গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়া বহুতলের নির্মাণসামগ্রী নিম্নমানের! প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পুরসভায়

আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ন্যূনতম নিয়মকানুন, নিরাপত্তাবিধি মানতে হয়, তার ছিঁটেফোটাও মানা হয়নি।

গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়া নির্মীয়মাণ বহুতলের নির্মাণসামগ্রী নিয়ে কলকাতা পুরসভার কমিশনারের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে। গত ২২ মার্চ তদন্তের জন্য সাত সদস্যের এক কমিটি গঠন করে কলকাতা পুরসভা। জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ে পুর কমিশনার ধবল জৈনের কাছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বহুতলটির নির্মাণে ব্যবহৃত বালি, সিমেন্ট থেকে শুরু করে লোহার রড কিংবা স্টোন চিপ, সব কিছুই ছিল অতি নিম্ন মানের। কম টাকা বিনিয়োগ করে বেশি আয়ের জন্যই এমন করা হয়েছে বলে মতপ্রকাশ করেছে ওই তদন্ত কমিটি। বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্মাণ সংস্থার যে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন, সেটাও ওই প্রোমোটিং সংস্থার ছিল না বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল, বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই কমিটির রিপোর্টে আরও জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার কোনও আইন মানা হয়নি। আবাসন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে ন্যূনতম নিয়মকানুন, নিরাপত্তাবিধি মানতে হয়, তার ছিঁটেফোটাও মানা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ গভীর রাতে গার্ডেনরিচ এলাকার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভেঙে পড়ে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল। ঘটনার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়ে কলকাতা পুরসভা। অভিযোগ ওঠে, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছিল বহুতলটি। তদন্ত কমিটি গঠন করে তড়িঘড়ি ঘটনার সত্য উদ্‌ঘাটন করতে উদ্যোগী হন পুর কর্তৃপক্ষ। ঘটনার দুদিন পরেই তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করেছিল কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট জমা করার পর ওই তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।

ইতিমধ্যেই গার্ডেনরিচের ঘটনার এক মাস পূর্ণ হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আরও দু’সপ্তাহ সময় চেয়েছে কমিটি। কারণ, ঘটনার পর যুগ্ম কমিশনার জ্যোতির্ময় তাঁতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন পুর কর্তৃপক্ষ। অনুসন্ধানের পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে রিপোর্ট তৈরি করতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে ভেঙে পড়া নির্মাণের কলাম এবং চাঙড়ের নমুনা ও মাটি সংগ্রহ করেছেন যাদবপুরের বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মাটির নমুনা সংগ্রহ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।




Previous articleউচ্চ মাধ্যমিকে কড়া প্রশ্ন, মেধাকে গুরুত্ব দিতে তৎপর সংসদ
Next articleআচমকা বৃষ্টির জেরে বানভাসি দুবাই! জলের তলায় গোটা শহর, বিপর্যস্ত জনজীবন