বাহুবলী ফিল্মের দৃশ্যটা একবার ভাবুন। মহেন্দ্র বাহুবলী কাঁধে করে শিবলিঙ্গ বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন ঝর্ণার নীচে। আগামী বছরের গোড়ায়, প্রায় সেই ভূমিকাতেই দেখা যেতে পারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। সব ঠিকঠাক থাকলে, ২০২৪-এর ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যার অস্থায়ী রামলালার মন্দির থেকে রামলালার মূর্তি, নয়া রামমন্দিরে বহন করে নিয়ে যাবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।জানা গিয়েছে, রামমন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার মূর্তি স্থাপনার সম্মান দেশের প্রধানমন্ত্রীকেই দিতে চলেছেন শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র ট্রাস্ট। সেই ক্ষেত্রে অস্থায়ী রাম মন্দির থেকে নবনির্মিত রাম মন্দির পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে যেতে হবে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। শুধুমাত্র তাই নয়, সেসময় পথে থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর আঁটসাঁটো নিরাপত্তাও। সঙ্গে থাকতে পারেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবৎ-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।

জানা গিয়েছে,ওইদিন দুপুর সাড়ে এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যে পুজোপাঠের মধ্য দিয়ে রামলালার মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেই পুজোয় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রার্থনার পর, মন্দিরের গর্ভগৃহ এক পবিত্র স্থানে স্থাপন করা হবে রামলালার মূর্তিটি, যাকে বলা হয় চলমূর্তি অর্থাৎ, যা সরানো যায়। বর্তমানে, আরও তিনটি পাঁচ ফুট উচ্চতার রামমূর্তি খোদাই করা হচ্ছে। চলমূর্তি স্থাপনের পর, ওই তিন মূর্তির একটিকে অচলমূর্তি হিসেবে স্থাপন করা হবে। অচলমূর্তিটি স্থায়ীভাবে মন্দিরে রাখা থাকবে। রামনবমী বা নবরাত্রির মতো বিশেষ বিশেষ দিনে, অচলমূর্তিটির সঙ্গে মন্দিরে ফিরে ফিরে আসবে চল মূর্তিটিও।

রাম মন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অচলমূর্তি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনজন ভাস্করকে। তাঁরা রামলালার তিনটি ভিন্নরূপী মূর্তি তৈরি করছেন। আসলে কোন মূর্তিটিকে মন্দিরে স্থাপন করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি ট্রাস্ট।জানা গিয়েছে, একটি রামমূর্তি খোদাই করা হচ্ছে রাজস্থানের মার্বেল পাথর দিয়ে। আরেকটি তৈরি করা হচ্ছে কর্নাটকের কালো গ্রানাইট পাথর দিয়ে। এই দুটি মূর্তির কোনও একটিই শেষ পর্যন্ত বেছে নিতে চলেছে ট্রাস্ট।

জানা গিয়েছে, একটি মূর্তি গর্ভগৃহে স্থাপন করা হবে। অপরটি, মন্দিরের দ্বিতীয় তল তৈরি হলে, সেখানে স্থাপন করা হবে। মন্দিরের তৃতীয় তলে তৈরি করা হবে রাম দরবার। গর্ভগৃহে রামের যে মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করা হবে, প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন প্রথমে সেটিকে সরায়ুর জলে স্নান করানো হবে। তারপর সেই রাম মূর্তি গোটা অযোধ্যা প্রদক্ষিণ করবে।

মন্দির উদ্বোধনের দিন ট্রাস্ট প্রায় আট হাজার জনকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে রাম মন্দির আন্দোলনে শহিদ করসেবকদের পরিবার, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রাপক, সমাজের নানাক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা আছেন। মন্দির উদ্বোধন তথা রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠাকে সামনে রেখে অযোধ্যা নানা অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে ১৬ জানুয়ারি থেকে।
