একদিকে নারী দিবসের প্রাক্কালে পথে নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সময় স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা সন্দেশখালিতে ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আবারও শিরোনামে উঠে এলে সেই সন্দেশখালি। নারীদিবসের ঠিক আগের দিন সন্দেশখালি নির্যাতিতা মহিলাদের সঙ্গে দেখা করার নামে উস্কানি লদিতে যাচ্ছিলেন বিজেপি মহিলা মোর্চার সদস্যরা। সেখানে যেতে গিয়েই হুলস্থুলকাণ্ড। পুলিশি বাধার মুখে পড়েন অগ্নিমিত্রা পল, লকেট চট্টোপাধ্যায়, ভারতী ঘোষরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের। সন্দেশখালি যাওয়ার পথে নিউটাউনে হাতিশালায় বাধা দেওয়া হয় তাঁদের। পুলিশ ১৪৪ ধারার কারণ দর্শায়।

পুলিশের বাধার মুখে পড়ে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অগ্নিমিত্রা পাল, ভারতী ঘোষরা। অগ্নিমিত্রা যখন রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তখন এক পুলিশকর্তা তাঁকে ডাকেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই অগ্নিমিত্রা পলকে আটক করে পুলিশ। অগ্নিমিত্রা বলেন, আপনাদের সঙ্গে তো কথাই বলা যায় না। মহিলা মোর্চার নেত্রীদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
সন্দেশখালির শাহজাহান শেখকে বুধবার সন্ধ্যায় হাতে পেয়েছিল সিবিআই। তার পরেই তারা পৌঁছে যায় শাহজাহানের ‘খাসতালুক’ সন্দেশখালিতে। সিবিআই সূত্রে, সন্দেশখালিতে যাওয়া সিবিআই গোয়েন্দাদের ওই দলটির সঙ্গে ছিল ‘বড়’ কেন্দ্রীয় বাহিনীও।গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে রেশন দুর্নীতি মামলার সূত্রে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডির একটি দল। সেই সময়েই শাহজাহানের গ্রাম সরবেরিয়ায় ‘গ্রামবাসীরা’ লাঠি, ইট, পাথর নিয়ে চড়াও হয় ইডির ওই দলটির উপর। সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও কোনও ক্রমে গ্রামবাসীদের হামলা থেকে বাঁচতে প্রাণ হাতে নিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন ইডি আধিকারিকেরা। তাঁদের মধ্যে তিন জন জখম হন। হাসপাতালে ভর্তিও করাতে হয় ইডি কর্তাদের। এই ঘটনারই তদন্ত করছে সিবিআই।

আগেই একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল ইডির তরফে। সেখানে শাহজাহান এবং তাঁর অনুগত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইডি অফিসারদের খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছিল ইডি। পরে ন্যাজাট থানার পুলিশও ইডির উপর হামলার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে। পরবর্তী কালে সেই মামলায় যুক্ত করা হয় খুনের চেষ্টার ধারাও। কিন্তু অভিযুক্ত হিসাবে সেখানে শাহজাহানের নাম ছিল না। মঙ্গলবার এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতেই সন্দেশখালির ঘটনায় দু’টি এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। শুরু করে তদন্ত। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশানুসারে সন্দেশখালি মামলায় অভিযুক্ত শাহজাহানকে হেফাজতে নেয় তারা।শাহজাহানকে হাতে পাওয়ার পর তড়িঘড়ি সন্দেশখালির মামলা সংক্রান্ত পুলিশের নথিপত্র সংগ্রহ করতে যায় সিবিআই। সঙ্গে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও।
