Monday, August 25, 2025

হাতে তৈরি পেনের সম্ভার! শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস মনে করালো পেন উৎসব ২০২৫

Date:

বাঁশ বা খাগের শলাকা কেটে পেন বানিয়ে কালিতে ডুবিয়ে লেখার ইতিহাস তৈরি করেছিলেন প্রাচীন মিশরের (Egypt) মানুষ। আজ সেই খাগের কলমও নেই, লেখার প্যাপিরাসও নেই। কিন্তু সেই খ্রীষ্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছরের ইতিহাসকে ধরে রাখার নেশা রয়ে গিয়েছে মানুষের মধ্যে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে – ইউরোপ থেকে আমেরিকা, চিন – সব দেশের কয়েক শতাব্দী ধরে হাতে তৈরি পেনের কদর করে এসেছেন মানুষ। সেই পেন তৈরিতে প্রস্তুতকারকদের উৎসাহও কম ছিল না। ভারতে হাতে তৈরি পেনের প্রতি মানুষের আকর্ষণটা অনেকটাই নতুন হলেও আজ সেই ইতিহাসও শতাব্দী প্রাচীন। দেশের ঐতিহ্যের ধারক হ্যান্ড মেড পেনের (hand made pen) বিপুল সম্ভার নিয়ে হাজির পেন উৎসব ২০২৫। উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারত – প্রত্যেক সভ্যতার নিদর্শন তুলে ধরে নিজেদের তৈরি কলম নিয়ে হাজির পেন প্রস্তুতকারকরা।

ভারতে হ্যান্ড মেড পেন তৈরি শুরু হয় ১৯২০-র দশকে। সূচনায় মূল ভূমিকা নিয়েছিল তৎকালীন মাদ্রাজ। সেই শহরে যে আজও হাতে পেন তৈরির প্রতি আবেগ থাকবে মানুষের তা বলাই বাহুল্য। সেই চেন্নাই থেকে নিজেদের হাতে তৈরি পেনের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছিল রাঙ্গা পেন্স। কর্ণধার কন্যা পদ্মা জানান, প্রায় ৬০ বছর ধরে হাতে পেন তৈরির ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন এম পান্ডুরঙ্গন। রাঙ্গা পেন্স-এর (Ranga Pens) খ্যাতি ভারত জোড়া। কলকাতার ভক্তদের জন্য প্রথমবার পেনের পসরা সাজিয়ে তাঁরা এসেছেন কলকাতায়। সেই পসরায় যেমন রয়েছে অ্যাক্রিলিক পেন, তেমনই রয়েছে তামা, অ্যালুমিনিয়ামের পেনও। রয়েছে শিংয়ের তৈরি পেনও।

দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যের সম্ভারের পাশাপাশি পেন উৎসব ২০২৫-এ এসেছেন উত্তর ভারতের হাতে তৈরি পেন প্রস্তুতকারকরাও। দিল্লি (Delhi) থেকে হ্যান্ড মেড পেন (Hand made pen) নিয়ে এসেছেন রবি তেওয়ারি। উত্তর ভারতের হাতে তৈরি পেনের ইতিহাস যে দক্ষিণের থেকে কিছুটা নতুন, তা জানালেন রবি। তাঁর সংগ্রহের পেন গুলির মধ্যে গালার উপর সোনা, রুপোর কাজের দেখা মিলল। তাক লাগিয়ে দেবে ডিমের খোসা দিয়ে তৈরি হাতে কাজ। পেনের গায়ে ভারতীয় শিল্পীদের অসামান্য় হাতের কাজ ফুটে উঠেছে। কোনও পেন তৈরি করতে ২০দিন, তো কোনও পেন তৈরি করতে ৩০ দিন সময়ও লাগে বলে জানালেন রবি।

তবে দেশের যে প্রান্ত থেকেই শিল্পী ও কারিগররা এই পেন উৎসব ২০২৫-এ এসেছেন, তাঁদের সকলেরই দাবি, কলকাতাই শিল্পের কদর করে। পেন উৎসবে আসা পেন অনুরাগীদের প্রশ্নের মধ্যে দিয়েই সেটা প্রমাণিত। তাঁরা যে দীর্ঘদিন ধরেই এই সব পেন প্রস্তুতকারকদের খোঁজে ছিলেন, তাও জানালেন তাঁরা। প্রস্তুত কারকরা জানাচ্ছেন, তাঁরা কলকাতায় নিজেদের সামগ্রী তুলে ধরে লাভের মুখ যেমন দেখছেন, তেমনই ভরছে তাদের মনও।

বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পী ও তাঁদের সামগ্রীকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা যে কষ্টকর ছিল, স্বীকার করছেন উদ্যোক্তা সায়ক আঢ্য। তিনি জানাচ্ছেন, সকলকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসা কষ্টকর হলেও এটাই তিনি ভালোবাসেন। পেনের প্রতি আকর্ষণ থেকেই এই দায়বদ্ধতা অনুভব করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বহু মানুষের উৎসাহ তাঁকে আরও এগিয়ে দিয়েছে। এবছরই আবার পেন উৎসব আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন উদ্যোক্তা ও তাঁর সহযোগীরা।

Related articles

ঘোষণা ছাড়াই টালিগঞ্জ থেকেই ঘুরছে মেট্রো! স্বস্তি উড়েছে যাত্রীদের

কথা দিয়ে কথা রাখছে না মেট্রো! কোনও ঘোষণা ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছেমতো ট্রেন চালাচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই ক্ষোভ...

গাজায় সাংবাদিকসহ ১৯ জনের মৃত্যু! নীরব নেতানিয়াহু

দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় ফের রক্তক্ষয়ী হামলা চালাল ইজরায়েলি সেনা। সোমবার দুপুরে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও...

শ্রমশ্রী প্রকল্পে ভুয়ো আবেদন রুখতে কড়া নজরদারি রাজ্যের 

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত শ্রমশ্রী প্রকল্পে প্রকৃত ও যোগ্য প্রার্থীরাই সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ...

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...
Exit mobile version