ছুটে পালালেন। এটাকে যদি নাটক না বলা হয় তবে সেটা কি আমরা জানি না।

