বাবার স্বপ্ন পূরণ করছেন ১৩ বছরের দেবযানী দাস ওরফে মিষ্টি। সম্প্রতি হরিয়ানায় বিসিসিআই আয়োজিত নকআউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক উইকেট শিকারি সে। ঝুলিতে হ্যাটট্রিকও আছে। এই বয়সেই নজর কেড়েছেন দেবযানী।
নাম মিষ্টি হলেও, মাঠে বিপক্ষকে নিজের ‘ঝাঁঝ’ টের পাইয়ে ছাড়ছে চুঁচুড়ার ধরমপুরের মহামায়া কলোনির এই ত্রয়োদশী। ক্রিকেটে হাতেখড়ি বছর চারেক আগে। তার মধ্যেই ঘরোয়া থেকে রাজ্য স্তরে বিপক্ষ ব্যাটারকে ঘুর্ণিপাক খাইয়েছে বাঁহাতি ওই চায়নাম্যান বোলার। এবারেই প্রথম জাতীয় ক্রিকেটে ডাক এসেছিল দেবযানীর। ৩৫ ওভারের নকআউট প্রতিযোগিতায় ৩০টি রাজ্য ছিল। বাংলার প্রথম ম্যাচে গোয়ার বিপক্ষে অভিষেক হলেও লো-স্কোরিং সেই ম্যাচে বল করার সুযোগ হয়নি মিষ্টির। দ্বিতীয় ম্যাচে তার বোলিংয়ে তছনছ হয়ে যায় সিকিম। ৭ ওভার বল করে ৩টি মেডেন-সহ ৬ রান খরচ করে ৭টি উইকেট তুলে নেয় সে। বিহারের বিরুদ্ধে ৬টি। সেমিফাইনালে হরিয়ানার বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক-সহ ৫টি উইকেট। ওই ম্যাচে অবশ্য বাংলা হেরে যায়। সব মিলিয়ে ৬ ম্যাচে মিষ্টির ব্যাগে ২০টি উইকেট।
চুঁচুড়া, চন্দননগরের মাঠের পাশাপাশি কলকাতার ওয়াইএমসিএ-তেও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে মিষ্টি।ওয়াইএমসিএ-র কোচ শিবশঙ্কর পাল মিষ্টির বোলিংয়ে খুশি। তবে তিনি এখনই ছাত্রীকে লাইম লাইটে আনতে চাননা। তিনি বলেন, এখনও বহু দূর যেতে হবে ওকে। এখনই ছাত্রীকে নিয়ে খুব বেশি হইচই না হোক।
চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মিষ্টি বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে। দিদির মতো ছোটবেলায় মিষ্টি অ্যাথলেটিক্স বেছে নিয়েছিল। বছর চারেক আগে চুঁচুড়া ময়দানে ছেলেদের ক্রিকেট দেখে বাবা পার্থ দাসের কাছে ব্যাট-বল খেলার আব্দার করে সে। এক সময়ে টেনিস বলের ক্রিকেটে মাঠ কাঁপাতেন পার্থ। ডিউসে খেলার স্বপ্ন থাকলেও অর্থাভাবে সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর ছোট মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করেন পার্থ বাবু। দেবযানীকে তিনি উডবার্ন ক্লাবে ক্রিকেটে ভর্তি করিয়ে দেন। আর তারপরই নিজেকে মেলে ধরেন দেবযানী। দেবযানীর স্বপ্ন, ভারতীয় দলের জার্সি পরে মাঠে নামা। একই স্বপ্ন দেখছেন দেবযানীর মা-বাবাও।
আরও পড়ুন:এবার মাঠে লড়াই সেহবাগ-দ্রাবিড়ের, বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে মুখোমুখি দুই তারকার পুত্র