Friday, November 14, 2025

বাহ্ স্বস্তিকা! উৎসবে ‘না’ বলে নিজের ছবির প্রচার, এটাই প্রতিবাদ!

Date:

Share post:

আমার শিল্প রুজি, আর তোমার শিল্প উৎসব! আমারটা শিল্পের প্রয়োজনে-ভালো ছবি দেখানোর প্রয়োজনে, আর তোমারটা উৎসব! এ কেমন প্রতিবাদের রাস্তা দেখাচ্ছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukhopadhyay)? নিজের সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) পেজে বড় করে উৎসব বলা ভালো দুর্গোৎসব পালন না করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। অথচ সেই একই পেজে দুর্গাপুজোয় নিজের ছবি ‘টেক্কা’ রিলিজ করার খবর দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রয়েছে ছবি দেখার অনুরোধও। তার মানে দুর্গাপুজোর সময় মাতৃ আরাধনা করলে সেটা উৎসব, অথচ ফিল্ম দেখে হুল্লোড় করাটা উৎসব নয়! এই বার্তাই কি দিতে চাইছেন সমাজ সচেতন অভিনেত্রী স্বস্তিকা? ফিল্মের সঙ্গে জড়িত যাঁরা তাঁদেরও যেমন রোজগার জড়িয়ে থাকে একটা ছবি ঘিরে, তেমন পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে লাখো প্রান্তিক মানুষের রুজি। পুজোতে সামিল না হওয়ার বার্তা দেওয়া মানে সেই হতদরিদ্র মানুষের পেতে লাথি মারার আহ্বান জানানো। একটা একটা নিকৃষ্ট অপরাধ-অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যেয়ে আরও একটা অন্যায় জন্ম নিচ্ছে না কি?

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে (R G Kar Madical College And Hospital) তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় প্রতিবাদে, বিচারের দাবিতে গর্জে উঠেছে বাংলা-সহ সারাদেশ। আপামর ভারতবাসী চাইছেন সঠিক দ্রুত বিচার। সেই দাবিতে সামিল সেলেবরাও। টলিউডের পরিচিত মুখ অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই প্রতিবাদে আছেন। অবশ্য যে কোনও প্রতিবাদেই তিনি যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা নেন। সেটা বাংলাদেশের ঘটনা হোক বা কলকাতা। আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাতদখলে থেকেছেন, রাস্তাদখলে থেকেছেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছে প্রতিবাদী পোস্টারে। এর মাঝেই কিছুদিন আগে আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে তাঁর অভিনীত ছবি ‘টেক্কা’-র পোস্টার দিয়ে পোস্ট করেছেন স্বস্তিকা। লিখেছেন,

*“সাহেব বিবি গোলামের দেশে, আস্তিনে থাক….”

এবার পুজোয় দেখা হচ্ছে #Tekka-র সাথে!*

এতে কোন সমস্যা নেই। প্রতিবাদ প্রতিবাদের মতো চলবে কিন্তু জীবন তো থেমে থাকবে না। আর তার জন্য প্রয়োজন রুজি রোজগার। নিজের ছবি দেখার আবেদন ফিল্মের নায়িকা করবেন এটাই তো স্বাভাবিক। এই সবটা ঠিকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সোমবার স্বস্তিকা বিভিন্ন প্রতিবাদের মাঝখানে আরেকটি পোস্ট করলেন,

“উৎসবে ফিরছি না”

কেন? যে পুজোর সঙ্গে লাখো প্রান্তিক মানুষের রুটি রুজি জড়িয়ে থাকে, তাকে বয়কটের কারণ কী? যে মানুষগুলো সারাবছর এই পুজোটার দিকে তাকিয়ে থাকে, এই কদিনের রোজগারে সারা বছর চালাবেন, সন্তানরা দুটো ভালো-মন্দ খাবে, পরিবারের সবার অন্তত একটা হলেও নতুন বস্ত্র হবে, পরিবারের মুখে একটু হাসি ফুটবে- তাঁদের সেই আনন্দে কেন বাধা? সিনেমা দেখতে গেলে উৎসব হয় না? চলচ্চিত্র (Cinema) শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা আয় করবেন- সেটা ভালো কথা, বাংলা ছবির প্রসার তো সবাই চায়- তা বলে গ্রামের ঢাকির ছেলে পাঁচটা দিন ভালো মন্দ খাবে না? প্যান্ডেলে বাঁশের কাজ করা যুবকের পুজোয় একটা নতুন টি-শার্ট হবে না? আলোকসজ্জা করেন যে শিল্পীরা তাঁদের জীবনে এতোটুকু আলো ফুটবে না? উৎসব বয়কট করা মানে কি প্রান্তিক মানুষের পেটে লাথি মেরে নিজেদের রোজগারটা ঠিক রাখা? নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করলে এই ধোঁয়াশা কিন্তু স্বস্তিকার মতো অনেক মানুষদের ঘিরেই তৈরি হবে।


spot_img

Related articles

সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানি! গ্রেফতার RG Kar আন্দোলনের ‘বিপ্লবী’ ডাক্তার

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতে সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে। ঘটনায় গ্রেফতার বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের...

আন্দুল রোডে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! ভস্মীভূত দুই স্পঞ্জ কারখানা 

রাতের হাওড়ায় ভয়াবহ আগুনে কার্যত ছারখার হয়ে গেল আন্দুল রোডের পাশে হাঁসখালি পোল এলাকার দুটি স্পঞ্জ তৈরির কারখানা।...

সোনারপুরে শুরু হচ্ছে প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে নিউমোনিয়া ও ফ্লু টিকাকরণ কর্মসূচি

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বাড়ছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই রোগ অনেক সময় প্রাণঘাতী...

প্রকাশিত হল আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

প্রকাশিত হল আগামী বছরের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি। কাউন্সিলের তরফে এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি...