রেশন দুর্নীতির শুরু বিগত বাম আমলে। ইডি-র তথ্যেই তার প্রমাণ। বুধবার, নবান্নে (Nabanna) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সেই বিষয় নিয়ে গত বাম সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১১ সালে তৃণমূল যখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসে, সেই সময় ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর আমলে সেই ১ কোটি কার্ড বাতিল করে রেশন কার্ডের ডিজিটালকরণ ঘটানো হয়েছে। অনেক ডিলারশিপ বাতিল করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আইনি বাধায় সেটা হয়নি বলে জানান মমতা।
এদিন পূর্বতন বাম সরকারের আমলে রেশন দুর্নীতির উদাহরণ তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বাম আমলের অব্যবস্থার কথা তুলে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন, “আজ সিপিএম বড় বড় কথা বলছে। আদালত, ED বা CBI-কে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ে কিছু বলব না আমি। কিন্তু বলে রাখছি, আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড থাকার অর্থ, সেই রেশন কেউ না কেই তুলতেন! সেই টাকা কোথায় যেত? আজ পর্যন্ত তদন্ত হয়েছে?” কেন্দ্রীয় সরকারও ১০০ শতাংশ ডিজিটালকরণের জন্য রাজ্যের প্রশংসা করেছে। কিন্তু ৩৪ বছরের উত্তরাধিকার কাটিয়ে উঠতে সময় লেগেছে তাঁদের। গত দুই-তিন বছরে সব পরিষ্কার হয়েছে।
তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তনের সময়ই তাঁরা জানিয়ে ছিলেন বদলা নয়, বদল চাই। সেই কারণে এখন সিপিএমের ক্যাডাররা হয়েছেন। কারও বিরুদ্ধে কোনও প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ করেননি তিনি। তাঁর কথায়, “একজনের জায়গায় আর একজন চাকরি করছেন। কিন্তু এখন যত দোষ,নন্দ ঘোষ। দোষ প্রমাণের আগেই গ্রেফতার। কিছুই প্রমাণ হল না অথচ চোর বানিয়ে দিলেন।“
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পরই রেশন কার্ড ডিজিটালকরণের কাজ শুরু হয়। মানুষের প্রাপ্য রেশন নিয়ে বিক্রি করে দিত দালালরা। আমরাই ধরেছি। গ্রেফতার হয়েছে। রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ ছিল। অনেক রেশন দোকান বাতিল করতে চেয়েছিলান। কিন্তু পারিনি। কারণ কোর্টের নির্দেশ মানতে হয়েছে। বার বার কোর্টে ছুটতে হয়েছে। বিচারপতিদের নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু বার বার দৌড়নো, বার বার স্থগিতাদেশের ফলে দুই-তিন বছর মরিয়া লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু কোভিডে একজন মানুষও অনাহারে মারা যাননি। বরং ওই সময় বেশি চাল দিয়েছি। একটি পরিবারও বলতে পারবেন না যে রেশন পাননি।”
পাশাপাশি, চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়েও বামেদের নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ. “বামফ্রন্টের সময় অনেক চিটফান্ড হয়েছে। কাশ্মীর থেকে সারদাকর্তাকে গ্রেফতার করেছিলাম আমরাই। তারপর সিবিআই তদন্তভার নেয়, কিন্তু এখনও প্রতারিতরা টাকা ফেরত পাননি”।