উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে গত ১৭ দিন ধরে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক যাঁদের মধ্যে তিনজন বাংলার শ্রমিকরাও রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করতে এবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেল বাংলার সরকারের প্রতিনিধি দল (Delegation of the Government of Bengal)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে রাজ্যের পর্যটন দফতরের (Tourism Department of West Bengal) ৩ সদস্যের প্রতিনিধি আজ দুপুরে রাজধানী দিল্লি থেকে সড়কপথে রওনা দেন উত্তরাখণ্ডের উদ্দেশে। দিল্লিতে বাংলার রেসিডেন্ট কমিশনারের দফতর সুত্রে খবর, সিল্কিওরা-বারকোড ট্যানেলে আটকে থাকা বাংলার তিন শ্রমিকের মধ্যে কোচবিহার, হরিণখালী এবং হুগলির একজন রয়েছেন। রাজ্য পর্যটন দফতরের আধিকারিক শুভব্রত প্রমাণিকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যেই এই শ্রমিকদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন । তিন বঙ্গসন্তানকে সুস্থ ভাবে ফিরিয়ে আনার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) তরফে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘আমাদের মানুষজনকে সাহায্যের জন্য উত্তরকাশীতে দৌড়ে গিয়েছে একটি দল। দিল্লির রেসিডেন্ট কমিশনার দফতরের সংযোগকারী অফিসার রাজদীপ দত্তের নেতৃত্বাধীন দলটি উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার এবং পশ্চিমবঙ্গে ফেরাতে সাহায্য করবে।’’
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে চলল কিন্তু এখনও কোনও শ্রমিককে বাইরে আনা সম্ভব হয়নি। বাংলার প্রতিনিধি দলের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই দলে রয়েছেন শুভব্রত প্রামাণিক, সোমনাথ চক্রবর্তী, রাজুকুমার সিং। গাড়ির নম্বর, চালকের নাম এবং মোবাইল নম্বরও মমতা লিখেছেন এক্সের পোস্টে। তিনি লেখেন, ‘‘দলটি গাড়িতে চেপে কোচবিহারের মানিক তালুকদার, হরিনাখালির সেবিক পাখেরা এবং হুগলির নিমডাঙ্গির জয়দেব প্রামাণিককে সাহায্যের জন্য বেরিয়ে গিয়েছে। তাঁরা উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন।’’ সব রকমের সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
Have rushed a team to Uttarkashi for helping our people. The team, led by Rajdeep Dutta, Liaison Officer, Office of Resident Commissioner, New Delhi, will help evacuation and safe return of the trapped workers in the tunnel at Silkyara, Uttarkashi to their homes in West Bengal.…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 28, 2023
১৭ দিন ধরে আটকে থাকার পর অবশেষে বেরনোর আশা দেখছেন সুড়ঙ্গে থাকা শ্রমিকরা। যদিও আজ দুপুরের পর থেকে অপেক্ষার প্রহর যেন আর কাটতে চাইছে না। কিন্তু যত সময় এগোচ্ছে ততই আশার পাশাপাশি বাড়ছে উৎকণ্ঠা। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে ৪১টি অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসকদের একটি বড় টিম জরুরিকালীন চিকিৎসা ব্যবস্থা মজুদ রেখেছে । শ্রমিকদের বিমানে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিনুক হেলিকপ্টার আনা হয়েছে। কিন্তু অন্ধকার হয়ে যাওয়াতে হেলিকপ্টার পরিষেবাতে বাধা আসতে পারে বলে অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের কাছ পর্যন্ত পাইপ বসানোর কাজ সম্পূর্ণ। যদিও উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী টানেল উদ্ধারকার্যতে যুক্ত অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন সাংবাদিকদের জানান ‘সকল নিরাপত্তা সতর্কতা প্রয়োগ করা হবে। কোনও আগাম ঘোষণা করা হবে না। যাঁরা নিরাপত্তা এবং উদ্ধারকার্যের সঙ্গে যুক্ত তাদের নিরাপত্তার দিকটিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে । আমরা কোনও তাড়াহুড়ো করছি না।’ রাজ্য পর্যটন দপ্তরের আধিকারিক শুভব্রত প্রামাণিক জানিয়েছেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বাংলার শ্রমিকদের উদ্ধার করার পর প্রথমেই তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে প্রথমে দিল্লিতে তারপর বাংলায় ফিরিয়ে আনা হবে। এদিকে টানেল থেকে শ্রমিকদের উদ্ধারের পর সামুদায়িক জেলা হাসপাতালে যেতে যাতে খুব একটা বেশি সময় না লাগে তাই সুড়ঙ্গ থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত গ্রিন করিডোর তৈরি করা হয়েছে বলে খবর।