Saturday, December 27, 2025

সুপ্ত ক্ষমতার বৃহত্তর প্রভাব, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে CCC

Date:

Share post:

ঘরে বাইরে আজ মহিলা ক্ষমতায়নের নিদর্শন। বাড়ির গৃহবধূ একাধারে ব্যবসায়ে পারদর্শী আবার অন্যদিকে এক মহিলা আরেক প্রতিবেশী মহিলার অনুপ্রেরণাও বটে। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনে (International Womens Day Celebration) ক্যালকাটা চেম্বার অফ কমার্স এবং ক্যালকাটা চেম্বার অফ কমার্স লেডিস ফোরামের তরফে কলকাতার পার্ক হোটেলে আয়োজিত হল এক বিশেষ অনুষ্ঠান। নারী শক্তির প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতায়ন এবং সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়ে বিভিন্ন প্রান্তের কৃতি এবং সফল মহিলাদের সম্মান জানালো CCC এবং CCCLF। অভিনব ছিল অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিক নাট্য উপস্থাপনা। সফল মহিলার নেপথ্যে লুকিয়ে চেনা গল্পের বাইরের ছবিটা এক দারুণ সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার মাধ্যমে এদিন তুলে ধরা হলো সবার সামনে।

পার্ক হোটেলে এদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপিকা ডক্টর শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষিকা কান্তা চক্রবর্তী, টোটো ড্রাইভার ডলি গুরুং, বীরভূমের কাঁথা এমব্রয়ডারি শিল্পী তাজকিরা বেগম, স্বপ্নপূরণ সুন্দরবনস – এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সচিব শতরূপা মজুমদারকে সম্মানিত করা হয়। কোনও সমাজ বিকশিত হতে পারে না যদি না মহিলারা উন্নয়নের কান্ডারী হয়ে ওঠেন। বিদ্যাসাগর থেকে স্বামী বিবেকানন্দ প্রত্যেকেই নারী শক্তির প্রতিষ্ঠা এবং যথাযোগ্য সম্মানের দাবি জানিয়ে এসেছেন। আজ সময় পাল্টেছে তাই সমাজ বুঝেছে যে মহিলারাই এ যুগের চালিকাশক্তি। হরিশংকর হালওয়াসিয়া (CCC President) এবং মঞ্জুলা জৈন (CCCLF President) সেই কথাকেই যেন ফের প্রমাণ করলেন।

শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান সকলেই পড়া শেষে চাকরি খোঁজেন। কিন্তু ‘চাকরি করতে চাই ‘- এই কথাটার পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার সুযোগ গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নে গত ৯ বছর ধরে টানা কাজ করে চলেছেন তিনি। শিক্ষিকা কান্তা চক্রবর্তী দমদম প্ল্যাটফর্মে প্লাস্টিক বিছিয়ে, স্টেশনে ভিক্ষা করা শিশুদের পড়াশোনা করানোর ব্রতে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। সেই শিশুদের অনেকেই আজ বড় হয়ে অ্যাকাডেমিক এবং খেলাধূলার জগতে সবার নাম উজ্জ্বল করেছে। মহিলা মানে পিছিয়ে থাকা নয়, টোটো চালিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন ডলি গুরুং।

বীরভূমের নানুর থেকে এসেছেন তাজকিরা বেগম। পুরনো ছিঁড়ে যাওয়া কাপড় থেকে একটা সূঁচ আর সুতো দিয়ে কাঁথা তৈরিতে বিপ্লব এনেছেন তিনি। রাজ্যের সেল্ফ-হেল্প গ্রুপের সহায়তায় শুধু যে নিজে কাজ করছেন তা নয়, ৩৫০ মহিলাকে কাজ দিয়েছেন তিনি। বিদেশের ৫ জায়গায় নিজের কাজ নিয়ে পৌঁছে গেছেন তিনি।

সবশেষে বক্তব্য রাখেন শতরূপা মজুমদার। সুন্দরবন ঘুরতে অনেকেই যান কিন্তু শতরূপা সেখানে গিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল। ৮৫০০ পড়ুয়া রয়েছেন তাঁর স্কুলে। মধু বিক্রেতা, কাঠুরে পরিবারের সন্তানরা আজ স্কুলে গিয়ে স্বপ্ন গড়ছেন, লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। এই মহিলাদের লড়াইটা, ইচ্ছেশক্তির গল্পটাকে এক কথায় বলতে গেলে, এটাই সুপ্ত ক্ষমতার বৃহত্তর প্রভাব। তাই সম্মান জানালো ক্যালকাটা চেম্বার অফ কমার্স এবং ক্যালকাটা চেম্বার অফ কমার্স লেডিস ফোরাম।

spot_img

Related articles

৩৫-এ হৃদরোগ! চলে গেলেন মোহনবাগানের সুখেন

মাত্র ৩৫ বছরেই প্রয়াত হলেন মোহানবাগানের প্রাক্তন ডিফেন্ডার সুখেন দে। কলকাতা ফুটবলের পরিচিত মুখ সুখেন শুক্রবারও তাঁর কর্মক্ষেত্রে...

‘এরা বিজেপি নয়’! চিকেন প্যাটিস-কাণ্ডে শুভেন্দুর বরণ করা হামলাকারীদের তোপ অভিজিতের

ময়দানে চিকেন প্যাটিস বিতর্ক বঙ্গ বিজেপিকে এক ধাপ পিছিয়ে দিয়েছে। তবে সেই চিকেন প্যাটিস বিতর্ক নতুন করে যে...

খালেদা-পুত্র তারেকের হাতেই কি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের চাবি? কোন পথে সমর্থন

কী হবে বাংলাদেশের (Bangladesh) ভবিষ্যৎ? খালেদা-পুত্র তারেক রহমানই (Tarek Rahman) কি আগামী প্রধানমন্ত্রী? এখন এই জল্পনাই এশিয়ার রাজনৈতিক...

সেনাবাহিনীকে জল-লস্যি খাইয়ে জাতীয় পুরস্কার! ভাবতেই পারেনি শ্রবণ

চারিদিকে যখন তখন পাকিস্তানের ড্রোন, মিসাইলের ভয়। আর সবাই যখন ভয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করেছিলেন, তখন ছোট্ট শ্রবণ...