শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নয়, প্রার্থী হোক প্রকৃত কর্মীরা! এবার তৃণমূলকে সমর্থনের বার্তা আদি বিজেপির

লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) মুখে চরম অস্বস্তিতে বিজেপি (BJP)। প্রার্থী বাছাইয়ে নির্বাচনে অনাস্থা প্রতিবাদ সভা করল বাংলার বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ (BJP Banchao Manch)। সংগঠনের হুঁশিয়ারি, “প্রকৃত বিজেপি” কর্মীদের প্রার্থী করা না হলে নোটায় ভোট দেওয়া দেওয়ার আবেদন করা হবে। প্রয়োজনে বিরোধী তৃণমূলের (TMC) পক্ষে লোকসভা ভোটে প্রচার করা হবে।

বঙ্গ বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাশীল গোষ্ঠীর বিরোধিতা করে লাগাতার প্রতিবাদ করে আসছে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ। সেন্ট্রাল এভিনিউতে রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে এর আগেএ সুকান্ত মজুমদার, অমিতাভ চক্রবর্তীদের ছবিতে জুতোপেটা করে আগুন লাগিয়েছিলেন এই বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। এবার বিজেপির আদর্শ বাঁচাতে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কর্মীদের। প্রয়োজনে পোস্টার মেরে তৃণমূলকে জেতান। এমন আহ্বানও দেওয়া হয় সভায়। বলা হয়, “শত্রুর শত্রু আমাদের মিত্র। এই আদর্শ বিচ্যুত বিজেপিকে মানব না।” তবে এটাও তাঁরা স্পষ্ট করে দেন যে, “দল ছাড়ব না। বিজেপিকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী দেব। যে কায়দায় কেজরিওয়াল, হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করা হল, সেই কায়দায় অভিষেককে গ্রেফতার নয় কেন? শুভেন্দুর নামে সিবিআই-এর চার্জশিট! তাঁকে নেতা হিসেবে মানব কেন? প্রতিটা প্রার্থী-ই অযোগ্য। চ্যালেঞ্জ করছি। প্রয়োজনে মানহানির মামলা হোক।”

প্রসঙ্গত, বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় তীব্র অসন্তোষ দানা বাঁধে। বীরভূমের প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরকে নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। তিনি দাবি করেন, এবার স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করলে সুবিধা পেত বিজেপি। সাধারণ মানুষ এবং বিজেপি কর্মীদের কথা না শোনার খেসারত দিতে হবে দলকে।

 

 

পাশাপাশি দমদম, রায়গঞ্জ, রানাঘাট, মালদা উত্তর ও জয়নগরেও অসন্তুষ্ট স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। দমদম লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত। আর তারপরই দেখা দিয়েছে ক্ষোভ অসন্তোষ। বিজেপি কর্মীদের মধ্যে অনেকে জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের প্রার্থী করা হয়নি। প্রার্থী করা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ শীলভদ্র দত্তকে।

এই নিয়ে অসন্তুষ্ট দলের আদি কর্মীরা দমদম এলাকার বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেন। সেভ বেঙ্গল বিজেপির তরফে দেওয়া পোস্টারে লেখা, ‘দমদম লোকসভা কেন্দ্র ও বরানগর বিধানসভা কেন্দ্র হাতছাড়া করার চক্রান্তকারী শুভেন্দু অধিকারী’র চাপিয়ে দেওয়া প্রার্থীকে মানছি না, মানব না।’ ওদিকে বারাসতের প্রার্থী স্বপন মজুমদারকে নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। আবার যেমন রায়গঞ্জে বিদায়ী সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে দক্ষিণ কলকাতায় প্রার্থী করা হয়েছে। রায়গঞ্জে প্রার্থী হয়েছেন কার্তিক পাল। যিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। দেবশ্রী চৌধুরীকে রায়গঞ্জ থেকে সরিয়ে দক্ষিণ কলকাতায় প্রার্থী করার পিছনে শুভেন্দুর কলকাঠি রয়েছে বলে দলের একাংশের বক্তব‌্য। সবমিলিয়ে বাংলার আদি বিজেপি লোকসভা ভোটের আগে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করল সুকান্ত, শুভেন্দুদের বিরুদ্ধে।

 

Previous articleইদের সকালে বরানগরে প্রচারে মুখোমুখি তন্ময়-সায়ন্তিকা, সৌজন্যের রাজনীতির দেখল বাংলা
Next articleউপার্জনক্ষম প্রাক্তন স্বামীর ভরণপোষণের দায়িত্ব স্ত্রীর! বড় নির্দেশ বম্বে হাইকোর্টর