১৯-এর বঞ্চনার জবাব ১৯ এপ্রিল দিন: আলিপুরদুয়ারে জনসমুদ্র ভেসে বার্তা অভিষেকের

“পাঁচ বছর আগে ভোট নিয়ে গিয়ে আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। ধারাবাহিক ভাবে প্রতারণা করেছিল। আমি অপেক্ষা করছিলাম মোদি বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বা সর্বভারতীয় সভাপতি বিজেপির কবে আসবে। এল না তারা। জন বার্লা ছিল আগের প্রোডাক্ট। এখনকার প্রোডাক্ট হল মনোজ টিগ্গা।“ মঙ্গলবার, দলীয় প্রার্থী প্রকাশচিক বরাইকে সমর্থনে আলিপুরদুয়ারে মোগা রোড শো শেষে নরেন্দ্র মোদি-সহ উত্তবঙ্গের বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। আগামী ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার নির্বাচন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে। অভিষেকের কথায়, ২০১৯-এর বঞ্চনার জবাব ১৯ তারিখ দিন। একই সঙ্গে মোদির দেখানো ট্রেলার নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক।

গতবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। কিন্তু ভোট নিয়ে উত্তর থেকে উড়ে গিয়েছিল গেরুয়া শিবিরের ভোটপাখিরা। উন্নয়নের বদলে, বাংলার মানুষ যাতে প্রাপ্য টাকা না পায় তার জন্য দিল্লিতে দরবার করেন বিজেপির সাংসদরা। সেই বিষয় নিয়েই এদিন কোচবিহারের সভা ও আলিপুরদুয়ারে সভা থেকে তোপ দাগেন অভিষেক (Abhishek Banerjee)। উত্তরে শেষ মুহূর্তের প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। এদিন কোচবিহারের তৃণমূল প্রার্থী জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার সমর্থনে প্রচার সভার পরে, আলিপুরদুয়ারে কলেজ হল্ট থেকে চৌপথী পর্যন্ত রোড শো করেন অভিষেক। সঙ্গী হন আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইক, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গঙ্গা প্রসাদ শর্মা। রাস্তায় শুধু জনসমুদ্র। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে সংখ্যায় রোড শোতে অংশ নিয়েছিলেন, তার কয়েক গুণ সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিল। মূহুর্মূহ স্লোগান উঠছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নামে। এভাবে জনস্রোতে ভেসে হুড খোলা ট্যাবলো নিয়ে তিনি পৌঁছন আলিপুরদুয়ার চৌপথীতে। সেখানেই বিজেপি বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, “পাঁচ বছর আগে ভোট নিয়ে গিয়ে আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। ধারাবাহিক ভাবে প্রতারণা করেছিল। আমি অপেক্ষা করছিলাম মোদী বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বা সর্বভারতীয় সভাপতি বিজেপির কবে আসবে। এল না তারা। জন বার্লা ছিল আগের প্রোডাক্ট। এখনকার প্রোডাক্ট হল মনোজ টিগ্গা।“

এরপরেই তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, “এই জেলার সব বিধায়ক বিজেপির জিতেছিল। তাও দিল্লি থেকে এক পয়সা উন্নয়নের জন্য নিয়ে আসতে পারল না। সুমন কাঞ্জিলাল বিজেপি থেকে এসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। মানুষের জন্য ভাল কাজ করেছে। আমরা এই পাঁচ বিধানসভায় হেরেছি বলে, লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করিনি। এখানে বোতল নতুন, মদটা পুরানো। ভেবেছে জন বার্লার জায়গা মনোজ টিগ্গাকে দাঁড় করিয়ে জিতিয়ে নেব। মানুষকে বলব এই বিষ পান করবেন না।’’

অভিষেক বলেন, ‘‘১৯ সালে বলেছিল আচ্ছে দিন আসবে। আচ্ছে দিন এসেছে জন বারলার। আগে চোরেরা চুরি করে জেলে যেত। এখন চুরি করে বিজেপিতে যায়। পতাকা হাতে নিলেই সব মাফ। এদের ভোট দেওয়া আর খাল কেটে কুমীর আনা এক জিনিস’’।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, ’’পাঁচ বছর তাদের কোনো দেখাই পাওয়া যায়নি। এবার ভোটের মুখে ফের ওই ভোট পাখিরা ফিরে এসেছে। এবার নতুন মুখ হাজির করেছে বিজেপি। কারণ পুরোনো সাংসদ তথা মন্ত্রী পাঁচ বছর এলাকার জন্য কিছুই করেনি। শুধু নিজের উন্নয়ন করেছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি জন বারলা একটা কাজ করেছে দেখাক, আমি তৃণমূলের হয়ে ভোট চাইবো না আলিপুরদুয়ারে। বিজেপি সবসময় বলে ডাবল ইঞ্জিন এর কথা। আলিপুরদুয়ার তো ডাবল ইঞ্জিন জেলা, কি করেছে এখানে? কিছুই করেনি।তাই এবার বদলা নেবার পালা।বিজেপি কে ছুড়ে ফেলে দেবার সময় এসেছে।’’ অভিষেকের কথায় ১৯-এর জবাব ১৯ এপ্রিল দিন। ’’আপনারা বিজেপি কে হারান আমি আবার আসবো জুনের শেষে। জন বারলা যে হাসপাতাল করতে পারেনি, আমি কথা দিচ্ছি তার থেকেও ভালো হাসপাতাল আলিপুরদুয়ার পাবে।’’




Previous articleবুধবার ৬ ভাষায় লোকসভা ভোটের ইস্তেহার প্রকাশ তৃণমূলের
Next articleওড়িশার বাস দুর্ঘটনায় মৃতদের চারজন মেদিনীপুরের, শোক নন্দীগ্রামে