অভিজিৎ ঘোষ, জয়সলমির (রাজস্থান)

সুধীর সাহিল। জয়সলমিরের একটি পাঁচতারা হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার। মূলত দিল্লিতে পড়াশোনা আর বেড়ে ওঠা। নয়ের দশকে তাজ বেঙ্গল হোটেলের গোড়াপত্তনের সময়ে চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন। মাস ছয়েক ছিলেন। এখন জয়সলমিরের হোটেলে। গল্প করতে করতে বাংলার রাজনীতির কথাও বলছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাও স্বাভাবিকভাবে এসেছে। হঠাৎ আলোচনার বাইরে গিয়ে বললেন, মোদিজি যেভাবে বিধানসভা ভোটের সময় দিদি…ও দিদি সুর তুলে তুলে জনসভায় দিদিকে ব্যঙ্গ করেছেন, সেটা একজন প্রধানমন্ত্রীকে মানায়? শেম…শেম…

বিজেপির এই যে নৈতিকতাহীন, নোংরা রাজনীতি, তার নিন্দা সুদূর রাজস্থানের প্রায় সীমান্ত জয়সলমিরে। যারা ভাবেন গুজ্জর, জাঠ, রাজপুত, ব্রাহ্মণ রাজনীতিতেই রাজস্থান ক্লিষ্ট, তাঁরা ভুল ভাবছেন। রাজস্থানের মধ্যবিত্তরা বাংলার কথা জানেন, বোঝেন, খবরও রাখেন। শুধু তাই নয়, রাজস্থানের গেহলট সরকার তাঁর তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রীত্বে অন্তত এক ডজন প্রকল্প মানুষের সামনে রেখেছেন, যাকে সোজা বাংলায় বলতে গেলে বলতে হয় বাংলার টুকলিফাই।

রাজস্থানে যেহেতু পর্যটন একটা বড় জায়গা নিয়ে রয়েছে, তাই গাড়ি আর চালকদের একটা ভূমিকা থেকেই যায়। যেহেতু এখানে ৬ মাসের ব্যবসা এবং বাকি ৬ মাস বসে থাকা তাই চালকরা যথেষ্ট বন্ধুভাবাপন্ন। কলকাতা বা বাংলার বহু জায়গার চালকদের মতো উগ্রচণ্ডাল মোটেই নন। এমনকি অটো চালকরাও কলকাতা রুটের অটো ড্রাইভারদের মতো দু’চার মিনিট কথা কাটাকাটির পর তেড়েও আসে না, কথায় কথায় অটোও বন্ধ করে না, ইচ্ছা মতো ভাড়াও বাড়ায় না। পরিবেশের কারণে এখানকার মানুষ কঠোর কিন্তু বাস্তবত ব্যবহারে অমায়িক।


তবে হ্যাঁ, ধর্মতলা বা নিউ মার্কেটে যেভাবে জিনিস নেওয়ার সময় দরদস্তুর করতে হয়, এখানেও সমানভাবে করতেই হবে। না করলেই কিন্তু ঠকে যাবেন। টুরিস্ট স্পটে যেমনটি হয়, ঠিক তেমনটিই। বাংলা আর রাজস্থানে এখানে জব্বর মিল।
