‘বাংলার বকেয়া মেটান,’ মমতার মন পেতে মোদিকে চিঠি রাহুলের

কাজ করিয়ে কাজের টাকা দেয়নি কেন্দ্রের মোদি সরকার। বকেয়া আদায়ে বার বার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল সরকার। এবার সেই সুরেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। চিঠিতে সাংসদের দাবি ২০২২ সাল থেকে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন ফলে কয়েক লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার। বাধ্য হয়ে পরিযায়ী শ্রমিক হতে হচ্ছে তাদের। প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত টাকা পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন রাহুল। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির মাঝে রাহুলের এই চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক মহলের অনুমান মমতার মন পেতেই মোদিকে রাহুলের এই চিঠি।

যদিও প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে তৃণমূল সরকারের কোনও নাম না নিয়েই রাহুল তুলে ধরেছেন বাংলায় ন্যায় যাত্রাকালীন অভিজ্ঞতার কথা। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাহুল লিখেছেন, বাংলায় ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর সমিতির প্রতিনিধিরা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মনরেগায় বকেয়া টাকা না পাওয়ার বিষয়টি আমায় জানান। সেখানে কয়েক লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার কাজ করেও ২০২২ সাল থেকে প্রাপ্য টাকা পাননি এমনকি ২০২১ সাল থেকেও টাকা পাননি এমন বহু শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের টাকা যাতে দ্রুত মেটানো হয় তার জঞ্জ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান তিনি। এছাড়াও চিঠিতে রাহুল জানান, ২০২১-২২ সালে ৭৫ লক্ষ পরিবার টাকা পাননি এবং ২০২৩-২৪ সালে ৮০০০ পরিবার টাকা পাননি। যার জেরে বাধ্য হয়ে তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিকের পথ বেছে নিচ্ছেন। পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে ১৮ বছর আগে ইউপিএ সরকার যে এই প্রকল্প চালু করেন সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেন রাহুল।

তবে বাংলার দাবি দাওয়া নিয়ে রাহুলের এই চিঠির পিছনে অবশ্য রাজনীতির অন্য সমীকরণ দেখতে পাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহল। সাম্প্রতিক সময়ে লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে বাংলায় কংগ্রেসকে আসন ছাড়বেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। আসন সমঝোতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সরাসরি দায়ি করা হয়েছে অধীর চৌধুরীকে। বলা হয়েছে, বিজেপির দালাল হিসেবে কাজ করছেন অধীর। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ ও কুৎসা করছেন তিনি। যা মেনে নেওয়া যায় না। এমনকি বাংলার বকেয়া নিয়েও কখনও মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হওয়ায় তাঁকে সন্তুষ্ট করতে তৎপর হয়েছে দিল্লি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতির মাঝে বাংলার বকেয়া নিয়ে রাহুলের এই চিঠি ভাঙা ঘর জোড়া দেওয়ার প্রচেষ্টা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Previous articleমুর্শিদাবাদ-কাটোয়ায় ডাকাতিতে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁ গ্যাংয়ের ৭ জন পাকড়াও
Next articleভবানীপুর মর্ডার্ন স্কুলের উদ্বোধনে নস্টালজিক এক সময়ের শিক্ষিকা মমতা