পরিকল্পনাহীনভাবে দেশের মানুষকে ধর্মের নামে মহাকুম্ভে আহ্বান। তার জেরে সাধারণ মানুষের হয়রানি থেকে মৃত্যু আজ নিত্যদিনের সত্য। প্রয়াগরাজে মানুষের মৃত্যু কেন্দ্র ও উত্তরপ্রদেশের ডবল ইঞ্জিন সরকারের কারণেই হয়েছে, তা আজ প্রমাণিত। অন্যদিকে নিউদিল্লি (New Delhi) রেলস্টেশনে পদপিষ্টের (stampede) ঘটনায় কেন্দ্রের সরকারের অবেহলা যেমন স্পষ্ট, তেমনই কেন্দ্রের রেলমন্ত্রকের ব্যর্থতা ও দিল্লির বিজেপি সরকারের ট্রিপল ইঞ্জিনে (triple engine) পদপিষ্টের ঘটনা বলে দাবি তৃণমূলের। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) রাজধানীর রেলস্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সেই সঙ্গে তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, কীভাবে যাদের কারণে নিউদিল্লির মৃত্যুমিছিল, সেখানে তাদেরই তদন্তভার (investigation) দেওয়া হল।

শুধুমাত্র দিল্লি স্টেশন নয়, বিজেপির হাইপ তোলা মহাকুম্ভ (Mahakumbh) ঘিরে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রেলস্টেশনে সাধারণ মানুষের ট্রেন ধরার হয়রানি প্রতিদিনের ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে দোষীদের তদন্তের অধীনে আনার দাবি জানানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) স্পষ্ট করে দিয়েছেন কীভাবে ব্যর্থ রেল দফতর। তিনি জানান, মেলাপ্রাঙ্গন ছেড়ে দিলাম, পর্যাপ্ত ট্রেনের ব্যবস্থা নেই। স্টেশনের (station) ব্যবস্থা নেই। জেনারেল বগির টিকিট (ticket) বিক্রি হচ্ছে হাজার হাজার। কোথায় উঠবে। কাদের ব্যর্থতা, কারা টিকিট বিক্রি করছে। তারা জানে না কটা কামরা, কতজন মানুষ উঠতে পারবে। কতজন মানুষকে ধরতে পারে। হাজার হাজার টিকিট (ticket) বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ পাগলের মতো উঠতে যাচ্ছে। নারকীয় ব্যবস্থা। চূড়ান্ত অব্যবস্থা। পরিকাঠামো, নজরদারি, রেলওয়ে ম্যানেজমেন্টের পরিপূর্ণ ব্যর্থতা।

কেন্দ্রের সরকার ও উত্তরপ্রদেশ সরকার মহাকুম্ভের (Mahakumbh) শেষ পর্যায়ে রেলস্টেশনে নিয়ন্ত্রণের ভাবনা চিন্তা শুরু করলেও তাঁদের অপরাধ কোনওভাবেই ছোট হওয়ার নয় দাবি তৃণমূলের। রবিবার বাংলার আসানসোল (Asansol) স্টেশনে হুড়োহুড়ির ছবি প্রকাশ্যে আসে। তারপরে কুণালের স্পষ্ট দাবি, পরিকল্পনাহীনভাবে ধর্মের নামে, মানুষকে পুণ্যের লোভ দেখিয়ে সেই জায়গায় যাওয়ার আমন্ত্রণ। সৌভাগ্যক্রমে আসানসোলে সেই ধরনের খারাপ ঘটনা ঘটেনি। যেভাবে উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh) সরকার যেভাবে এই কুম্ভকে নিয়ে দিন ক্ষণ জানিয়ে হাইপ তৈরি করছে। যে পরিমাণ মানুষকে প্ররোচিত করছে তার পরিকাঠামো রাখছে না। ফলে আসানসোল বা বিভিন্ন জায়গায় যে পরিমাণ মানুষ ট্রেন ধরতে যাচ্ছে পাগলের মতো। ফলে অন্য ট্রেনের সাধারণ যে যাত্রীরা যাচ্ছেন তাঁরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

অথচ নিউদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের (stampede) ঘটনার পরেও দীর্ঘক্ষণ সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছে ট্রিপল ইঞ্জিন (triple engine) সরকার। কুণাল ঘোষের দাবি, জেনারেল টিকিট বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ আনা, ঢালাও লোককে যদি সেখানে থাকতে বাধ্য করে তার ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তারপরে সেগুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ (Kirti Azad) দাবি করেন, যে ব্যক্তিরা নিউদিল্লিতে পদপিষ্টের ঘটনার জন্য দায়ী, তাঁদেরই তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দুই সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য প্রিন্সিপাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (PCCM)। অথচ প্ল্যাটফর্মে কত টিকিট বিক্রি হবে সেটা দেখা ছিল তাঁরই দায়িত্ব। সেই ব্যক্তি কীভাবে তদন্ত কমিটিতে যিনি অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি করে প্ল্যাটফর্মে লোক ঢোকানোর কাজ করেছেন।


সাংসদ দাবি করেন, কমিটির যিনি দ্বিতীয় সদস্য তিনি মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক (chief security officer)। রাজধানীর রেলস্টেশনে হাজার হাজার মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ছিল তাঁরই। সেই কাজে তিনিই ব্যর্থ হয়েছেন। এরপরেও এই পদপিষ্টের ঘটনার তদন্ত কীভাবে করবেন তিনি, প্রশ্ন কীর্তির।


সোমবারই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) এই আইনজীবী দিল্লি পদপিষ্টের ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তিনি আদালতের কাছে আবেদন জানান, রেলকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যায়। সেই সঙ্গে আবেদনে জানানো হয়, যাত্রী নিরাপত্তায় যেন শীর্ষ আদালত রেল দফতরের জন্য নির্দেশিকা জারি করেন।

–

–

–
–

–
