Friday, July 4, 2025

অযৌক্তিক, অসঙ্গত, স্বৈরতান্ত্রিক: ওয়াকফ বিলের বিরোধিতায় সরব কল্যাণ

Date:

ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে পেশ হলে তৃণমূলের তরফ থেকে বিরোধিতা করা হবে, আগেই জানিয়েছিলেন সাংসদরা। বুধবার সেই বিলের বিরোধিতায় কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর (Kiren Rijiju) প্রতিটি বক্তব্যকে পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) প্রমাণ করে দেন বিলটি কীভাবে অসাংবিধানিক। সেই সঙ্গে বিল এনে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে কীভাবে আঘাত করছে বিজেপি, স্পষ্ট করে দেন তৃণমূল সাংসদ।

লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল (WAQF Amendment Bill) পেশ করতে গিয়ে কিরেন রিজিজু দাবি করেন, পাঁচ বছরের জন্য ধর্মাচরণের প্রমাণ সাপেক্ষে ওয়াকফ সম্পত্তি নির্ধারিত হবে। সেখানেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, সংশোধনী বিলে (WAQF Amendment Bill) দাবি করা হয়েছে অন্তত পাঁচ বছর ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলে ওয়াকফের অনুমোদন মিলবে। ভারতের সংবিধান অনুসারে কোনও মানুষকে নিজের ধর্মাচরণের (religious duty) জন্য বাধ্য করা যেতে পারে না। সেই সঙ্গে তাঁকে তাঁর সম্পত্তি দান করা থেকে বাধাও দিতে পারে না। সংসদ (Parliament) এই প্রশ্ন করার কে, যে আমি আমার ধর্মাচরণ (religious duty) করছি কি না। এই বিল সরাসরি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে।

সেই সঙ্গে বারবার বিজেপি সাংসদরা বলার চেষ্টা করেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিলের (WAQF Amendment Bill) সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। তথ্য পেশ করে তৃণমূল সাংসদ প্রমাণ করে দেন, এই বিল সরাসরি ধর্মীয় নিয়মে হস্তক্ষেপ করেছে। আদালতের রায় তুলে ধরেন কল্যাণ (Kalyan Banerjee) উল্লেখ করেন, হিন্দু ট্রাস্টের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ নিয়ম মেনে চলা হয়। সেখানে ধর্মীয় স্থান বা বিগ্রহের উদ্দেশে দান করা সম্পত্তি কোনও সংগঠনের অধীনে যায়। মুসলিম ট্রাস্টের আইন সম্পূর্ণ আলাদা। সেক্ষেত্রে দান করা জমি বা সম্পত্তি ওয়াকফের থাকে না। তা আল্লাহর হয়ে যায়। সেই সম্পত্তিতে হস্তক্ষেপ করে বিজেপি সরকার সরাসরি মুসলিমদের ধর্মীয় নিয়মে আঘাত করেছে।

বিল নিয়ে আলোচনায় লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ স্পষ্ট উল্লেখ করেন এই বিলে কেন্দ্রের সরকার মূলত দুটি বিষয়কে টার্গেট করেছে। প্রথমত, ওয়াকফ বোর্ডের (WAQF Board) কর্মক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে তাদের ধর্মীয় ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেছে। তার মাধ্যমে মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণ, পর্যবেক্ষণ ও পরিচালনার কাজ শুরু করার পথে বিজেপি। সেই সঙ্গে রাজ্যগুলিকে শুধুমাত্র বিবাদমান ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি নিয়েই একমাত্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এখানেই সংবিধানের ২৬ (বি) ধারার উল্লেখ করে কল্যাণ তুলে ধরেন, ওয়াকফ ধর্মীয় সংগঠন ও দানের উদ্দেশে তৈরি সংগঠন। ফলে সেই ওয়াকফ নিয়ে বিল আনার অর্থ ধর্মীয় ক্ষেত্রেই হস্তক্ষেপ করা। এর মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মাচরণের ক্ষেত্রে স্পষ্ট হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। যা সংবিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

সেই সঙ্গে রাজ্যগুলিকে শুধুমাত্র বিবাদমান ওয়াকফ সম্পত্তির ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংবিধানের ২৪৬ (১) ধারার উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, সংবিধান অনুসারে সংসদের কোনও ক্ষমতা নেই জমি বা বাড়ি সংক্রান্ত কোনও আইন পাশ করার। একমাত্র রাজ্যেরই অর্পিত জমিতে (vested land) অধিকার রয়েছে। ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষেত্রেও তাই আইন আনার অধিকারও সেক্ষেত্রে রাজ্যের সরকারেই থাকে। সেখানেই রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে সংসদ (Parliament)।

Related articles

গিলের চওড়া ব্যাটে রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া

শুভমন গিলের (Shubman Gill) অধিনায়কোচিতো ইনিংস। আর তাতেই রানের পাহাড়ে টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টনে (Edgebaston) ইতিহাস লিখেছেন...

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল 

রেলের সিগন্যাল কেবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগ ওড়াল ডব্লিউবিএসইডিসিএল। সংস্থার স্পষ্ট বক্তব্য, ওভারহেড তারের বদলে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল সিস্টেম করা...

কেন রুদ্ধদ্বার শুনানি? বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজের জবাব চাইল হাই কাের্ট 

ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশি তলবে সাড়া না দিয়ে গ্রেফতারি এড়াতে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন বিজেপির ‘ধর্ষকবন্ধু’ কার্তিক মহারাজ। বিচারপতি জয়...

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের হুমকির অভিযোগ! বিজেপি নেতা কৌস্তভকে নোটিশ থানার 

ওয়্যারলেস মোড় লাগোয়া একটি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীমৃত্যু ঘিরে অশান্তির আবহে বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর বিরুদ্ধে ‘হুমকি‑হেনস্তা’র...
Exit mobile version