রাজ্যে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত কোন মশার জন্য? স্বাস্থ্য দফতরকে ভাবাচ্ছে ‘বিলুপ্ত’ মশা

তরাই এলাকা এদের জন্য আদর্শ। আর সেখানেই ডেঙ্গি ছড়িয়ে মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছিল এই শতাব্দী প্রাচীন মশা।

গত কয়েক বছর ধরে শীতের শুরুতেও রাজ্যে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত স্বাস্থ্য দফতরকে যথেষ্ট সমস্যায় রেখেছে। বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে পরিচ্ছন্নতার নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি ডেঙ্গি সংক্রমণ। এবার সেই ডেঙ্গির উৎস সংক্রান্ত নতুন তথ্য বেরোলো উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নিবন্ধে। তাঁদের গবেষণায় বেরিয়ে এল ১০০ বছর আগে রোগ ছড়ানো একটি মশার প্রজাতি যা ডেঙ্গি ও গোদের জীবাণু ছড়ানোর ‘কারিগর’। আর এই মশা উত্তরবঙ্গের তরাই এলাকায় এই মশারই সন্ধান পেলেন গবেষকরা।

প্রায় একশো বছর আগে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময়ে ব্রিটিশ প্রকৃতি বিজ্ঞানীদের বইতে উল্লেখ ছিল হিমালয় পাদদেশের হিমাচল থেকে আসাম পর্যন্ত বিভিন্ন পশুপাখি কীট পতঙ্গের কথা। সেখানে গায়ে সাদা পশমের আবরণ দেওয়া মশা স্মোয়ি মসকুইটো-রও উল্লেখ ছিল। ১৯০৮ সালে এই মশা প্রথম আবিষ্কার করেন উইলিয়াম থিওবল্ড নামে এক উদ্ভিদবিজ্ঞানী। কিন্তু ১৯২০ সালের পর থেকে এই মশার অস্তিত্ব আর ভারতে দেখা যায়নি। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের গবেষক রত্নদীপ সরকার, অভিরূপ সাহা, শুভজিৎ দাস এবং প্রাপ্তি দাসদের গবেষণায় দেখা গেল সেই কুখ্যাত মশা আবার বংশবৃদ্ধি করছে হিমালয়ের কোলে তরাইয়ের জঙ্গলে।

থাইল্যান্ড এলাকায় স্নোয়ি মসকিউটোর অস্তিত্ব এখনও বর্তমান। তবে কীভাবে সেই মশা আবার ভারতে এলো তা নিয়ে এখনও গবেষণা চালাবেন গবেষকরা। সেক্ষেত্রে এই মশার অভিযোজন পরীক্ষা করতে হবে তাদের। সাধারণত স্যাঁতস্যাতে ঝোপ, বাঁশঝাড় এলাকা বেশি পছন্দ এই মশার। সেক্ষেত্রে তরাই এলাকা এদের জন্য আদর্শ। আর সেখানেই ডেঙ্গি ছড়িয়ে মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছিল এই শতাব্দী প্রাচীন মশা। গত দুবছর রাজ্যের পার্বত্য এলাকাতেও ডেঙ্গি বেশ প্রভাব ফেলেছিল। তবে তরাই এলাকা ছাড়াও রাজ্যের বাকি অংশে ডেঙ্গির প্রকোপও এই মশার কারণে কী না এখন তা-ই পর্যালোচনায় স্বাস্থ্য দফতর।

Previous articleআপ সরকারের সঙ্গে সংঘাতের মাঝেই ইস্তফা পাঞ্জাবের রাজ্যপালের
Next articleবল হাতে দাপট বুমরাহর, দ্বিতীয় দিনের শেষে ১৭১ রানে এগিয়ে টিম ইন্ডিয়া