ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার ভয়ঙ্কর হাইপারসনিক জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইউক্রেন যুদ্ধে এই প্রথম জিরকন মিসাইল ব্যবহার করল রুশ ফৌজ।

রাশিয়া হাইপারসনিক জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করল ইউক্রেন। কিয়েভ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান মঙ্গলবার এই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, গত সপ্তাহে কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। প্রাথমিক তদন্তে দেকা যাচ্ছে যে, হামলায় হাইপারসনিক জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রায় দুই বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।বিশ্বের কোনও মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের ক্ষমতা নেই এই ‘মৃত্যুদূত’কে রুখে দেওয়ার। ইউক্রেন যুদ্ধে এই প্রথম জিরকন মিসাইল ব্যবহার করল রুশ ফৌজ। সোমবার এমনটাই দাবি করেছেন কিয়েভ সায়েন্টিফিক-রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রধান আলেকজান্ডার রুভিন।

জিরকন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো এটি শব্দের চেয়ে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি গতিতে যায়। সর্বোচ্চ এক হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে এটির।এর আগে ২০২২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল রাশিয়া। তখন এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘অপরাজেয়’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূমি না সাগর থেকে ছোড়া হয়েছে সে বিষয়ে ওলেকসান্দার রুভিনের বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি। তবে তিনি বলেছেন ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে যেসব চিহ্ন পাওয়া গেছে, তা দেখে মনে হয়েছে কিছু দিন আগেই এটি তৈরি করা হয়েছে।

দুবছর পূর্ণ হতে চলেছে রাশিয়া বনাম ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের। গত কয়েকমাসে ইউক্রেনে হামলার ঝাঁজ বাড়িয়েছে মস্কো। আক্রমণের ধার তীব্র করতে নতুন নতুন হাতিয়ার ব্যবহার করছে রুশ বাহিনী। তবে এই প্রথম তারা জিরকন মিসাইল ব্যবহার করেছে বলে খবর। গত সপ্তাহে কিয়েভে আছড়ে পড়েছিল রাশিয়ার ‘ব্রহ্মাস্ত্র’টি। সমর বিশ্লেষকদের মতে, কিয়েভে যদি জিরকন মিসাইলের হামলা প্রমাণিত হয় তাহলে এই যুদ্ধাস্ত্রের মোকাবিলা করা আগামিদিনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে ইউক্রেনের বায়ুসেনার কাছে।
সোমবার টেলিগ্রামে এই হামলার কথা জানান আলেকজান্ডার রুভিন। ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো পরীক্ষানিরিক্ষা করে তাঁর প্রাথমিক অনুমান মিসাইলটি গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অন্দরে আঘাত হেনেছিল। রুভিন মিসাইলটির বিভিন্ন টুকরো একত্রিত করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। কয়েকটি অংশ চিহ্নিত করে তিনি দাবি করেন উপাদানগুলো 3M22 জিরকন মিসাইলেরই অংশ। যদিও রাশিয়া এখনও পর্যন্ত এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে মুখ খোলেনি। জানা গিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারির ওই হামলায় অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একাধিক বাড়ি ও বৈদ্যুতিক পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০১৯ সালে প্রথমবার এই মিসাইলটির কথা জনসমক্ষে জানিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দাবি ছিল, এই হাতিয়ারটি কার্যত ‘অজেয়’। সর্বোচ্চ মাক-৯ (ঘণ্টায় ৯ হাজার কিলোমিটার) গতিবেগে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম জিরকন মিসাইল। রুশ রণতরী ও সাবমেরিনগুলোতে মোতায়েন থাকবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। এর পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করে রুশ সেনাবাহিনী। গত দুবছরে রাশিয়া এই ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রয়োগ করেনি। কিন্তু এবার নাকি ইউক্রেনকে চাপে ফেলতে এই হাতিয়ারই ব্যবহার করেছে মস্কো।

Previous articleফুটবল মাঠে ম.র্মান্তিক ঘটনা, বজ্রাঘাতে মৃ.ত্যু এক ফুটবলারের
Next articleবিজেপিতে যোগ দিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চৌহান