Tuesday, August 12, 2025

R G Kar-কাণ্ডে মৃতার শরীরে মেলেনি বীর্য, একজনের পক্ষে নির্যাতন সম্ভব: রিপোর্ট MIMB-এর

Date:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুন একজনের পক্ষে করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, মৃতার দেহ থেকে উদ্ধার হওয়া লালারস মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইয়ের। মৃতার শরীর থেকে মেলেনি কোনও বীর্য। সিবিআইয়ের প্রশ্নে জানাল ‘MIMB’। সিবিআইয়ের সুপারিশে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক টিম ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মৃতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, ডিএনএ রিপোর্ট- সহ আরও বেশ কিছু নথি খতিয়ে দেখতে Medical Investigation Monitoring Board (MIMB) গঠন করা হয়েছে। সিবিআইয়ে প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দেয় MIMB। ১৫০ গ্রাম বীর্যর যে কথা চাউর হয়, তা যে সম্পূর্ণ গুজব ও ভুয়ো-এই রিপোর্টে সেটাই প্রমাণিত।

আর জি কর-কাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। আদালতের নির্দেশ তদন্তভার যায় CBI-এর হাতে। সঞ্জয়কে হেফাজতে নেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় ফরেনসিকের রিপোর্টের ভিত্তিতেই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শিয়ালদহ কোর্টে শুরু হয়েছে বিচারপর্বও। নির্যাতিতার মৃত্যুর কারণ ও সময় সম্পর্কে জানতে চেয়ে MIMB-এর কাছে ৯টি প্রশ্ন পাঠায় সিবিআই। উত্তরে MIMB জানায়,

  • তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়াকে শ্বাসরোধ ও গলা টিপে খুন করা হয়েছে
  • মৃত্যু হয় ৮ অগাস্ট রাত ১২টা থেকে ৯ অগাস্ট সকাল ৬টার মধ্যে

সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, কী ধরনের যৌন নির্যাতন করা হয়েছিল? ছবি ও ভিডিও দেখে বোঝা ধারনা করা হচ্ছে, দু-ভাবে তাঁর যৌনাঙ্গের হাইমেন ছিঁড়ে গিয়েছে। রক্তাক্ত দেহরসও উদ্ধার করা হয়। চোয়ালের কাছে আঘাতের চিহ্ন ও গলার কাছে যে চিহ্নটি দেখা গিয়েছে, সেটি কামড়ের দাগ বলেই মনে করা হচ্ছে। নির্যাতিতার দেহের উপরের অংশ থেকে লালারস সংগ্রহ করে তার ডিএনএ পরীক্ষা হয়। ডিএনএ রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই দেহরস সঞ্জয় রাইয়ের।

সিবিআইয়ের প্রশ্ন, একজনের পক্ষে কি এই নির্যাতন চালানো সম্ভব? উত্তরে MIMB জানিয়েছে,

  • মুখ, গলা ও যৌনাঙ্গের আঘাত দেখে বলা যায়, একজনের পক্ষে এই আঘাত করা সম্ভব।

সিবিআইয়ের প্রশ্ন, মৃত্যুর আগে নির্যাতিতাকে কী ধরনের আঘাত করা হয়? এর কারণই বা কী? উত্তরে MIMB জানিয়েছে,

  • সব আঘাতই মৃত্যুর আগের। চেপে ধরার জন্যেই গলায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ক্রমাগত শ্বাসরোধের ফলেই চোখ রক্তাক্ত হয়।
  • চশমা ভেঙে যাওয়ার কারণে নাকে আঘাত লাগে।
  • জোর করে কোনও কিছু প্রবেশে যৌনাঙ্গে আঘাত হয়।

সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, বাধা দেওয়ার কারণে নির্যাতিতার দেহে কী কী ধরনের আঘাতে ছিল? উত্তরে MIMB জানিয়েছে,

  • ভোঁতা বস্তু দিয়ে আঘাত করা হলে নির্যাতিতা বাধা দেন। সেই আঘাত সঞ্জয়ের শক্ত হাতের কারণেও হতে পারে

সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে নির্যাতিতার যৌনাঙ্গ থেকে বীর্য অথবা সিমেনের চিহ্ন মেলেনি কেন? MIMB জানায়,

  • অনেক কারণেই সিমেন বা বীর্য না পাওয়া যেতে পারে।
  • পুরুষের যৌনাঙ্গ ছাড়া অন্য কিছু প্রবেশ করালে, অথবা কন্ডোমের মতো কোনও বস্তু ব্যবহার করলে তা সম্ভব।

তদন্তে সিবিআই জেনেছে যে, ধর্ষণের সময় অভিযুক্ত সঞ্জয় কন্ডোম জাতীয় কোনও বস্তু ব্যবহার করেছে- এমন প্রমাণ নেই। সে ক্ষেত্রে অন্য উপায়ে যৌন নির্যাতন করেছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে সিবিআই।

MIMB-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্যাতিতার দাঁতে ‘ব্রেস’ থাকার কারণে মুখের ভিতরে বেশি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে।

আর জি করের ঘটনার পরেই ১৫০ গ্রাম বীর্যর যে কথা চাউর হয়। এই কথা রটানোর পিছনে একশ্রেণির চিকিৎসকও জড়িত। সেই দাবি যে সম্পূর্ণ গুজব ও ভুয়ো-এই রিপোর্টে সেটা প্রমাণিত।

Related articles

লোকসভায় গৃহীত বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার ইম্পিচমেন্ট প্রস্তাব

এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি বিচারপতি যশবন্ত ভর্মার (Yashwant Varma) ইম্পিচমেন্ট প্রস্তাব গৃহীত হল লোকসভায়। মঙ্গলবার, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা...

মোদির ভুল নীতির মাশুল! ১৩ হাজার কোটি ক্ষতির মুখে গোটা দেশ

বছরের পর বছর ধরে ট্রাম্পকে বন্ধু দাবি করে সেই বিরাট ক্ষতির মুখে গোটা দেশকে ঠেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র...

SIR-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, হাইকোর্টের সামনেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা মহিলার! 

ভোটার তালিকা (Voter List) থেকে নাম বাদ কেন? মঙ্গলের সকালে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) চত্বরেই এসআইআরের (SIR) প্রতিবাদে...

বিজেপির ভাষা-সন্ত্রাস, প্রতিবাদে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’-এ মুখরিত দিল্লি

বিজেপির বাংলা-বিদ্বেষ, ভাষা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সংসদ চত্বরে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সাংসদরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক দিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের। সেই...
Exit mobile version