পানাগড়-কাণ্ডে বর্ধমান থেকে আটক অভিযুক্তদের গাড়ির চালক বাবলু যাদব

পুলিশ আটক করেছে পানাগড় কাণ্ডে অভিযুক্তদের গাড়ির মালিককে

গত রবিবার, পানাগড়ের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় (Panagarh Case)চন্দননগরের তরুণীর মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। যদিও পুলিশ জানিয়ে দিয়েছিল যে, রবিবার রাতে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে কোনও ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। বরং গাড়ি রেষারেষির বলি হয়েছেন ইভেন্ট ম্যানেজার(event manager) সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু পানাগড়ের ঘটনার পর ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও, মঙ্গলবার সন্ধ্যে পর্যন্ত কারোকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।আর এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই আটক করা হল বাবুল যাদব নামে এক অভিযুক্তকে।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার নিজের সহকর্মীদের সঙ্গে একটি গাড়িতে গয়া যাচ্ছিলেন হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের কর্ণধার পেশায় নৃত্য শিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। তার সঙ্গে ছিলেন মিন্টু মণ্ডল ও প্রদীপ দত্ত। তারা দু’জনেই হুগলি জেলার বাসিন্দা। এছাড়াও ছিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা মন্টু ঘোষ। গাড়ির চালক ছিলেন হুগলির ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা রাজদেও শর্মা। কিন্তু ওইদিন রাতে পানাগড়ে একটি সাদা রঙের SUV তে থাকা জনা পাঁচেক যুবক চন্দননগরের বাসিন্দা সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়কে উত্যক্ত করছিল বলে অভিযোগ। সাদা গাড়িটি সুতন্দ্রাদের গাড়িটিকে বেশ কয়েক কিলোমিটার পিছু ধাওয়া করে।

ঘণ্টাখানেক পরে পানাগড় রাইস মিল রোডে সুতন্দ্রাদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। তাতে সুতন্দ্রার মৃত্যু হয়। বাকিরা আহত হন। ঘটনাটি পরের দিন সামনে আসার পর থেকেই এই একই অভিযোগ তুলে আসছিলেন, সুতন্দ্রার সঙ্গীরা। ওইদিনই কাঁকসা থানায়(kanksa police station) একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মিন্টু মণ্ডল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। জানা গিয়েছে, গত সোমবার সাদা SUV গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী বাবলু যাদব। কিন্তু বাবলুকে সোমবারের পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যে পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সোমবার বাবলুর এক কর্মী জিয়া লালকে জেরা করে পুলিশ। কিন্তু সে জানায়, রবিবার সন্ধ্যা সাতটার পরে এই সাদা গাড়ি নিয়ে বাবলু বেরিয়েছিলেন। তারপর আর দেখা মেলেনি।

শেষ পর্যন্ত এই ঘটনায় পুলিশ আটক করেছে পানাগড় কাণ্ডে অভিযুক্তদের গাড়ির মালিক তথা চালক বাবলু যাদবকে।মঙ্গলবার গভীর রাতে বর্ধমানের একটি হোটেল থেকে তাকে আটক করে কাঁকসা থানার পুলিশ। বর্তমানে থানায় রয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ির পুরনো যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী বাবলু স্থানীয় এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। কিছুদিন আগে তার এক কর্মী দুর্ঘটনায় পড়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। রবিবার রাতে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন বাবলু যাদব। সঙ্গে ছিলেন তার সহকর্মীরা। পুলিশের দাবি, ফেরার পথেই নাকি সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ির সঙ্গে রেষারেষি শুরু হয় বাবলুর গাড়ির। কিন্তু যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।