আতঙ্কের ছবি গুজরাটে! মোদির রাজ্যে দিনে গড়ে ছয়জন ধর্ষিতা

যে নারী সম্মান নিয়ে প্রায় দুমাস ধরে বিজেপির কার্যক্রমের কথা ঘটা করে বলে গেলেন নরেন্দ্র মোদি, সেই বিজেপি শাসিত গুজরাট নারীর প্রতি হওয়া অপরাধ ঠেকাতে কতটা ব্যর্থ তা এই সরকারি পরিসংখ্যানেই প্রমাণ মেলে।

গুজরাট প্রশাসনের নিজের দেওয়া তথ্যই বলছে এক বছরে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২,২০৯ টি। গণধর্ষণ ৩৬টি। প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যে নারী নিরাপত্তার হিসাব পেশ করে বিজেপি সরকারের দাবি এটা ১ শতাংশ কমার পরের হিসাব। সেই প্রধানমন্ত্রীই ৬ মার্চ বাংলায় এসে সন্দেশখালিকে দেশের আন্দোলনের মুখ করতে চেয়েছিলেন, যেখানে নারী নির্যাতনের কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। সন্দেশখালির জন্য ‘প্রাণ কেঁদে ওঠা’ প্রধানমন্ত্রীকে একবারও আহমেদাবাদ বা সুরাটের নির্যাতিতা নারীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না, যেখানে তাঁরই প্রশাসন তথ্য পেশ করে স্বীকার করছে নারী নিরাপত্তার ভয়ঙ্কর ছবিটা।

গুজরাট সরকার রাজ্যের এক বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে যে তথ্য পেশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২০-২১ সালে গোটা রাজ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২০১৬টি, গণধর্ষণ ২৭টি। সেই সংখ্যা ২০২১-২২ সালে বেড়ে যায়। ধর্ষণের সংখ্য়া ২,২২৯ ও গণধর্ষণ ৩২ টি। গুজরাট সরকারের দাবি ২০২২-২০২৩ সালে সেই অপরাধের পরিমাণ ১ শতাংশ কমেছে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী নারীর প্রতি অপরাধের অধিকাংশই হচ্ছে দুই শহর আহমেদাবাদ ও সুরাটে। ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ২৭ শতাংশ এই দুই শহরের। ৩৬টি গণধর্ষণের ঘটনার ২২টি হয়েছে আহমেদাবাদ, সুরাট, জামনগর, বনসকণ্ঠ ও মেহসানা শহরে। এমনকি পুলিশি তৎপরতাও এত কম যে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ১৯৬ জনের খোঁজ এখনও পায়নি গুজরাট পুলিশ।

তবে গুজরাট সরকারের দাবি এই ধর্ষণের ঘটনার ৫০ শতাংশ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের কারণে হয়েছে। বাকি ৫০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশ চরম অপরাধের নিদর্শন, যেখানে বলপূর্বক অপরাধ মানসিকতার উদাহরণ পাওয়া গিয়েছে। এই অপরাধীদের একটা বড় অংশকে দুবছর বা দেড় বছর সময় ধরেও খুঁজে পাচ্ছে না গুজরাট পুলিশ। যে নারী সম্মান নিয়ে প্রায় দুমাস ধরে বিজেপির কার্যক্রমের কথা ঘটা করে বলে গেলেন নরেন্দ্র মোদি, সেই বিজেপি শাসিত গুজরাট নারীর প্রতি হওয়া অপরাধ ঠেকাতে কতটা ব্যর্থ তা এই সরকারি পরিসংখ্যানেই প্রমাণ মেলে। অন্যদিকে ডিসেম্বরেই ন্যাশানাল ক্রাইম ব্যুরোর রিপোর্টে বলা হয়েছে নারীদের জন্য সবথেকে নিরাপদ রাজ্য বাংলা। এমনকি মোদির রাজ্যে যেখানে পুলিশ নারী নির্যাতনে অপরাধীদের বছরের পর বছর ধরতে পারে না সেখানে এনসিবি-র রিপোর্টে পরিষ্কার বাংলার পুলিশ কত তৎপরতার সঙ্গে অপরাধীদের ধরে।

Previous articleজলপাইগুড়িতে হিমঘরে ‘বিষাক্ত’ গ্যাস লিক! মৃত ১, অসুস্থ দমকল কর্মী-সহ ৩
Next articleলোকসভা ভোটের আগে বসিরহাট পুলিশ জেলায় বড়সড় রদবদল! বদলে গেল সন্দেশখালি থানার ওসি