নয়া অ.জুহাত! রাজ্যকে চিঠি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের, টাকা আটকানোর ছুতো কেন্দ্রের: তো.প প্রদীপের

বাংলাকে বঞ্চিত করার নতুন অজুহাত মোদি সরকারের। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে ফের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে চিঠি (Letter) দিয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উপসচিবের পাঠানো ওই চিঠিতে গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পের জেলাভিত্তিক কয়েকটি অসঙ্গতির অজুহাত তুলে রাজ্য সরকারকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন প্রদীপ মজুমদার (Pradip Majumder)। ক্ষোভ উগরে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “চিঠির বয়ানেই পরিষ্কার যে কেন্দ্র এখন টাকা না দেওয়ার আবার নতুন একটা ছুতো খুঁজে বের করতে চাইছে। লোগো-সহ অদ্ভূত সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।“

গত মার্চে রাজ্যে আবাস প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক প্রতিনিধিদল রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই চিঠি বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। চিঠিতে রাজ্যের ৩ জেলা– কালিম্পং, নদিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আবাস যোজনার কাজে বেশ কিছু অসংগতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, আবেদনকারীদের অনেকের ক্ষেত্রে ঠিকঠাক নথি যাচাই না করেই আবেদন মঞ্জুর করে দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রদীপ মজুমদার (Pradip Majumder) তীব্র খোঁচা দেন। বলেন, “এই প্রশ্নগুলি তুলতে কেন পাঁচ মাস সময় লাগলো! আসলে আমরা এই ইস্যুতে যে আন্দোলন শুরু করেছি তাতে ওরা ভয় পেয়েছে। তাই বাংলার প্রতি বঞ্চনাকে justify করতে চিঠি দেওয়ার নাটক করছে। এতদিন ছুটি ছিল। অফিস খুললে আমরা চিঠির বয়ান খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে উত্তর দেব।“

চিঠিতে আরও অজুহাত দেওয়া হয়েছে যে, নদিয়ায় ২০১৮ সালের আবাস প্লাস প্রকল্পের জন্য সার্ভে ঠিকঠাক করা হয়নি। যে মাপকাঠির কথা বলা ছিল, তা ঠিকঠাক মানা হয়নি বলে অভিযোগ।

 

কেন্দ্রের অভিযোগ, কালিম্পং-এ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর লোগো সব জায়গায় ব্যবহার করা হয়নি। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যখন পরিদর্শনে এসেছিল, তখন সাতটি বাড়ির মধ্যে চারটিতে প্রকল্পের লোগো ব্যবহার করা হয়েছিল। বাকি তিনটির মধ্যে ২টিতে কোনও লোগো ছিল না এবং একটিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহর)-এর লোগো ছাপানো ছিল অভিযোগ কেন্দ্রের।

 

দক্ষিণ ২৪ পরগনার আধা-পাকা বাড়িতে থেকে এক ব্যক্তির নাম আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর তালিকায় উঠে এসেছে বলে অভিযোগ কেন্দ্রের। এ বিষয়ে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের রিপোর্ট পাঠাতে হবে মন্ত্রকে।

 

১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার মতো প্রকল্পগুলি নিয়ে বাংলাকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে কলকাতায় ২ দিনের ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল (TMC) সভানেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি পর্যন্তও সেই প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছিল। একই অভিযোগে গত মে-তে ৩২ ঘণ্টার ধর্নায় বসে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। গত মাসের গোড়ায় বকেয়ার দাবিতে আন্দোলন চরমে পৌঁছয়। ধর্নায় গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল সাংসদরা। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। কিন্তু দেখা করতে চাননি।

 

এবার নয়া অজুহাতে বাংলার টাকা আটকাতে চাইছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। মঙ্গলবারই কেন্দ্রের ওই চিঠির জবাব দেওয়া হবে বলে পঞ্চায়েত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।

Previous articleজয়নগরে ত্রা.ণ নিয়ে যেতে পারবে সিপিএম, ক.টাক্ষ তৃণমূলের
Next articleপিছিয়ে একাধিক ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য! দৈনিক মজুরিতেও এগিয়ে বাংলা