থাবা বসাচ্ছে মারণ প্লেগ! আমেরিকায় মহামারীর আশঙ্কা চিকিৎসকদের, ফিরতে পারে ভয়াবহ স্মৃতি?

আমেরিকায় (USA) ফের থাবা বসাচ্ছে মারণ রোগ! সময় যত গড়াচ্ছে ততই মহামারির আকার ধারণ করছে বুবোনিক প্লেগ (Bubonic Plague)। তবে এই প্রথম নয়, এর আগে চতুর্দশ শতাব্দীতে ৫ কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া মধ্যযুগে মারণ রোগের কারণে ইউরোপেও এক তৃতীয়াংশ মানুষের মৃত্যুর খবর সামনে আসে। মার্কিন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ওরেগনে মানব শরীরে বুবোনিক প্লেগের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকরা মনে করছেন পোষ্য বিড়াল থেকেই মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে এই বিরল রোগ। বুবোনিক প্লেগ নতুন রোগ নয়। মধ্য যুগে এই অত্যন্ত বিরল রোগ ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামেও পরিচিত ছিল। চিকিৎসকরাও এই প্লেগকে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। তবে মার্কিন প্রশাসনের তরফে ওরেগনের ওই আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করা হলেও, তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক ও গবেষকদের অনুমান, আক্রান্তের বা ওই পোষ্যের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন, তাঁদের ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সংক্রমণ আটকাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

কীভাবে মানবদেহে বাসা বাঁধে বুবোনিক প্লেগ?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রামিত মাছি বা এঁটুলি জাতীয় পোকা থেকে  মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। সংক্রমণ দেহে প্রবেশের আটদিন পর থেকেই ধীরে ধীরে প্রকট হয় উপসর্গ। সাধারণত প্লেগে আক্রান্ত পশু বা মাছি থেকেই সংক্রমণ ছড়ায়। এই রোগের কারণে লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে। এমন উপসর্গ থেকেই রোগটির নামকরণ হয়েছে। বগলে, কোমরে এবং ঘাড়ে ডিমের আকারের পিণ্ড তৈরি হয় এর ফলে। যেখান থেকে পুঁজও বেরতে পারে।

উপসর্গ

বুবোনিক প্লেগের অন্যতম উপসর্গ হল জ্বর, শারীরিক দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, বমি, শরীরে অস্বস্তি ও পেশিতে ব্যথা।

সঠিক সময়ে ধরা না পড়লেই বিপদ

সঠিক সময়ে এই রোগ ধরা না পড়লে বুবোনিক প্লেগ সেপ্টিসেমিক প্লেগেও পরিণত হতে পারে, যা শরীরের ধমনীকে সংক্রামিত করে। এছাড়া নিউমোনিক প্লেগও হয়, যেখানে ফুসফুস সংক্রমিত হয়।

মোকাবিলার উপায়

এই মারণ রোগ প্রতিরোধে একাধিক পদক্ষেপ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

  • নির্দিষ্ট সময়ে পোষ্যর টিকাকরণ
  • ইঁদুর, কাঠবিড়ালি-সহ বন্যপ্রাণীদের থেকে পোষ্যকে দূরে রাখুন, নিজে দূরে থাকার চেষ্টা করুন
  • পারমেথ্রিনযুক্ত পোকামাকড় প্রতিরোধক ব্যবহার করুন।
  • খোলা জায়গায় ঘুরে বেড়ানো পোষা প্রাণীর সঙ্গে বিছানায় ঘুমোবেন না
  • অসুস্থ হলে প্রথমেই পোষা প্রাণীকে পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।

মারণ রোগের বাড়বাড়ন্ত সামনে আসতেই চিন্তায় বিশ্ববাসী। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বিধিনিষেধ মেনে চললে বড়সড় কোনও বিপদ ঘটবে না। বর্তমানে চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক উন্নত হওয়ায় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন নয়। তবে তার জন্য পোহাতে হবে বিস্তর সমস্যা।

 

 

 

Previous article‘পিছিয়ে আসলেই মৃত্যু’! রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের জয় নিয়ে দাবি ইলন মাস্কের
Next articleগুজরাট থেকে নাড্ডা, মহারাষ্ট্রে দলবদলু অশোক-মিলিন্দ রাজ্যসভায় প্রার্থী