দোষ প্রমাণ হলে শাস্তি হবে: সন্দেশখালিতে কড়া পার্থ-সুজিত, উস্কানির অভিযোগ বিরোধীদের দিকে

পার্থ ভৌমিক বলেন, এক্স, ওয়াই, জেড- যেই দোষ করুক না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকার তাকে ক্ষমা করবে না। দলের কেউ অন্যায় করলে এবং দোষ প্রমাণিত হলে দল তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কেউ ছাড় পাবে না। সন্দেশখালির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জানালেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik) ও সুজিত বসু (Sujit Basu)। শনিবার, এলাকা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ ভৌমিক জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের উপর কারও কোনও অভিযোগ নেই। এলাকার কিছু মানুষ অন্যায় করেছিল। তাদের বিরুদ্ধেই মানুষ সরব হয়েছেন। পার্থ ভৌমিক জানান, অনেক আগেই সিরাজকে তৃণমূল থেকে সরানো হয়েছে। সিরাজের জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজিত মাইতিকে। তীব্র কটাক্ষ করে পার্থ বলেন, “অশান্তি করছে CPIM এবং BJP। রাম-শ্যাম-যদু-মধু জমি জখল করে নিল আর ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব মমতা সরকারের?“

এদিন রাজ্যের ২ হেভিওয়েট মন্ত্রী সন্দেশখালি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে, নোনা জল চাষের জমিতে ঢুকিয়ে মাছ চাষের চারটি পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। একাধিক ব্রিজ, রাস্তা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন দুই মন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার মাহাত, দুই মন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকরা। এলাকায় ঢুকতেই শঙ্খ বাজিয়ে ও উলুধ্বনি দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানানো হয়। তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাস্তার দুধারে মানুষের ঢল নামে।

পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik) বলেন, এক্স, ওয়াই, জেড- যেই অন্যায় করুক না কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার তাকে ক্ষমা করবে না। দলের কেউ অন্যায় করলে এবং তা প্রমাণিত হলে দলও তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কেউ ছাড় পাবে না। অভিযোগ এলে তার তদন্ত হবে, সমস্যা থাকলে সমাধান হবে। তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ গোটা তৃণমূল সন্দেশখালির মানুষের পাশে আছে। সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের। এদিন পার্থ ভৌমিক জানান, অনেক আগেই সিরাজকে তৃণমূল থেকে সরানো হয়েছে। সিরাজের জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অজিত মাইতিকে। বিরোধীরাই সন্দেশখালিকে অশান্ত করছে বলেই অভিযোগ করে পার্থ ভৌমিক জানান, ইতিমধ্যেই জমিহারাকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন: ১ জুলাই থেকে দেশে কার্যকর হচ্ছে ৩ ‘সংহিতা’ আইন

তবে সিপিএম ও বিজেপি আবারও পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। দমকল মন্ত্রী তথা বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সুজিত বসু বলেন, অন্যায় করলে কেউ রেয়াত পাবে না। রাজ্য সরকার, পুলিশ প্রশাসন মানুষের সমস্যার সমাধানে লাগাতার কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ২৫৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে দেড়শো অভিযোগ তদন্ত করে সর্ট আউট করা হয়েছে। এবং একশো মানুষকে অভিযোগের ভিত্তিতে পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে জমি, টাকা, খেলার মাঠ পুলিশ প্রশাসন ও দলের তরফে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও যদি কারও কোন অভিযোগ থাকে তবে ক্যাম্পে গিয়ে জানাতে পারে, সমস্যার সমাধান পুলিশ প্রশাসন করবে। প্ররোচনায় পা দিয়ে এলাকা উত্তপ্ত বা উত্তেজনা না ছড়িয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সুষ্ঠুভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার আবেদনও করেন সুজিত।

এদিন দুপুরে ধামাখালি থেকে লঞ্চে করে দুই মন্ত্রী সন্দেশখালিতে আসেন। এলাকা ঘুরে দেখেন, মানুষের সমস্যা শোনেন। নদীবাঁধ কেটে চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে জোর করে মাছ চাষের যে অভিযোগ উঠেছিলো তা সরেজমিনে ক্ষতিয়ে দেখেন সেচমন্ত্রী ও দমকল মন্ত্রী। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ব্রিজ, ঢালাই রাস্তা, দুর্বল নদীবাঁধ মেরামতের আশ্বাসও দেন তারা। দুই মন্ত্রীর উপস্থিতি ও মানুষ তাদের সমস্যার কথা বলতে পারায় ও সমস্যার সমাধানের আশ্বাস পাওয়াতে খুশি সন্দেশখালির মানুষ।

নরেন্দ্র মোদি বাংলায় আসছেন। বঙ্গ বিজেপিকে ততদিন এই সন্দেশখালি ইস্যুটাকে জিইয়ে রাখতে হবে। তাই বিজেপি-সিপিএম মিলে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি পাকাচ্ছে। এই অভিযোগ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। জমি নিয়ে, টাকা নিয়ে যে অভিযোগ আছে তার জন্য তো প্রশাসন ও দল ব্যবস্থা নিচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা দিল্লির বুকে মনিপুর নিয়ে তো কথা বলছেন না? একটা রাজ্য জ্বলছে, অথচ তাদের মুখে কোনও কথা নেই-তীব্র কটাক্ষ কুণালের।



Previous articleবিজেপিকে ভোট না দিলে আধার বাতিল, দলীয় বিধায়কের মন্তব্যে অস্বস্তিতে বঙ্গ নেতারা
Next articleপ্যারা ক্রিকেটার আমিরের সঙ্গে দেখা করলেন সচিন, ছবি পোস্ট ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারের