বিজেপি নেতাদের সুপারিশ থাকলেই কল্যাণী এইমসে ডাক্তারের ‘জামাই আদর’ পাবেন রোগীরা

বঙ্গ বিজেপি নেতাদের একাংশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে এইমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে অন্যায়ভাবে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। অথচ, দূর দূর থেকে ভালো চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন

ফের কল্যাণী এইমসে বেনিয়মের অভিযোগ। কেন্দ্রীয় সরকারের এই হাসপাতালে অনৈতিক ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। গেরুয়া শিবিরের নেতা-বিধায়ক-সাংসদদের আভ্যন্তরীণ লড়াইয়ে দেশের সেরা এই স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।

অভিযোগ, বঙ্গ বিজেপি নেতাদের একাংশ ক্ষমতার অপব্যবহার করে এইমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষকে অন্যায়ভাবে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। অথচ, দূর দূর থেকে ভালো চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

অভিযোগ, কল্যাণী এইমসে ডাক্তার দেখাতে গেলে সবচেয়ে জরুরি বিজেপি নেতাদের সুপারিশ! আর সেটা না থাকলে বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরতে হবে। হাসপাতাল গেলেই শোনা যাচ্ছে অদ্ভুত এক ‘লিস্ট’-এর কথা। বিজেপি বিধায়ক, সাংসদ ও নেতাদের আত্মীয়দের নামে চলছে এই লিস্ট। তাতে নাম থাকলে ডাক্তারদের কাছে সোজা পৌঁছনো যাচ্ছে। অন্যদিকে, সাধারণ রোগীর নাম ওই ‘বিশেষ’ লিস্টে নেই, তাঁদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, কেন্দ্রীয় সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে চলছে ‘পিকে’ লিস্ট! কে এই পিকে? তা ঘিরেই দানা বাঁধছে গভীর রহস্য।

রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, এইমসে লিস্ট পাঠানোর তালিকায় রয়েছেন বিধায়ক অম্বিকা রায়, অসীম সরকার, সুব্রত ঠাকুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর সহ আরও অনেকে। এইমসে কোন দিন, কোন বিভাগে, কোন ডাক্তার থাকবেন—তার পূর্ণ তালিকা টাঙানো থাকে বিজেপির বিধায়ক এবং সাংসদের নিজস্ব অফিসে। আউটডোরে ডাক্তার দেখানোর আবেদনের ভিত্তিতে বিজেপি নেতারা নিজস্ব প্যাডে রোগীদের লম্বা লিস্ট তৈরি করে দিচ্ছেন। হাসপাতালে গিয়ে যেসব রোগীরা শুধু একবার বলবেন, তাঁকে বিজেপির ‘অমুক’ নেতা পাঠিয়েছেন, ব্যাস জামাই আদরে ডাক্তাররা তাঁদের চিকিৎসা করবেন। এমনই অলিখিত ফতোয়া জারি হয়েছে কল্যাণী এইমস।

এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপির হাতে এইমসের মতো প্রতিষ্ঠান কলুষিত হচ্ছে। ওদের সস্তার রাজনীতির জন্যই সাধারণ মানুষ উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মনে রাখতে হবে, ওই প্রতিষ্ঠান তৈরিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। রাজ্য সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের লিস্ট দেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিই না আমরা। রাজ্য সরকারের হাসপাতালগুলিতে রোগীরা যাবতীয় পরিষেবা বিনামূল্যেই পান। বিপরীতে, কেন্দ্র পরিচালিত একটিমাত্র প্রতিষ্ঠানে এই অব্যবস্থা তাঁকে বিস্মিত করেছে বলেও জানান চন্দ্রিমাদেবী।

রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারও স্বীকার করেন, এইমসে জনপ্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট কোটা থাকে। দলের স্থানীয় নেতারা কিছু রোগীর সুপারিশ পাঠাতে পারেন। ফলে বটাই বিজেপির লিস্ট অনুযায়ী সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।

আরও পড়ুন:কীভাবে ভাঙল অগার মেশিন? উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আ.টকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে শুরু ম্যানুয়াল ড্রিলিং

 

 

Previous articleকীভাবে ভাঙল অগার মেশিন? উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আ.টকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে শুরু ম্যানুয়াল ড্রিলিং
Next articleশর্তসাপেক্ষে মিলেছে অনুমতি! বুধে ধর্মতলার সমাবেশে থাকছেন শাহ, জেনে নিন সফরসূচি