Wednesday, November 12, 2025

গৃহবধূরা বেকার নন,সংসারে ওঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে: নির্দেশ হাই কোর্টের

Date:

বছরের ৩৬৫ দিন তারা সংসারের জোয়াল ঠেলেন।বরং বলা ভাল, তাদের দৌলতে সংসারের বাকি সদস্যরা বুঝতেই পারেন না কীভাবে সব ঠিকঠাক ভাবে চলছে। অথচ তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা মুখ বুজে সংসারের জোয়াল ঠেলে যান।বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজের গতিতে কিছুটা খামতি এলেও, তাদের সর্বদা চেষ্টা থাকে সংসারের সবাইকে ভালো রাখার।অথচ কেউ কখনও জানতেও চায় না, হাড়ভাঙা ওই পরিশ্রমের পারিশ্রমিক কী? যিনি নিরলস শ্রম দিচ্ছেন, তাঁর পরিশ্রমের মূল্য কতটা?কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না। তাঁরাও স্বোপার্জনকারী। সংসারে তাঁরা দিবারাত্রি যে কাজ করেন, তারও মূল্য রয়েছে।বৃহস্পতিবার ১৫ বছরের পুরনো একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের বেঞ্চ রায় দেওয়ার সময় ওই মন্তব্য করেন।

এদিন গৃহবধূদের উপার্জন প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, কেন বলা হচ্ছে, গৃহবধূরা বেকার? সংসারে গৃহবধূদের অবদান অনেক বড়। তাঁরা কোনও ছুটি না নিয়ে ৩৬৫ দিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। একই কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করালে যে খরচ হত, তা ব্যয় করতে হয় না ওঁদের দৌলতেই। তাই সংসারে ওঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে। আর সেই জন্যই গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না। তাঁদেরকেও উপার্জনকারী হিসাবেই দেখতে হবে।এই মামলায় এক গৃহবধূর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

সালটা ছিল ২০০৮ সালের এপ্রিল মাস।বর্ধমানের ক্ষীরগ্রামে পথ দুর্ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল।বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস ধরার সময় বাসস্ট্যান্ডের সামনেই তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায় একটি বাস। এই ঘটনায় বর্ধমানের মোটর অ্যাকসিডেন্ট ক্লেম ট্রাইব্যুনালে মামলা করে তাঁর পরিবার। ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করা হয় ৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই সংস্থা এই দাবি মানতে চায়নি।বর্ধমানের ওই পরিবারটিকে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয় সংস্থাটি।এরপরই পাল্টা ওই গৃহবধূর পরিবার হাই কোর্টে মামলা করেন।

মামলাকারীর আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় ২০০৮ সাল থেকে ওই গৃহবধূর সম্ভাব্য উপার্জনের হিসাব দিয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে, সংস্থার যুক্তি ছিল, যিনি মৃত তিনি কোনও উপার্জন করতেন না। তিনি এক জন গৃহবধূ। তবে তাঁর সম্ভাব্য উপার্জন হিসাবে এত টাকা চাওয়া হয় কী করে!বৃহস্পতিবার এই মামলারই শুনানি ছিল।
এরপরই হাই কোর্ট নির্দেশ দেয় মৃত গৃহবধূর পরিবারকে ৬ লক্ষ ৪১ হাজার ২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে। ওই গৃহবধূর প্রতি মাসের সম্ভাব্য বেতন ৩০০০ টাকা হিসাবে ধরে তার উপর সুদের হার হিসাব করেই এই টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত।

Related articles

আর্থিক দুনীতির গুরুতর অভিযোগ, রাজ্য ভলিবল সচিবের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিদ্রোহ

নজিরবিহীন কাণ্ড রাজ্য ভলিবলে(Volleyall)। সচিব পল্টু রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন কর্তাদের একাংশ। অভিযোগ উঠেছে মঙ্গলবার পল্টুর অনুগামীরা...

ভারতকে সমীহ টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের, স্পিন অস্ত্রেই জোর প্রোটিয়াদের

বর্তমানে টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন(WTC) দক্ষিণ আফ্রিকা(South Africa)। কিন্তু ভারতে এসে গম্ভীরের দলকে হারানো যে কঠিন বিলক্ষণ জানে প্রোটিয়ারা।ভারতকে...

২০০৯-এ ডিলিমিটেশন হলে ২০০২-এর ভোটার তালিকা ধরে কেন SIR, কমিশনের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন কল্যাণের 

নির্বাচন কমিশনের একের পর এক সিদ্ধান্তকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার...

এশিয়ার প্রথম মহিলা হিসেবে ডি-লিট মমতাকে, জানাল ওকায়ামা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলার মুকুটে গৌরবের পালক। এশিয়ার প্রথম মহিলা হিসেবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হল।...
Exit mobile version