পদ্মের নিশানায় খোদ শুভেন্দু! বিজেপির গৃহযুদ্ধে খোঁচা তৃণমূলের

রায়গঞ্জ থেকে দার্জিলিং কিংবা আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি সর্বত্রই বিজেপির বিভাজন স্পষ্ট।

লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) আর কয়েকটা দিন বাকি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলার সব আসনে প্রার্থী দিতে পারিনি গেরুয়া শিবির। একের পর এক অফিসার বদলি আর কুৎসার রাজনীতি করে শিরোনামে থাকতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী (Shubhendu Adhikari) এবং সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) গৃহযুদ্ধে ব্যাকফুটে পদ্ম শিবির। এবার ‘আদি বিজেপি’র নিশানায় খোদ বিরোধী দলনেতা। আত্মসম্মান থাকলে কোনও বিজেপি নেতাকর্মী এই মুহূর্তে গেরুয়া দলকে সমর্থন করবে না, খোঁচা তৃণমূলের।

বাংলায় বিজেপির দুই গোষ্ঠী, এক শুভেন্দু অনুগামী আর দুই সুকান্ত অনুগামী। এবার লোকসভা নির্বাচনে কার প্রার্থী বেশি থাকবে তা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগছে বঙ্গ বিজেপি। নিজের আধিপত্য কায়েম করতে চেয়ে পুরনোদের সরিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার যে খেলা শুরু করেছেন শুভেন্দু অধিকারী, তার বিরুদ্ধে সরব বিজেপি কর্মী সমর্থকরাই। দমদম থেকে কৃষ্ণনগর সর্বত্রই তাই শুভেন্দু বিরোধী স্লোগান, পোস্টার। সোশ‌্যাল মিডিয়াতেও সেভ বেঙ্গল বিজেপি—র তরফে শুভেন্দুকে ‘লোডশেডিং বিধায়ক’ বলে কটাক্ষ ও নিশানা করে লেখা হয়েছে, বঙ্গ বিজেপিকে শেষ করে দিতে এসেছেন শুভেন্দু(Shubhendu Adhikari)। সুকান্ত- শুভেন্দুর কোন্দলে বাংলায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারছেন না দিল্লির নেতারা। আজ রাজধানীতে তাই দুই বঙ্গ নেতাকে নিয়ে বৈঠক করা হবে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। দমদম লোকসভা কেন্দ্রে শুভেন্দু নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী করতে চাইছেন শীলভদ্র দত্তকে। পাশাপাশি বরানগর বিধানসভার উপনির্বাচনেও সজল ঘোষকে রাখতে চান তিনি। এটা জানা মাত্রই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দমদম ও বরানগর এলাকার আদি বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা। আবার কৃষ্ণনগরের রানিমা অমৃতা রায়কে দলে নিতেই বিজেপির অন্দরে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে বিদ্রোহ। ‘চক্রান্তকারী’ শুভেন্দুকে নিশানা করে তাঁর সিদ্ধান্ত “মানছি না মানবো না” রব উঠেছে। অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কেন রাজনীতিতে আনা হচ্ছে এই নিয়েও আঙ্গুল উঠেছে বিরোধী দলনেতার দিকে। অর্থাৎ বিজেপির বিরোধিতা করছে বিজেপি নিজেই। এমনকি শুভেন্দু বিরোধী পোস্টারে আদি বিজেপি কর্মীরাই তাঁকে ‘লোডশেডিং বিধায়ক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। বিজেপির অন্যতম সংগঠক দিলীপ ঘোষ এখনও পর্যন্ত পদ্মের টিকিট পাননি। শোনা যাচ্ছে এখানেও কলকাঠি নেড়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

রায়গঞ্জ থেকে দার্জিলিং কিংবা আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি সর্বত্রই বিজেপির বিভাজন স্পষ্ট। আজ তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ বলেন, গ্রেফতারি থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গেছেন শুভেন্দু। কিন্তু এখন বুঝতে পারছে যে এই লোকসভা নির্বাচনে গোহারা হারবে ভারতীয় জনতা পার্টি। জোড়া তালি দিয়ে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে, বারবার অফিসার বদলির নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আসলে বিজেপির কোন্দল থেকে নজর ঘোরাতেই কুৎসা অপপ্রচারের রাজনীতি করছেন শুভেন্দু বলেই অভিযোগ তাঁর। পাশাপাশি তিনি বলেন, আত্মসম্মান থাকলে আদি বিজেপির কেউই বর্তমান বিজেপি সরকারকে সমর্থন বা ভোট কোনটাই দেবেন না।

Previous articleডেবরার সভায় বিপত্তি! ভাঙা মঞ্চেই প্রচারে ঝড় তুললেন দেব
Next articleকেজরির বিরুদ্ধে ‘রাজসাক্ষী’ প্রতারক সুকেশ! তথ্য ফাঁসের হুমকি