বিগত তিন দশক তার ঠিকানা ছিল কারাগার। এবার বন্দিজীবন শেষ হতে চলেছে তার। তিনি আর কেউ নন,বউবাজারের বিধ্বংসী বিস্ফোরণের চক্রী মহম্মদ খালিদ। তাক সমাজের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছেন। বলা হয়েছে, মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দিতে হবে বউবাজার বিস্ফোরণের অন্যতম চক্রীকে। যদিও আদৌ এই রায় কার্যকর করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দীহান রাজ্য। কারণ, আইনি জটিলতা আছে বলে পাল্টা দাবি করেছে রাজ্যে। যার জেরে চার সপ্তাহের জন্য ওই রায় কার্যকরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
১৯৯৩ সালের মার্চে বউবাজারে প্রবল বিস্ফোরণে ধূলিসাত্ হয়ে যায় বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের আস্ত একটি বাড়ি৷ মৃত্যু হয় সত্তরেরও বেশি মানুষের৷ আহত হন অনেকে৷ ওই বাড়িতে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছিল বলে পুলিশি তদন্তে উঠে আসে৷ বিস্ফোরণের মূল চক্রী ছিল কলকাতার সাট্টা কারবারের ‘বেতাজ বাদশা’ রশিদ খান৷ তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। বলা হয়, রশিদ খানের কাছে যে পরিমাণ বিস্ফোরক ছিল, তা গোটা কলকাতা ধুলিসাৎ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মহম্মদ খালিদ সেই রশিদের ছায়াসঙ্গী। ওই মামলায় তাঁকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। কয়েক বছর আগে খালিদ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ডে’ আবেদন করে। সেই আবেদন খারিজ হওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হয় খালিদ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের মুক্তি দিতে রাজ্য সরকারের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ রয়েছে। সেই পর্ষদ বিবেচনা করে দেখে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বন্দির আচার-ব্যবহার কেমন, কতটা বদল হয়েছে তাঁর মানসিকতার, তিনি যে-অপরাধে জেল খাটছেন, সেই সাজা এত দিনে যথেষ্ট হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়। তারপরই তার মুক্তি নিয়ে বিবেচনা করা হয়। সাধারণত সাজা খাটার ১৪ বছর পরে সরকারের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ সংশ্লিষ্ট বন্দির মুক্তির বিষয়টি পর্যালোচনা করে। খালিদের ক্ষেত্রে ৩১ বছর পার হয়েছে। সেটা বিবেচনা করেই ১৫ দিনের মধ্যে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সব ঠিকঠাক থাকলে দ্রুত সে মুক্তি পাবে।
