দার্জিলিংয়ের দুর্গম বুথে ঘোড়ার পিঠে EVM চাপিয়ে পায়ে হেঁটে ভোটকর্মীরা

আগামিকাল, শুক্রবার চলতি লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় রাজ্যের তিন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ। গত, শুক্রবার উত্তরবঙ্গের তিন কেন্দ্র কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ওই তিন কেন্দ্রে সার্বিকভাবে ৮২ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। এবার উত্তরের আরও তিন কেন্দ্র দার্জিলিং, বালুরঘাট ও রায়গঞ্জে ভোট গ্রহণ।

দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রে এবারও নজর কেড়েছে “ঘোড় সওয়ার ইভিএম”! ঘোড়ার পিঠে ইভিএম সহ বিভিন্ন সরঞ্জম নিয়ে সকাল থেকেই পায়ে হেঁটে দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছেন ভোটকর্মীরা। বিশেষ করে দার্জিলিংয়ের দুর্গম শ্রীখোলার কাছে ভারত-নেপাল সীমান্তে রাজ্যের সর্বোচ্চ (প্রায় ৯,২০০ ফুট) ভোটগ্রহণ কেন্দ্র। আজ, বৃহস্পতিবার সেখানে ঘোড়ার পিঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।

গাড়ি চলাচলের উপায় নেই। একটা উচ্চতার পর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের পৌঁছনোর উপায় হেঁটে, ঘোড়া কিংবা খচ্চরের পিঠে। তাই আশপাশের আরও কয়েকটি দুর্গম ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সঙ্গে এই ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছতে ইতিমধ্যেই রওনা হয়ে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। ২০১৪ সালেই প্রথম নির্বাচন দেখেছে শ্রীখোলার এই ভোট গ্রহণ কেন্দ্রটি। তার আগে দুর্গমতার কারণে ভোট দেওয়া হয়নি কোনওদিন। প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ভোট দিতে যেতে হওয়ায় বেশিরভাগই ভোট দিতেন না। এখনও পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। ভরসা সোলার সিস্টেম। এমনকী নির্বাচন হলেও রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরা প্রচারেও যান না সেখানে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বহু অসাধ্য সাধন করে একবার পৌঁছেছিলেন দেড় হাজার জনসংখ্যা বিশিষ্ট শ্রীখোলায়। সেই সভায় প্রায় গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছিল যাত্রাপালা দেখার মতো আগ্রহ নিয়ে। শ্রীখোলা ছাড়াও, ডারাগাঁও এবং রাম্মামও দুর্গম ভোট কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম এবং উচ্চতায় শ্রীখোলার কাছাকাছি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলি বেশ দুর্গম এলাকায়। ফলে, কোনও যানবাহনে সেখানে পৌঁছনো সম্ভব নয়। তাই ওই এলাকায় ভোট নিতে ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটার হাঁটা পথই ভরসা ভোটকর্মীদের। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে এমন দুর্গম ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা এবার অন্তত ১৬ টি৷ ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের ভোট নিতে ভোটকর্মীরা কখনও ঘোড়া কিংবা খচ্চরের পিঠে ইভিএম মেশিন-সহ ভোট সামগ্রী চাপিয়ে নিজেরা পায়ে হেঁটে পৌঁছন। তার জন্য একদিন আগেই তাঁদের ওই এলাকায় পৌঁছে যেতে হয়। এলাকায় ভোট নিরাপত্তা রক্ষায় বাহিনী ও পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে, বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী দিলেও এই তিন কেন্দ্রেও লড়াই মূলত বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। দার্জিলিংয়ে টানা তিনটি লোকসভায় জিতে আসছে বিজেপি। তবে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। দার্জিলিংয়ে রয়েছেন ১৪ জন প্রার্থী। ১২ জন পুরুষ ও ২ মহিলা প্রার্থী।

আরও পড়ুন- কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের উৎকর্ষ কেন্দ্র চালু আইইএম-এর

দার্জিলিংয়ে মোট বুথের সংখ্যা ১৯৯৯। তার মধ্যে দার্জিলিঙে স্পর্শকাতর বুথ ৪০৮। কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই দফায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি ভোট নিরাপত্তায় প্রায় ৭,২৩৭ জন রাজ্য পুলিশের কর্মীকে রাখা হচ্ছে। ১০০ শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ভোট কর্মীরা সকাল থেকেই শিলিগুড়ির ডিসিআরসি অফিস থেকে নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রের দিকে রওনা দিতে শুরু করেছেন।

 

Previous articleকোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের উৎকর্ষ কেন্দ্র চালু আইইএম-এর
Next articleভোট দিতে পারবেন না আলিয়া? নাগরিকত্ব ইস্যুতে আটকে বলিউডের ‘গাঙ্গুবাঈ’!