রঙের অজুহাতে স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ ব.ন্ধ কেন্দ্রের! দ্রুত মেটাতে মোদিকে চিঠি মমতার

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) আগেই অভিযোগ করেছিলেন- বিজেপি সরকার সব কিছুর গৈরিকীকরণ করতে চাইছে। এবার সেই অভিযোগ সত্যি করে রঙের ফারাকের অজুহাত দেখিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন খাতে পশ্চিমবঙ্গের অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করল মোদি সরকার। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারই নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। গরিব মানুষের চিকিৎসার স্বার্থে দ্রুত বরাদ্দ মেটানোর আবেদন জানিয়েছেন মমতা।

বাংলায় রাজ্য সরকারির থিম কালার নীল-সাদা (Blue-White)। সেই মতো, প্রায় সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রংই এখন নীল-সাদা। কিন্তু কেন্দ্রের ফরমান, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বরাদ্দে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির রম মেটালিক হলুদ করতে হবে। তাতে থাকবে খয়েরি রঙের বর্ডার। রাজ্যের ৪৭৪টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৬৫টি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ২৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য একাধিক কিস্তিতে টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। কিন্তু সেই টাকা আটকে দিয়েছে কেন্দ্র। এর প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

চিঠিতে মমতা (Mamata Banerjee) লেখেন, যে তিনি জানতে পেরেছেন সম্প্রতি স্বাস্থ্য মিশন খাতে কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। কালার ব্র্যান্ডিংয়ের বিষয়টিকে সেখানে অন্যতম কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নীল-সাদা হল সরকারি রঙ। তা বদল করতে গেলে এখন অনেক অর্থের ধাক্কা। প্রকল্পের ব্যাপারে বাকি শর্তগুলি সরকার ইতিমধ্যে পূরণ করেছে। তাই অর্থ বরাদ্দ বন্ধ না করে তা যেন চালু করে দেওয়া হয়। গত ১২ বছর ধরে স্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক ভাবে ভালো কাজ করছে বাংলা। বর্তমানে রাজ্যে এ ধরনের ১১ হাজার কেন্দ্র রয়েছে। যার মাধ্যমে দিনে গড়ে ৩ লক্ষ মানুষ পরিষেবা পান। লেখেন, “আপনি জানেন যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমাজের দরিদ্র এবং প্রান্তিক অংশের উপর বিশেষ জোর দিয়ে জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয়। আমাদের প্রচেষ্টায়, আমরা বিনামূল্যে সকলকে সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছি। গত ১২ বছরে স্বাস্থ্যসেবার জন্য আমাদের বাজেটে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ যেমন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নির্মাণ, স্বাস্থ্যসাথী, শিশুসাথী, মাতৃমা, চোখের আলো, ইত্যাদি সফলভাবে চালু করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে বিপুল সংখ্যক মানুষ এর থেকে উপকৃত হয়েছেন। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন-এর অধীনেও, পশ্চিমবঙ্গ সবসময়ই বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য কর্মসূচী বাস্তবায়নে আগে রয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের অংশ হিসাবে রাজ্যে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য অত্যন্ত ভাল কাজ করছে। আপনি জেনে খুশি হতে পারেন যে বর্তমানে প্রায় এগারো হাজার কার্যকরী স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র রয়েছে যার দ্বারা প্রতিদিন তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এই ভবনগুলি ২০১১ সাল থেকে রাজ্যের রঙের ব্র্যান্ডিং অনুসারে তৈরি করা হয়েছে।

এর পরেই অভিযোগ জানিয়ে চিঠিতে লিখেছেন, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, সম্প্রতি আমাকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে তহবিল প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে।”

নানা অজুহাতে বাংলার প্রাপ্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে দিল্লি। এবার নয়া অজুহাতে টাকা বন্ধ করল মোদি সরকার।

Previous articleগল্ফগ্রিনে মাঠ নিয়ে ধু.ন্ধুমার, পুলিশি হ.স্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
Next articleআন্তর্জাতিক শিশু অধিকার দিবসে বীরপুরুষ-বীরাঙ্গনা পুরস্কার প্রদান!