আজকের দিনে কী কী ঘটেছিল? চলুন দেখে নেওয়া যাক

১৮৯৪

সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। বিখ্যাত পদার্থবিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রিডার হিসেবে যোগদানের পর সত্যেন্দ্রনাথ বসু তত্ত্বীয় পদার্থ বিজ্ঞান ও এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফির ওপর কাজ শুরু করেন। এ ছাড়া তিনি ক্লাসে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা পড়াতেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে আজ সারা দুনিয়া সমীহ করে কেবল মাত্র একটি অঙ্ক ভুল করার কারণেই। একদিন ক্লাসে আলোকতড়িৎ ক্রিয়া ও অতিবেগুনি রশ্মি বিপর্যয় পড়ানোর সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বর্তমান তত্ত্বের দুর্বলতা বোঝাতে এই তত্ত্বের সঙ্গে পরীক্ষালব্ধ ফলাফলের পার্থক্য তুলে ধরেন। ঠিক ওই সময় তত্ত্বটিকে অঙ্কের মাধ্যমে বোঝাতে গিয়েই তিনি ভুলটা করে ফেলেন। পরে দেখা যায় তাঁর ওই ভুলের ফলে পরীক্ষার সঙ্গে তত্ত্বের অনুমান মিলে যাচ্ছে! তিনি তখন মনে মনে ভাবলেন, সে ভুল নিশ্চয় কোনও ভুল নয়। শুরু হল তার উপর নিজের মতো করে গবেষণা। প্রথম প্রথম কেউ তাঁর কথা মানতে চাননি। পরবর্তীতে সত্যেন্দ্রনাথ হতাশ চিত্তে গবেষণাপত্রটি আইনস্টাইনের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। আইনস্টাইন পুরো ব্যাপারটি বুঝে ফেলেন এবং সেটি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করেন। বসুর সেই ভুল অঙ্কটিই এখন বোস-আইনস্টাইন সংখ্যাতত্ত্ব নামে পরিচিত। সত্যিই কিন্তু তিনি যদি অঙ্কটি ভুল না করতেন তবে হয়তো আজ পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কণার নাম ‘বোসন’ হত না।

১৮৭৪

কলকাতার নিউ মার্কেটের যাত্রা শুরু এদিন। ১৮৭১ সাল থেকে কলকাতার ব্রিটিশরা দাবি তুলেছিলেন, তাঁদের জন্য একটা পৃথক মার্কেট তৈরি করা হোক। সেই দাবি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তাকে বাস্তবায়িত করতে উঠেপড়ে লেগেছিলেন কলকাতা পুরসভার (তখন নাম ছিল ‘ক্যালকাটা কর্পোরেশন’) তৎকালীন চেয়ারম্যান স্যর স্টুয়ার্ট হগ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় নতুন মার্কেটের নকশা তৈরির। শেষ পর্যন্ত ১৮৭৪ সালের ১ জানুয়ারি নতুন মার্কেট শুরু হয়। আর হগের উদ্যোগকে সম্মান জানিয়ে ১৯০৩ সালে এর নামকরণ হয়েছিল ‘স্যর স্টুয়ার্ট হগ মার্কেট’।

১৮৮৬

শ্রীরামকৃষ্ণ এদিন কাশীপুর উদ্যানবাটিতে নিজের ভক্তমণ্ডলীর কাছে কল্পতরু রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। উপস্থিত সকলকে তিনি অভয়দান করে বলেছিলেন, ‘‘তোমাদের চৈতন্য হোক।’’ অর্থ নয়, নাম নয়, যশ নয়, প্রতিপত্তি নয়, শ্রীরামকৃষ্ণ সেদিন চৈতন্য বিতরণ করেছিলেন। ভক্তজনেরা বলেন, তিনি সেদিন কল্পতরু হয়েছিলেন আমাদের অন্তরস্থিত চেতনার উন্মীলনের জন্য।

১৮২৪

কলকাতার বউবাজার স্ট্রিটে একটি ভাড়া করা বাড়িতে এদিন সংস্কৃত কলেজ যাত্রা শুরু করে। শুরুতে শুধু ব্রাহ্মণ ও বৈদ্যদের সংস্কৃত কলেজের ক্লাসে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। এই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক সংস্কার প্রবর্তন করেন। ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে কায়স্থদের এবং ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে সকল সম্মানিত হিন্দুদের জন্য কলেজের দ্বার উন্মুক্ত করা হয়। একটি আবশ্যিক বিষয় হিসেবে আরও বেশি জোর প্রদান করে ইংরেজি চালু করা হয় এবং গণিত বিষয়টি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।

১৮৬৯

জলপাইগুড়ি জেলা তৈরি হল এদিন রংপুর জেলার একটা অংশ নিয়ে। জুড়ল বোদা, পচাগড়, তেঁতুলিয়া, পাটগ্রাম ও দেবীগঞ্জ। তিস্তার পশ্চিমপাড়ের এই পাঁচটি থানা, যা রংপুরের অন্তর্গত, তাদের পূর্বপাড়ে ১৮টি, ডুয়ার্সের ১১টি থানা নিয়ে প্রশাসনিক ভাবে জন্ম নিল এই জেলা।

১৮৯০

কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য মনোনীত হলেন স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন থেকে চার বছর মেয়াদে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তেত্রিশ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন ইউরোপীয়রা।

১৮৭৬

কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানার উদ্বোধন হল এদিন। উদ্বোধক প্রিন্স অব ওয়েলস সপ্তম এডওয়ার্ড। সে বছরই ৬ মে চিড়িয়াখানার দরজা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১৮৮৩-৮৪ সালের এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, সারা বছরে ১,৮৮,৫৯৩ জন এসেছিলেন এখানে। কলকাতার অন্যতম দ্রষ্টব্য হিসেবে আলিপুর চিড়িয়াখানার উল্লেখ আছে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের প্রচার-পোস্টারেও। মূলত ছুটির দিনে বিনোদনের উদ্দেশ্যে মানুষ ভিড় করলেও, বিজ্ঞান চর্চার প্রসারে চিড়িয়াখানার ভূমিকা ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় আমাদের দায়িত্বের কথাও মনে করিয়ে দেয় জায়গাটি।

 

 

 

Previous article“কোনওরকম অ.পশক্তির কাছে মাথানত নয়”: দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে বার্তা মমতার, শুভেচ্ছা অভিষেকেরও
Next articleবছরের প্রথম দিনে ব্যাহত হাওড়া-বর্ধমান শাখার ট্রেন চলাচল! চূড়ান্ত হ.য়রানির শি.কার যাত্রীরা