উত্তমকুমারের ‘সূর্যতোরণ’ স্বপ্ন পূরণ করেছে মমতা-সরকার, উদ্যোগে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর

আজ মহানাগরিক স্বয়ং প্রতীকী চাবি তুলে দেন বাসিন্দাদের। চাবি হস্তান্তর করেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী শশী পাঁজারাও। বাংলার বুকে এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হল কলকাতা।

মহানগরীতে মহানায়কের স্বপ্ন পূরণ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার। সিনেমায় গরিব মানুষের ভাঙাচোরা ঝুপড়ির অবসান ঘটিয়ে সেখানেই বহুতল নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন উত্তমকুমার (Uttam Kumar)। আর প্রায় অবিকল সেই প্রজেক্ট এবার বাস্তবায়িত করে দেখালেন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অয়ন চক্রবর্তী (Ayan Chakraborty)। এখানে মানিকতলা মডেল ডোয়েলিং ইউনিটের দীর্ঘদিনের ভাঙাচোরা বিপজ্জনক হয়ে যাওয়া ঘরগুলি ভেঙে সেই জমিতেই সম্পূর্ণ নতুন বহুতল তৈরি হল। আজ সেই ‘সূর্যতোরণ’-এর উদ্বোধন করলেন নগরোন্নয়ন ও পুর বিষয়ক মন্ত্রী এবং KMDA চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়  (Sudip Banerjee), নারী- শিশুবিকাশ ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Sashi Panja), প্রাক্তন সাংসদ ও মোহনবাগান কর্তা সৃঞ্জয় বসু (Srinjay Bose), রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh), বিধায়ক পরেশ পাল, বোরো ৪ কলকাতা পুরনিগমের চেয়ারপার্সন সাধনা বোস, ৩ নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য কিশোর রাউত পুরপ্রতিনিধি সচিন সিং, শক্তিপ্রতাপ সিং মৃত্যুঞ্জয় পাল সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।

এমএমডি ব‌্যারাক বলে পরিচিত ভঙ্গুর বিপজ্জনক ঘরগুলিকে নতুন চেহারা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ২০১০ সালে কাজ শুরু করেন এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, আজ থেকে বছর ১৪ আগে ফিরহাদ হাকিমকে এই জায়গাটা দেখানো হয়। আজ মহানাগরিক স্বয়ং প্রতীকী চাবি তুলে দেন বাসিন্দাদের। চাবি হস্তান্তর করেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী শশী পাঁজারাও। বাংলার বুকে এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হল কলকাতা। ২০২১ সালে আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী কাউন্সিলর (Councillor)হওয়ার পরই এই সূর্যতোরণের কাজ জোর কদমে শুরু হয়। একদিকে প্রকল্পটি সরকারি কর্তৃপক্ষকে বোঝানো, অন‌্যদিকে আবাসিকদের রাজি করানো দুই কাজেই সফল অয়ন এবং কুণাল। অয়ন চক্রবর্তী জানান, প্রকল্প রূপায়ণে আন্তরিক সাহায‌্য করেছেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং ফিরহাদ হাকিম। এ বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার গরিবের আবাসনের ক্ষেত্রে এটি একটি মডেল গড়ে তুলল। এ যেন মহানায়কের স্বপ্ন শেষপর্যন্ত জননেত্রীর টিমের হাত দিয়ে বাস্তবায়িত হল।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, ভাঙা বাড়ি সারিয়ে সরকারি টাকায় নতুন আবাসন হবে আর সেখানে এখানকার বাসিন্দারা থাকতে পারবেন এটা প্রাথমিক ভাবে কেউ ভাবতে পারেননি। কিন্তু এটা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। তাই কথা দিয়ে কথা রাখে তৃণমূল। ব্রিটিশ আমলের ধাঁচে তৈরি এই ব্যারাকে অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু এই নতুন আবাসনে প্রত্যেকের আলাদা ঘর, বারান্দা,টয়লেট থাকছে। শশী পাঁজা জানান, এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী দারুণ এক ঘোষণা করেছেন , আর দুপুরে সূর্যতোরণের উদ্বোধন – দুই মিলে গিয়ে ‘পারফেক্ট সানরাইজ’ হয়েছে আজ। আরও একবার শ্রমজীবী মানুষের পাশে দিদি। বাংলায় কাউকে উৎখাত নয় সকলকেই পুনর্বাসন দিয়ে ভাল রাখার চেষ্টা করে মমতা- সরকার। এই প্রজেক্টের জন্য কাউন্সিলর অয়ন চক্রবর্তীকে শুভেচ্ছা জানান বিধায়ক পরেশ পাল। এদিন উদ্বোধন মঞ্চ থেকে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সরব হন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখে বাংলার মানুষকে সমস্যায় ফেলছে বিজেপি। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আগামী ১০ তারিখ ‘জনগর্জন সভা’য় সকলকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি ‘বিধান রায়ের সঙ্গে একমাত্র মমতারই তুলনা করা যায়’ বলেও এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন সাংসদ। দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে ঠাসাঠাসি করে জীবন কাটানোর পর এবার সরকারের উদ্যোগে তৈরি আলো ঝলমলে নতুন ফ্ল‌্যাট পেয়ে আনন্দে ভাসছেন বাসিন্দারা।


Previous article‘সুপ্রিম ধাক্কা’র পর ফের বড় নির্দেশ! শাহজাহানকে CBI হস্তান্তরের সময়সীমা বেঁধে দিল হাই কোর্ট
Next articleলোকসভা ভোটের আগে ৬৫ হাজার পরিবারকে অন্নপূর্ণা অন্ত্যোদয় যোজনার কার্ড রাজ্যের