একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বারবার প্রকাশ্যে এনেছেন। তবে সেই তালিকার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MInistry of Home Affairs)। রাজ্যসভায় সেই বকেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই মেজাজ হারালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যে চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড়ের নিরপেক্ষ রাজ্যসভা পরিচালনা করার কথা, তিনি যথারীতি তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলেকে (Saket Gokhale) বাংলার বঞ্চনার তালিকা পেশ থেকে থামিয়ে দিয়ে কথা বলার সুযোগ দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah)।

রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ওপর আলোচনায় বাংলার ইস্যুগুলি তুলে ধরেন। যেভাবে বিরোধী শাসিত বাংলা ও পাঞ্জাবে (Punjab) বিএসএফের সীমা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে, অন্যদিকে বিজেপি রাজ্য গুজরাটে (Gujarat) ৮০ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করা হয়েছে, সেই তথ্য পেশ করে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে আঘাতের অভিযোগ তোলেন সাকেত। সেই সঙ্গে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করা বাংলার সঙ্গে কোন আলোচনাই যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA) করে না, এমন অভিযোগ করেন তিনি।

তবে তৃণমূল সাংসদ সাকেতের মারাত্মক অভিযোগ, যেভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বাংলার জন্য বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে, তা নিয়ে। তিনি রাজ্যসভায় তথ্য পেশ করেন ২০১১-১২ সালে ইউপিএ (UPA) জমানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মর্ডানাইজেশন তহবিলে বাংলাকে ৪৪ কোটি বরাদ্দ করেছিল। ১০ বছর পর ২০২১-২২ সালে সেই বরাদ্দ শূন্যতে এসে দাঁড়িয়েছে। মোদি (Narendra Modi) জমানায় ২০২০ থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত চার বছরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলার প্রাপ্য ১৬০ কোটি। যার একটিও টাকা বাংলা পায়নি। সামগ্রিক হিসাব পেশ করে সাকেত (Saket Gokhale) দাবি করেন মোদি জমানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের (MHA) কাছে বাংলার মোট বকেয়া ৩৮৬ কোটি।

বঞ্চনার ইস্যুতেই বারবার কেন্দ্রীয় এজেন্সি (central agency) দিয়ে বিরোধী দলের ওপর চাপ প্রয়োগের প্রশ্ন তুলতেই রাজ্যসভায় রীতিমতো ক্ষেপে ওঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। বঞ্চনা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে আঘাত নিয়ে যেহেতু বলার কোন অবকাশ রাখেননি রাজ্যের শাসক দলের সাংসদ, তাই এজেন্সি নিয়ে প্রশ্নকে হাতিয়ার করে শাহ দাবি করেন, যে প্রসঙ্গে কথা বলছেন সাকেত তা আদৌ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে নয়। কার্যত রাজ্যসভায় এই একটি কথা বোঝাতে গিয়ে মেজাজ হারান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

–

–

–

–

–

–

–
