লোকসভা ভোটের আগে অসম-মেঘালয় নিয়ে আসন সমঝোতা চায় তৃণমূল কংগ্রেস। অসমে দুটি এবং মেঘালয়ে একটি আসলে প্রার্থী দিতে চায় তৃণমূল।বাংলার বাইরেও অন্যান্য রাজ্যে তৃণমূল প্রার্থী দিতে চাইছে, আর এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের কাছে। রাজ্যের বাইরে প্রার্থী দেওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূলের যুক্তি, গত বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয়ে কংগ্রেসের মোট প্রাপ্ত ভোটের থেকে বেশি ভোট পেয়েছে তৃণমূল, স্বভাবতই সেখানে কংগ্রেসের থেকে তৃণমূলের অবস্থান বেশি শক্ত৷ একই ঘটনা ঘটেছে গোয়াতেও। সেখানেও কংগ্রেসের থেকে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ বেশ।

এই মর্মেই তৃণমূলের দাবি, বাংলায় ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনে কংগ্রেসের মোট প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ৫ শতাংশের কম৷ সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে দুটি আসন ছাড়ার কথা জানানোর পরেও তার অতিরিক্ত আসন দাবি করার আগে কংগ্রেস যেন নিজেদের বাস্তবিক অবস্থাটা ভালো করে খতিয়ে দেখে। বিজেপিকে হারানোটাই যখন ইন্ডিয়া জোটের প্রধান লক্ষ্য, তখন যেখানে যে বিরোধী দল শক্তিশালী সেখানে তাকেই প্রাধান্য দেওয়ার কথা স্থির হয়েছে ইন্ডিয়া বৈঠকে, এই নীতি মেনেই সবার উচিত আসন ভাগাভাগির ফর্মুলা চূড়ান্ত করা, আরও একবার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দাবি জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। কংগ্রেসের তরফে কোনও আসনের তালিকা দেওয়া হয়নি তৃণমূল নেতৃত্বকে, স্পষ্ট বক্তব্য তৃণমূলের। কংগ্রেসকে ২টি আসন ছাড়ার অবস্থানেই অনড় রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

যদিও তৃণমূলের দাবি, কংগ্রেসের তরফে তাদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে দুটির বেশি লোকসভা আসন ছাড়ার জন্য৷ এ বিষয়েতৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ওব্রায়েন বলেন, আসন সমঝোতা কোন পদ্ধতিতে হওয়া উচিত, মুখ্যমন্ত্রী তা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের বক্তব্য, কীভাবে এগোতে হবে এবং কোন বিষয়গুলি ধরে আসন রফা করতে হবে তা পরিষ্কারভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইন্ডিয়া জোটের প্রতি দায়বদ্ধ। আসন সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে আমরা কংগ্রেসকে বুঝিয়ে দিয়েছি আগেই। রাজ্যে তাদের প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকেও বুঝতে হবে। তৃণমূলের সাফ কথা, আসন সমঝোতা নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক করতে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ২ টি আসন দেওয়া হবে কংগ্রেসকে। নতুন করে কীসের ভিত্তিতে দিল্লিতে গিয়ে আলোচনা হবে? এবার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, তা কংগ্রেসকেই নিতে হবে।

তৃণমূলের দেওয়া আসন রফার চারটি সূত্র রয়েছে, প্রথমত, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল, দ্বিতীয়ত, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল, তৃতীয়ত, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের সম্মিলিত ফলাফল এবং চতুর্থত, যে দল যে রাজ্যে শক্তিশালী সেই দল সেই রাজ্যে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে।
