কীসের ভয়! তল্লাশি হতেই কেন আদালতে ছুটলেন শুভেন্দু-হিরণ

লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ-এজেন্সি। মঙ্গলবার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ভাড়াবাড়ি তথা অফিসে পুলিশ তল্লাশি চালায়। তা নিয়ে থানা ঘেরাও করে ধুন্ধুমার চালান দলবদলু অধিকারী। রাতে ঘাটালের বিজেপি (BJP) প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের (Hiran Chatterjee) আপ্তসহায়কের বাড়িতেও হানা দেয় পুলিশ। গোঁসা হয় তাঁরও। এরপর বুধবার সকালে দুজনেই মামলা ঠুকতে যান কলকাতা হাই কোর্টে। দুজনকেই মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। শুক্রবার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এতো রাগ দেখাচ্ছেন কেন বিজেপি নেতারা? তাহলে, কি সত্যিই তাঁদের কিছু লুকোনোর আছে?লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কপ্টারে তল্লাশি চালায় আয়কর। একটা জলের বোতল আর আপেল ছাড়া অবশ্য কিছুই মেলেনি। কিন্তু তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেওয়া বা আদালতের দ্বারস্থ হওয়া- কোনওটাই করেননি অভিষেক। এদিন প্রচার সভা থেকেও, এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গতকাল এক জায়গায় পুলিশ গিয়েছিল তল্লাশিতে। আর উনি কেঁপে কেঁপে উঠছেন। আমার কপ্টারেও তো তল্লাশি হয়, আমি তো মিডিয়ায় বাইট দিতে যাইনি। উনি ভিডিওগ্রাফির দাবি করেছেন। এবার থেকে ইডি-সিবিআই গেলেও ভিডিওগ্রাফি করতে হবে।“

এদিন আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু ও হিরণ।
তাঁদের অভিযোগ, কোনও তথ্য ছাড়াই তল্লাশি চালায় পুলিশ। মামলা করার অনুমতি দিলেও দ্রুততার সঙ্গে শুনানির আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।

নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই কোলাঘাটে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ভাড়া বাড়ি তথা অফিসে তল্লাশিতে যায় কোলাঘাট থানার পুলিশ। এই খবর পেয়ে রেগে অগ্নিশর্মা বিজেপি বিধায়ক। আদালতের দেওয়া রক্ষাকবচ হাতে নিয়ে কোলাঘাট থানা ছোটেন তিনি। থানা ঘিরে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অশান্তি পাকানো চেষ্টা করেন। পুলিশের দাবি, নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে এক দুষ্কৃতীর খোঁজে শুভেন্দুর ওই অফিসে তল্লাশি করা হয়। কমপক্ষে ৭০-৮০ জন পুলিশকর্মী ওই বাড়ি ঘিরে তল্লাশি করেন। পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতাকর্মীরা সেখানে যান। পুলিশের কাজে বাধা দেন তাঁরা। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। এমনকী, পুলিশ কর্মীদের ধাক্কা দিতেও দেখা যায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের। কোলাঘাট থানা ছুটে যান শুভেন্দু। হাতে রক্ষাকবচ। সাংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি দাবি করেন, তাঁর কছে কলকাতা হাই কোর্টের রক্ষাকবচ রয়েছে। এরপরেই দলবদলু দলনেতার অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে শাসকদল। এমনকী, কেন পুলিশ গিয়েছিল তাও না কি জানেন তিনি না!

মঙ্গলবার রাতে হিরণের আপ্তসহায়ক তমোঘ্ন দে-এর বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন হিরণও। এরপরই পুলিশের সঙ্গে জোর করে বাকবিতণ্ডায় জড়ান হিরণ। একসময় উপস্থিত অফিসারের উদ্দেশে হিরণকে রীতিমতে আঙুল উঁচিয়ে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, আপনি পকেটে হাত দিয়ে কথা বলছেন কেন? আমি একজন বিধায়ক, আপনি পকেটে হাত দিয়ে কথা বলতে পারেন না। পালটা পুলিশ অফিসার হিরণকে বলেন, আপনিও আঙুল তুলে কথা বলতে পারেন না।

এই বিষয় নিয়েই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, পুলিশ যদি তল্লাশিকে অফিসে যায়, তাতে কী অসুবিধা বিজেপি নেতাদের? এতে এতো উদ্বিগ্ন হওয়ার বা ভয় পাওয়ার কী আছে? তাহলে কি সত্যিই কোনও অসামাজিক কাজ হচ্ছিল? তা না হলে, কেন আদালতে ছুটছেন বিজপি বিধায়ক ও প্রার্থী!






Previous articleবাংলাদেশের সাংসদ খুনের তদন্তে CID,উঠে আসছে একের পর এক সূত্র!
Next articleতল্লাশি হতেই মাথা ঘুরে গেল অমিত শাহর! ৪৩০ আসনে ৩১০-এর দাবি!