সোমবার দিনভর শীর্ষ আদালতে একের পর এক ধাক্কা খেলো বিজেপি। এক, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে সন্দেশখালি এবং মণিপুরের মধ্যে কোন তুলনা চলে না। দুই, সুপ্রিম কোর্ট বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ইস্যুতে সংসদের স্বাধিকার রক্ষা কমিটি রাজ্যের আমলাদের হাজিরার যে নোটিশ দিয়েছিল, সেটার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তিন, আদালত বলেছে যে সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই। সবমিলিয়ে মুখ পুড়েছে বিজেপির। কিন্তু কুৎসা, মিথ্যাচার থামেনি। খুব অদ্ভুতভাবে নিউজ চ্যানেলগুলো এই খবর সম্প্রচার করছে না। বরং, সংবাদ মাধ্যম বিজেপির হয়ে নির্লজ্জের মত একতরফা অপপ্রচার করে চলেছে। সাংবাদিক বৈঠক থেকে এমনটাই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, মণিপুরে যা ঘটছে তার সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা করা যায় না, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে বলেছে। এখন সুপ্রিম কোর্টকে বিজেপি এবং জাতীয় মহিলা কমিশনকে এই বাস্তবতা যাচাই করতে পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। জাতীয় মহিলা কমিশন পান থেকে চুন খসলে বাংলায় ছুটে আসতে পারে, কিন্তু মণিপুরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। বাংলার জন্য তাদের অতিসক্রিয়তা। অন্যদিকে, মণিপুরে যাওয়া তো দূরের কথা ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে মুখ খুলতে ৭৯ দিন সময় নিয়েছেন।

সুকান্ত মজুমদার ইস্যুতে শশী পাঁজা বলেন, বিজেপি মনে করেনম যে তারা যেভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করে, একই ভাবে স্বাধিকারধিকার কমিটির ক্ষেত্রেও তা করতে পারে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে সুকান্ত মজুমদারের মামলা প্রিভিলেজ কমিটি দেখাশোনা করতে পারবে না। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তিনি জোর করে সন্দেশখালিতে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন সু।মজুমদার। একজন সাংসদ কীভাবে আইন ভাঙতে পারেন? তাঁর তো আইন প্রণয়নের কথা!

সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মামলাতেও আদালতে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। শশী পাঁজা কটাক্ষ করে বলেন, বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেও একাধিক নির্বাচনে হেরেছে। তারা সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল, কিন্তু আদালত এই দাবি খারিজ করে। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূল কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামীর দাবি, সিপিএম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়িয়েছে। বামেরা সন্দেশখালির প্রতিটি জায়গা জানে। তারা বিষয়টি নিয়ে শুধু নোংরা রাজনীতি করছে।

চোপড়া কাণ্ডে জাতীয় মহিলা কমিশনকে একহাত নিয়ে শশী পাঁজা বলেন, তাঁরা চোপড়ায় গেল না, যেখানে চারটি নিষ্পাপ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। রেখা শর্মা অনেক কথা বলেছিলেন কিন্তু তিনি এখনও মধ্যপ্রদেশে যাননি, যেখানে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা গণধর্ষিত হয়েছিল। আসলে জাতীয় মহিলা কমিশন এখানে স্ক্রিপ্ট চেঞ্জ করতে এসেছে।

কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর বসুন্ধরা গোস্বামী প্রশ্ন তোলেন, সন্দেশখালিতে স্বাধিকার তখন কোথায় ছিল, যখন সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই জনবিরোধী বিলগুলো পাস হয়েছিল? সংসদে প্রধানমন্ত্রী যখন আলোচনা-বিতর্ক এড়িয়ে যান তখন কেউ প্রশ্ন করেন না কেন? সংবাদ মাধ্যমকে তাঁর প্রশ্ন, কেন দিল্লির বুকে কৃষকদের প্রতিবাদ এবং তাঁদের সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে সে সম্পর্কে খবর দেখছি না? এটা কি মিডিয়ার দায়িত্ব নয় জন মানসে তুলে ধরা?

আরও পড়ুন- ‘এরা তো এখন আর মারছেই না’, ব্যাটিং দেখে ইংল্যান্ডকে খোঁচা বুমরাহর
