খর্ব হলো রাজ্যপালের ক্ষমতা, উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যকে গুরুত্ব সুপ্রিম কোর্টের

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জোর ধাক্কা খেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)।সাংবিধানিক ক্ষমতার ‘অপব্যবহার’ করে নিজের ইচ্ছেমতো রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না রাজ্যপাল। এই ক্ষেত্রে রাজ্যের পছন্দকে গুরুত্ব দিলো সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সোমবার এই মামলার শুনানিতে উপাচার্য নিয়োগে শীর্ষ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। এই কমিটি নামের তালিকা জমা দেবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রীর (CM) অর্ডার অফ প্রেফারেন্সের ভিত্তিতেই উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে রাজ্যপালকে। যদি এই প্রক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যপাল কোনও সমস্যার সম্মুখীন হন তাহলে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্দেশাবলী পোস্ট করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘আরও একবার গণতন্ত্রের জয় হল’।

 

রাজ্যের উপাচার্য নিয়োগে বারবার নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের তরফে সুপারিশ করার নাম বাতিল করে দিয়ে নিজের পছন্দমত বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য নিয়োগ করেছেন বোস। গোটা ঘটনার বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর রাজ্যপালের ক্ষমতা যে অনেকটাই খর্ব হয়ে গেল সে কথা মানছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য দেওয়া বিজ্ঞাপনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে এদিন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানান, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি এমন ভাব দেখাচ্ছিলেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী, নির্বাচিত সরকার সবার উপরে। রাজ্যপালের এই ‘সুপ্রিমেসি’ যে একেবারেই বৈধ নয় সেটা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রীতিমতো স্পষ্ট। এটা রাজ্যপালের জন্য একটা বড় ধাক্কা এবং রাজ্যপালের জন্য বড় শিক্ষা। যেভাবে তিনি একের পর এক উপাচার্যকে কাজ চালানোর কথা বলেছেন সেটা একেবারেই বৈধ নয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রায়দানের পর এভাবেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি মনে করিয়ে দেন কোনও অবস্থাতেই মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে গিয়ে রাজভবন থেকে এই স্বেচ্ছাচারিতা চলতে পারে না, রাজ্য সরকারের সেই কথাতেই এদিন মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বারবার তিনি যেভাবে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের রাস্তায় যাচ্ছেন, জটিলতা তৈরি করছেন তা একেবারেই সঠিক নয়। তবে এদিনের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর একটি কথা বলারও কোনও নৈতিক অধিকার নেই রাজ্যপালের। রাজ্য সরকার যেগুলি পাঠাবে সেগুলি নির্দিষ্ট সময়ে অনুমোদন করে দেওয়া উচিত।

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে সুপ্রিম নির্দেশ

• উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যের পছন্দকে গুরুত্ব দিল সুপ্রিম কোর্ট

• রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি

• সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে

• মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নাম পাঠাবে সার্চ কমিটি

• প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিন জনের নামের তালিকা

• মুখ্যমন্ত্রীর বেছে দেওয়া নামের তালিকা থেকে উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে রাজ্যপালকে

• বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকে তিন মাসের মধ্যেই নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে

 

চেয়ারম্যানকে প্রতি কমিটির জন্য à§© লক্ষ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। এছাড়াও মিলবে ইকোনমি ক্লাসের বিমান ভাড়া। à§© মাসের মধ্যে রাজ্যের ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের কাজ শেষ করতে হবে বলে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ। এ দিন উপাচার্য নিয়োগ মামলার শুনানির পর এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘আরও একবার গণতন্ত্রের জয় হল’।