আশ্বাস নেই অধ্যক্ষের কাছে! নিগমের দ্বারস্থ ‘সাসপেন্ডেড’ জুনিয়র ডাক্তাররা, অনিকেতকে ‘মানহানির নোটিশ’

মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতে পারছেন না অধ্যক্ষ। পরোক্ষে হুমকি দিচ্ছে রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন (RDA)। বাধ্য হয়ে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের (Narayan Swarp Nigam) সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দিলেন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (R G Kar Madical College And Hospital) ‘সাসপেন্ডেড’ জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে তাঁদের সেই সাসপেনশন-বহিষ্কারের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে। কিন্তু বুধবার কাজে যোগ দিতে গিয়েই সমস্যার সম্মুখীন হন তাঁরা। অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা না মেলায় শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যভবনে স্মারকলিপি জমা দিলেন অরিত্র মণ্ডল, প্রণয় মাইতি, শ্রীশ চক্রবর্তী, সৌরভ দাস, অতনু বিশ্বাসরা। পাশাপাশি নবান্নের মিটিংয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ কড়াই অনিকেত মাহাতকে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন এই জুনিয়র ডাক্তাররা।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে, বুধবার সাসপেন্ডেড ডাক্তাররা আর জি করে কাজে যোগ দিতে যান। সকাল দশটার মধ্যে পৌঁছে গেলেও অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন বেলা দেড়টা নাগাদ। প্রথমে তাঁরা এমএসভিপির সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তিনি জানান, অধ্যক্ষ যেহেতু প্রধান সুতরাং তাঁকে গিয়েই তাঁরা সমস্যার কথা বলুন। অরিত্র মণ্ডলের কথায়, তাঁরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকতে গেলে সবাইকে একসঙ্গে আসতে বাধা দেন অধ্যক্ষ। তাঁর নির্দেশ মতো একজন জুনিয়র ডাক্তারি ভিতরে যান। তবে অরিত্রদের অভিযোগ, সেই সময় RDA-র সদস্যরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকেন। একইসঙ্গে কাজে যোগ দিতে যাওয়া জুনিয়রদের উদ্দেশে একাংশ কটূক্তি করে, স্লোগান দেয় বলেও অভিযোগ। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের ‘ইন্টারফেয়ারেন্স’ কার্যত বেআইনি বলে জানিয়েছিল আদালতও।
সাসপেন্ডেড ডাক্তারদের অভিযোগ, ‘থ্রেট কালচারের’ শিকার হচ্ছে তাঁরাই। এই বিষয়ে অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। তবে অধ্যক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর এ বিষয়ে কিছুই করার নেই। উল্টে এই ইন্টার্নদের সঙ্গে তিনি যথেষ্ট রূঢ় ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। এরপর আবার অধ্যক্ষের ঘরে আসেন এমএসভিপি। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।

অবিলম্বে যেন তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারেন, সেই বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিবকে উদ্যোগ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন এই জুনিয়ার ডাক্তাররা। একই সঙ্গে তাঁরা জানান, বছরে মাত্র ১৫ দিন ছুটি পান এই ইন্টার্নরা। কিন্তু এই তুঘলকি নির্দেশের জেরে তাঁদের বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ রয়েছে। এর জেরে ভবিষ্যতে তাঁদের ডিউটি কন্টিনিউয়ের শাস্তি পেতে হবে কি না তা নিয়েও শঙ্কিত রয়েছেন সৌরভ, প্রণয়রা।

এইসঙ্গে অনিকেত মাহাতর (Aniket Mahato) বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এই জুনিয়র ডাক্তারদের। যার জেরে তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন অতনু বিশ্বাস। অভিযোগ, কোনও প্রমাণ ছাড়াই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাই প্রোফাইল মিটিংয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন অনিকেত। একইসঙ্গে সবার সামনে তাঁদের ‘ন‍্যটোরিয়াস ক্রিমিনাল’ ও ‘পচা ছেলে’ বলেছেন। এর জেরে তাঁদের সম্মানহানি হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে অনিকেতকে মানহানির নোটিশ পাঠিয়েছেন অতনুর আইনজীবী। তিন দিনের মধ্যে যদি সবার সামনে অনিকেত ক্ষমাপ্রার্থনা না করেন, তাহলে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও জানিয়েছেন অতনু বিশ্বাস।