KIFF: কল্পনা ছাড়া বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র সম্ভব? সিনে আড্ডায় উত্তর দিল টলিউড 

শনিবারের সিনে উৎসব (Film Festival) প্রাঙ্গণে তিল ধারণের জায়গা নেই। একতারা মুক্তমঞ্চে থিক থিক করছে ভিড়। কেন? উত্তরটা পরিষ্কার হল সামনের দিকে এগিয়ে যেতেই। মঞ্চে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee), আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee), ঋতাভরী চক্রবর্ত্তী (Ritabhari Chakraborty), খরাজ মুখোপাধ্যায় (Kharaj Mukherjee), জিতু কমল(Jeetu Kamal)। সকলের মধ্যমণি হয়ে আছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্ত্তী (Raj Chakraborty)। আজকের সিনে আড্ডা (Cine Adda) যে পুরোপুরি সিনেমাকেন্দ্রিক তা আর বুঝতে বাকি রইল না। সোশ্যাল মিডিয়া আর মুঠোফোনের জমানায় মানুষের পছন্দের সিনেমার খোঁজ করতেই এক বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (29th Kolkata International Film Festival)। আজকের বিষয় ছিল – বর্তমান প্রজন্মের কাছে কোনটা আকর্ষণীয় , কাল্পনিক না বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র? শুরুটা করলেন টলিউডের ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। দর্শককে বড় দায়িত্ব দিলেন বাংলা বিনোদনের ‘সোনা দা ‘।

এখনকার দিনে মানুষের হাতে সময় আর মনে ধৈর্য্য বড্ড কম। তাই ‘লুকিং লাইক ওয়াও’ যুগে ভাল বা খারাপ সিনেমার থেকেও বোরিং কিংবা ইন্টারেস্টিং সিনেমার দিকেই মানুষের আগ্রহ বেশি বলে মন্তব্য করলেন ‘ফাটাফাটি’ অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্ত্তী। তাঁর কথায় দর্শকের হাতে সবটা ছেড়ে দিলে, ‘অ্যানিম্যাল’ ধরা দেবে সিলভার স্ক্রিনে। তিনি অকপটে এর বিরোধিতা করলেন। আবির চট্টোপাধ্যায়ের গলায় উল্টো সুর। তাঁর কাছে আবার দর্শকের চাহিদাকে মাথায় রেখে বাস্তবধর্মী সিনেমার প্রেক্ষাপটে কাজ করা কমফোর্টজোন। কথার মাঝে রাজ চক্রবর্ত্তী ও আবির চট্টোপাধ্যায়ের খুনসুটি জমিয়ে দিল আড্ডার মঞ্চ। জিতু কমল জানান, সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর কাছে অনেক রেফারেন্স ছিল যেগুলো আসলে বাস্তব। কিন্তু সেটে গিয়ে সেগুলোকে সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলাতে কিছুটা কল্পনার আশ্রয় অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত ছিল। নায়ক- নায়িকা কিংবা অভিনেতা অভিনেত্রীদের মাঝে মঞ্চে যাঁর উপস্থিতিতে দর্শক সবথেকে বেশি খুশি হলেন তিনি এক এবং অদ্বিতীয় খরাজ মুখোপাধ্যায়। রাজের অনুরোধে দর্শকের জন্য গলা ছেড়ে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার গান’ গেয়েও শোনালেন। কণ্ঠ মেলালেন দশম অবতারের ‘প্রবীর’। খরাজ এদিন বলেন, কমার্শিয়াল এলিমেন্ট থাকলে তবেই ছবির চাহিদা বেশি থাকবে। কল্পনা থাকবে কিন্তু অভিনয় বাস্তবধর্মী হতে হবে। শিল্পের সঙ্গে তঞ্চকতা নয়।

সকলেই যখন কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে ব্যালেন্স করে সিনেমা তৈরির কথা বলছেন, তখন কিছুটা হলেও দোটানায় পড়ে গেলেন স্বয়ং সঞ্চালক পরিচালক রাজ। ত্রাতা সেই টলিউডের দাদা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। শুরু থেকে শেষ তাঁর একেকটা কথার শেষে হাততালির বন্যা। বুম্বাদা বললেন, কল্পনা হোক কিংবা বাস্তব এটা সত্যি যে, “Everything is Art. শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ না করলে আমি উৎসব করতে পারতাম না।” একদিকে যেমন সাহিত্য নির্ভর সিনেমা বেশি করে দর্শকের সামনে তুলে আনা দরকার বলে তিনি মনে করেন, অন্যদিকে আবার ‘অনিশ্চয়তার ইন্ডাস্ট্রি’কে ভালবাসার কথাও শোনা যায় তাঁর মুখে।

রাত যত বাড়তে থাকল ততই হালকা হিমেল হল প্রকৃতি। কিন্তু গমগম করছে কিফ প্রাঙ্গণ। উৎসবের প্রথম ও শেষ উইকেন্ডের সিনে উন্মাদনা ফের একবার বুঝিয়ে দিল, এটাই মহানগরীর ম্যাজিক। আর তাই, ‘রুপোলি পর্দা জুড়ে আজ ও আগামীকাল, কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’।

Previous articleবিজেপির প্রতিহিং.সার শি.কার মহুয়া, আ.গুন জ্ব.লল নদিয়ায়
Next articleসাধ্বীর পর এবার মীনাক্ষির ভোলবদল! ‘মি.থ্যাচার’ না সমন্বয়ের অভাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের?