‘সৌজন্য-ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়েছেন’! অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ তৃণমূলের 

কদর্য ভাষায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা একজন মহিলাকে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন আমরা তাতে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করছি। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তাঁর চরিত্র ও ডিএনএ-র পরিচয় দিয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। উনি ভদ্রতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন। একজন প্রাক্তন বিচারপতির ভাষা এমন হতে পারে যা একেবারেই কল্পনাতীত। তিনি নিজেকে বঙ্গসন্তান হিসাবে যে পরিচয় দিচ্ছেন তাতে রাজ্যবাসী হয়ে আমরা লজ্জিত। এরা কী মনে করছেন? শুক্রবার তমলুকের (Tamluk) বিজেপি প্রার্থীর(BJP Candidate) বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। এদিন দলের তরফে ডেরেক ও’ব্রায়েন কমিশনে (Election Commission of India) চিঠি দিয়ে নালিশ জানিয়ে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন। আগামী পঁচিশে মে তমলুকে ভোট। আর তার আগেই নির্বাচনী প্রচার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) বেনজির ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপি প্রার্থী তথা কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন তারই পাল্টা জবাব দিলেন, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মমতাকে বেলাগাম আক্রমণের কারণে শুক্রবারই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পথে নামছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলের তরফেও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে শুধু অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নন, বিজেপিকেও একহাত নিয়েছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি তাঁকে নিয়ে মঞ্চে বসাবেন তাঁকে দিয়ে ভাষণ দেওয়াবেন আর এমন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সূনজরে পড়বেন তিনি। সেকারণেই বিজেপিও দায় ঝেড়ে ফেলতে পারে না। শশী মনে করিয়ে দেন নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আরপিএম আইন অনুযায়ী কীভাবে এমন ভাষা ব্যবহার করতে পারেন? মন্ত্রী সাফ জানান, এভাবে চলতে পারে না। বিজেপির দেউলিয়াপনার কথা মনে করিয়ে এদিন বিজেপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেন শশী। পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দেন, এত নির্বাচন হয়েছে ভারতের কোনো প্রার্থী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো নিম্ন রুচির ভাষা ব্যবহার করেননি। অন্যদিকে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, সৌজন্য-ভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এত অসম্ভব খারাপ কথা আপনার মুখে শোনা যাচ্ছে যে মানুষ আপনাকে আর মানুষ ভাবছে না’। শুধু মমতাকে নন, বাংলার সব মহিলাকে অপমান করেছেন অভিজিৎ।

এছাড়াও নির্বাচন কমিশনকেও কাঠগড়ায় তুলে শশী বলেন আদর্শ আচরণ বিধি জারি থাকলেও কীভাবে একজন প্রার্থী একজন মহিলাকে এভাবে আক্রমণ করতে পারেন? তবে পুলিশের এফআইআরের ভিত্তিতে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা যাবে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে তমলুকে অশান্তির ঘটনায় শ্লীলতাহানি সহ একাধিক অভিযোগে এফআইআর করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানির শেষে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কোও রকম তদন্ত করা যাবে না এই মামলায়। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত তদন্তের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।