ফের বর্ধমান স্টেশনে অঘটন, হুড়োহুড়িতে ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্ট ২ যাত্রী

সকালের বড় দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিকালে ফের অঘটন বর্ধমান স্টেশনে (Burdawan)। ওভারব্রিজে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হন ২জন। জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে মৃত্যুর কারণে দুপুর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ২ ও ৩ নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল। ১ ও ৪ নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করতে থাকে। অভিযোগ, শেষ মুহূর্তে ঘোষণার কারণে তাড়াহুড়ো করে ট্রেন ধরতে গিয়েই ফুটওভার ব্রিজের (foot overbridge) ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পদপিষ্ট হন দুজন। তাঁদের বর্ধমান (Burdawan) মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।

বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে বর্ধমান স্টেশনে। মৃত্যু হয় ৩ রেলযাত্রীর। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ৩০ জন। যদিও সিপিআরও কৌশিক মিত্র বিকালেও মৃতের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি বলেই দাবি করেন। ইতিমধ্যেই রেল দফতর আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে ও মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে সাহায্যের (compensation) ঘোষণা করেছে। সিপিআরও জলের ট্যাঙ্ক ভাঙার ঘটনাকে দুর্ঘটনা বললেও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি বেশ কিছুদিন ধরে ট্যাঙ্ক থেকে জল পড়ত। যদিও সিপিআরও (CPRO) জানিয়েছেন ডিসেম্বরের শুরুতে ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করার সময় দেখভাল করা হয়েছে।

তবে শতাব্দী প্রাচীন বর্ধমান স্টেশনের দেখভালে যে সমস্যা রয়েছে তা ২০২০ সালেই দেখা গিয়েছে। জানুয়ারি মাসে ১৪০ বছরের পুরোনো এই স্টেশনের মূল গেটের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। সেই ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু ও ১জন আহত হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি রাত ৮টা নাগাদ সেই দুর্ঘটনা ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কম ছিল। তবে এবারের দুর্ঘটনা একেবারে দিনের ব্যস্ত সময়ে। পরে হাইলেভেল কমিটি গঠন করে রক্ষণাবেক্ষনের কাজ করা হয়। পাশাপাশি, স্টেশন পরিচালনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল ২০১৯ সালে যখন ফুট ওভারব্রিজের ওপর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। বুধবারও ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ থাকার কারণে ১ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যাওয়ার প্রয়োজন বেশি ছিল যাত্রীদের। সেই কারণে একটা বড় সংখ্যায় যাত্রী ফুট ওভারব্রিজের ওপরই দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের দাবি, শেষ মুহূর্তে ট্রেন ঘোষণা হওয়ায় অনেকেই ট্রেন মিস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন।

বিকালে ফুট ওভারব্রিজে একসঙ্গে অনেক যাত্রী পারাপার করতে গিয়েই ফের দুর্ঘটনা, দাবি যাত্রীদের। গুরুতর আহত হন ২ জন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত পর্যন্ত ২ ও ৩ নম্বর লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছান রেলের আধিকারিকরা। তবে এত পরীক্ষার পরেও একই দিনে দুটি দুর্ঘটনা প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের অন্যতম ব্যস্ত এই স্টেশন পরিচালনায় রেলের ভূমিকা নিয়ে।

Previous articleবর্ধমান রেল স্টেশনের দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য, জেলাশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
Next articleঅভিষেকের উদ্যোগে ডায়মন্ড হারবারে বার্ধক্য ভাতা: রাজ্যকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা দেওয়ার আবেদন