বাজেট বার্তার প্রতিফলন, বিজেপির ইস্তাহারে বিরোধীদেরই অনুসরণ!

বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারে মূলত তিন ধরনের উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে - সামাজিক পরিকাঠামো, ডিজিটাল পরিকাঠামো ও বাহ্যিক পরিকাঠামো

লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার একমাস চারদিন পরে ইস্তেহার প্রকাশ করল বিশ্বের সর্ববৃহৎ দল দাবি করা বিজেপি। ইস্তেহারে মূলত চলতি অর্থবর্ষে বাজেট প্রস্তাবনায় যে প্রকল্পগুলি সামনে রেখেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, তারই প্রতিফলন দেখা গেল। এমনকি বিজেপি বিরোধী জোটের ক্ষমতাসীন রাজ্যগুলিতে নির্বাচনের আগে যে ধরনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেই বার্তাই বিজেপির ইস্তেহারেও ঘুরে ফিরে এসেছে। তবে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতি সঙ্গে জোর দেওয়া হয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আর এক দেশ এক ভোট প্রণয়ন করায়।

বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে মূলত তিন ধরনের উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে – সামাজিক পরিকাঠামো, ডিজিটাল পরিকাঠামো ও বাহ্যিক পরিকাঠামো। সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নয়নে দরিদ্র শ্রেণি, মহিলা, কৃষক ও যুবদের উন্নয়নে জোর দিতে যে পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে তাতে নতুন কিছু নেই, মার্চে বাজেট পেশের সময় যে পরিকল্পনা প্রস্তাব করা হয়েছিল, তারই ছবি বিজেপির ইস্তেহারে। বাংলায় এসে রাজ্য সরকারকে আয়ুষ্মান ভারত নিয়ে আক্রমণ করলেও বিজেপির ইস্তেহারে এই প্রকল্পে ষাটোর্ধ্বদের অন্তর্ভুক্ত করা ছাড়া নতুন কোনও দিশা নেই। আবার ধর্মীয় পর্যটনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও আলাদাভাবে অযোধ্যারই উল্লেখ করা হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে জিতে দেশের ক্ষমতায় এলে আবারও কেন্দ্রের নজর যে উত্তর ভারতমুখি থাকবে তাও স্পষ্ট ইস্তেহারে।

যুব সম্প্রদায়ের উন্নয়নে প্রচুর কর্মক্ষেত্রের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বিজেপির ইস্তেহারে। অথচ কোন পথে বা কোন ক্ষেত্রে এই চাকরির পথ দেশের যুবদের জন্য খুলবে তা নিয়ে কোনও দিশা বিজেপির ইস্তেহারে নেই। যে শিক্ষা নিয়ে যুব সম্প্রদায় নতুন বিজেপি প্রতিশ্রুতি দেওয়া স্টার্টআপ বানাবে – সেই শিক্ষা নিয়ে কোনও বার্তা বিজেপির ইস্তেহারে নেই। তবে শিক্ষা নিয়ে কোনও বার্তা না থাকলেও বিজেপি যে ধর্মীয় রাজনীতি দিয়েই কেন্দ্রের সরকার চালাতে চায় তার প্রতিফলন ইস্তেহারেই রয়েছে।

সামাজিক পরিকাঠামো উন্নয়নে দরিদ্রের উন্নয়নে বাড়ি তৈরির যে বার্তা বিজেপির ইস্তেহারে রয়েছে, বাংলায় সেই প্রকল্প অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে। দরিদ্রের ঘরে বিনামূল্যে বিদ্যুতের বিজেপির প্রতিশ্রুতির বার্তা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জোটের মঞ্চ থেকে দিয়েছিলেন, তাঁর জেলে যাওয়ার পরে তাঁর স্ত্রী সেই ঘোষণা করেন। মহিলাদের উন্নয়নের লাখপতি দিদি ও স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর জন্য যে প্রতিশ্রুতি বিজেপির ইস্তেহারে রয়েছে সেই সব প্রকল্প বাংলায় অনেক আগে থেকেই প্রণয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের কৃষকরা মাসের পর মাস আন্দোলন চালানোর পরেও কৃষকদের জন্য বিজেপির ইস্তেহারে সেই দাবি পূরণে কোনও বার্তা নেই।

 

Previous articleরবিবাসরীয় সকালে আমেরিকায় বন্দুকবাজের হানা, শিশুসহ মৃত ২
Next articleঅভিষেকের হেলিকপ্টারে ট্রায়াল রানের সময় আয়কর দফতরের হামলা, মিলল না কিছুই