এখনই কড়া পদক্ষেপ নয়, ভূপতিনগরকাণ্ডে NIA অফিসারদের রক্ষাকবচ হাইকোর্টের!

ভূপতিনগরের ঘটনায় NIA-কে রক্ষাকবচ হাইকোর্টের। এই রক্ষাকবচের ফলেই এনআইএ অফিসারদের আপাতত স্বস্তি

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর তল্লাশিকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আপাতত স্বস্তিতে NIA আধিকারিকরা। ভূপতিনগরের ঘটনায় NIA-কে রক্ষাকবচ হাইকোর্টের। এই রক্ষাকবচের ফলেই এনআইএ অফিসারদের আপাতত স্বস্তি। আদালতের নির্দেশ, এখনই NIA অফিসারদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নয়। তদন্ত চালিয়ে যাবে পুলিশ। তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট দিতে হবে আদালতের কাছে। এদিন একইসঙ্গে ভূপতিনগরের ২টি মামলায় কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার ভূপতিনগর বিস্ফোরণের কাণ্ডের তদন্তে পূর্ব মেদিনীপুরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে ভোররাতে হানা দিয়েছিল NIA. অভিযোগ, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের মতো ভূপতিনগরেও তল্লাশি চলাকালীন আক্রান্ত হন NIA অফিসাররা।

পালটা NIA-র বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন ধৃত তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানার স্ত্রী। ভূপতিনগর থানায় NIA আধিকারিকদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন ধৃত তৃণমূল নেতা মনোব্রত জানার পরিবার। এফআইআর দায়ের করে সেই ঘটনার তদন্তও শুরু করে পুলিশ। যার প্রেক্ষিতে বিবৃতি জারি করে NIA দাবি করে,”যা অভিযোগ উঠেছে, সবই মিথ্যা। NIA-র ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলছে।”

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “হাইকোর্টের নির্দেশে ভূপতিনগর বিস্ফোরণের তদন্ত করছে NIA। আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। শনিবার নাড়ুয়াবিলা গ্রামে গিয়ে বিনা প্ররোচনায়, অপ্রত্যাশিতভাবে হামলার মুখে পড়েন সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁদের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ৫ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এরপর ধৃত মনোব্রত জানাকে যখন স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন NIA আধিকারিকদের উপর হামলা চালানো হয়। এক আধিকারিক আহত হন। হামলায় একটি সরকারি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে এনআইএ।”

NIA-এর তরফে দাবি করা হয়, তল্লাশি শুরু হওয়ার আগেই NIA এক অধিকারিক থানায় পৌঁছন। ডিউটি অফিসারের কাছে পুলিস ফোর্স চান। এরপর ৫টি লোকেশনে তল্লাশি শুরু হয়। ভোর সাড়ে ৪টের আগেই থানায় পৌঁছয় NIA। তল্লাশি চালাতে প্রায় ৩০ জন CRPF নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ৬টি টিম ছিল ব্যাক আপে। একটি CRPF ফোর্সও রাখা ছিল। মোট 8টি গাড়ি ছিল এই অপারেশনের জন্য। গন্ডগোল শুরু হওয়ার পর সেই ফোর্স ডাকা হয়েছিল ঘটনাস্থলে। ভোর সোয়া ৬টা নাগাদ যখন আক্রমণ হয়, তার অনেক আগেই NIA-এর তরফে থানায় জানানো হয়েছিল যে, তারা তল্লাশি চালাতে যাচ্ছে।

যদিও এনআইএ-র দাবির পালটা জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি, ভোর ৫টার পর এনআইএ-এর একটি দল থানায় আসে। লিখিতভাবে ৫ লোকেশনে তল্লাশির কথা জানায়। কিন্তু নির্দিষ্ট কোন কোন লোকেশন, সেটা উল্লেখ করা হয়নি। জেলা পুলিস আরও দাবি করে, যখন তারা সহযোগী টিম দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই খবর আসে হামলার ঘটনার। জেলার পুলিসের বক্তব্য, একটি টিম থানায় ভোরবেলা এলেও, ৩টের মধ্যে গ্রামে ঢুকে যায় কয়েকটি দল। আর ভোর ৪টে নাগাদ লোকেশনে (অর্থাৎ মনোব্রত,বলাইদের বাড়িতে) পৌঁছে যায় এনআইএ টিম।

এদিকে এফআইআর-এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয় এনআইএ। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। তারপরই হয় শুনানি। সেখানেই রক্ষাকবচ পান NIA আধিকারিকরা।

Previous articleকমিশনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে NIA-র ডিজি বদল? এজেন্সির জবাব দাবি সাকেতের
Next articleসন্দেশখালিতে CBI-এর সিট, নতুন ইমেইল আইডিতে অভিযোগ নেবে কেন্দ্রীয় সংস্থা