ইন্দ্রাণীকে নিয়ে তথ্যচিত্র মুক্তিতে বাধা সিবিআইয়ের, মামলা উঠল আদালতে

শীনা বোরা হত্যার ঘটনার ভিত্তিতে নির্মিত তথ্যচিত্র-সিরিজ ‘দ্য ইন্দ্রাণী মুখার্জি: ব্যুরিড ট্রুথ’ মুক্তিতে বাধা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের। শুক্রবার ওটিটি প্ল্যার্টফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল এই তথ্যচিত্রটি। তবে তার আগেই তথ্যচিত্রের মুক্তি আটকাতে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতে মামলা দায়ের করল সিবিআই। আদালতে সিবিআইয়ের আবেদন চূড়ান্ত শুনানি না হওয়া পর্যন্ত শীনা বোরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত-সহ অন্যান্যদের যেন নেটফ্লিক্স বা অন্য কোনও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের তথ্যচিত্রে দেখানো না হয়। সিবিআইয়ের মামলার ভিত্তিতে নেটফ্লিক্স এন্টারটেনমেন্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়াকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে আদালতের তরফে। মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

 

২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ হন ২৫ বছর বয়সি তরুণী শীনা বোরা। শীনার মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় চলে গিয়েছেন শীনা। কিন্তু তিন বছর পর কাহিনি অন্য মোড় নেয়। ইন্দ্রাণীর গাড়ির চালক শ্যামবর পিন্টুরাম রাই পুলিশকে জানায় যে, শীনার হত্যার নেপথ্যে রয়েছেন ইন্দ্রাণী নিজেই। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, শীনা তাঁর সৎ ভাই রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। যার জেরে মরতে হয় শীনাকে। তদন্তে নেমে ২০১৫ সালে ইন্দ্রাণীকে গ্রেফতার করে সিবিআই।

১৯৮৭ সালে মেঘালয়ের শিলঙে জন্ম শীনার। সিদ্ধার্থ দাস এবং ইন্দ্রাণীর কন্যা তিনি। গুয়াহাটির মামারবাড়িতে বড় হয়ে ওঠে শীনা। অন্য দিকে ইন্দ্রাণী কলকাতায় গিয়ে সঞ্জীব খন্নাকে বিয়ে করেন। এক কন্যাসন্তানেরও জন্ম দেন ইন্দ্রাণী। ২০০২ সালে সঞ্জীবের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর পিটার মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন ইন্দ্রাণী। ২০০৬ সালে শীনা তাঁর মায়ের কাছে মুম্বইয়ে চলে যান। মুম্বইয়ে গিয়ে কলেজের পড়াশোনা শেষ করে চাকরি শুরু করেন শীনা। পুলিশ সূত্রে খবর, শীনাকে বোনের পরিচয়ে নিজের কাছে রেখেছিলেন ইন্দ্রাণী। সেখানে ইন্দ্রাণী এবং পিটারের পুত্র রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে শীনা। এরপর ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে শীনা হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলে ইন্দ্রাণী দাবি করে তাঁর মেয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা গিয়েছে। পরে ইন্দ্রাণীর গাড়ির চালক পুলিশকে জানায়, ইন্দ্রাণী পরিকল্পনা করে শীনাকে খুন করেছে। তদন্তে নেমে ২০১৫ সালে পুলিশ ইন্দ্রাণীকে গ্রেফতার করলেও ২০২২ সালে জামিনে মুক্তি পায় অভিযুক্ত। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার উপরেই নির্মিত ‘দ্য ইন্দ্রাণী মুখার্জি: ব্যুরিড ট্রুথ’ ডকুমেন্টরি সিরিজ। যেখানে ইন্দ্রাণী সহ এই মামলায় অভিযুক্তদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। যার জেরেই আদালতের দ্বারস্থ হয় এই তথ্যচিত্রের মুক্তি আটকাতে তৎপর সিবিআই।

Previous articleমদ্যপ অবস্থায় লেভেল ক্রসিং সারাই রেলকর্মীদের, খড়দহে নাকাল নিত্যযাত্রীরা
Next articleখালি হাতে ফিরলেন নাভালনির মা, দেহ কোথায়? প্রশ্নে উত্তাল রাশিয়া