সীমান্ত রক্ষা করতে পারেন না। আপনি ব্যর্থ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিন। রবিবার, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) সভার ঘণ্টার খানের মধ্যেই তৃণমূল (TMC) ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁকে ধুয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chadrima Bhattacharya), তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ও সাগরিকা ঘোষ। এদিন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শাহ বলেন, ”হিংসা আর রিগিং ছাড়া ভোট হলে তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না।” এই কথা ধরেই তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন চন্দ্রিমারা। তাঁদের কথায়, বিধানসভা নির্বাচন হয় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায়, সেখানে রিগিং হলে দায় তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। আর রাজ্য় অনুপ্রদেশ হলে সেটাও তো কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যর্থতা কারণ, সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব তাঁর অধীনে থাকা বিএসএফ-এর।

এর পরেই ৫টা নাগাদ তৃণমূল (TMC) ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে চন্দ্রিমা প্রথমেই নেতাজি ইন্ডোরে শাহের সভাস্থল নিয়ে বলেন, যেহেতু বাংলায় গণতন্ত্র আছে, সেই কারণেই রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে পারলেন অমিত শাহ। বিজেপি শাসিত রাজ্য হলে বিরোধীদের সভা করতে হলই দেওয়া হত না। ”মনে রাখবেন, জামাইষষ্ঠীর দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের মতো বড় প্রেক্ষাগৃহে বিজেপির কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই এমনটা করেছেন।”

অমিত শাহ এদিন বলেন, ”আমি বলছি, আপনার সময় এবার শেষ হয়ে এসেছে। ২০২৬ সালে বাংলার মাটিতে বিজেপি সরকার গঠন করবে। আমি মণ্ডল পদাধিকারীদের আশ্বাস দিচ্ছি, আমাদের কর্মীদের হত্যার নেপথ্যে যারা দায়ী, সেসব অপরাধীদের মাটির তলা থেকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেব। দিদি, সাহস থাকলে, হিংসা ছাড়া নির্বাচন করিয়ে দেখুন। আপনার জামানত জব্দ করে দেবে বাংলার জনতা।” পাল্টা তোপ দেগে চন্দ্রিমা (Chadrima Bhattacharya) বলেন, ”বলছেন, হিংসা ছাড়া ভোট হলে নাকি তৃণমূলের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, ভোট কি রাজ্য সরকার করায়? ইলেকশনটা কে করবে? করবে তো ন্যাশানাল ইলেকশন কমিশন। তাহলে ব্যর্থতা কার? তা তো দিল্লির নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। ভোটে হিংসা হলে তাহলে নির্বাচন কমিশনেরই দায়।”

এর পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের কথা তুলে চন্দ্রিমারা বলেন, ”অমিত শাহ মহাশয় আপনি ব্যর্থ। আপনার পদত্যাগ করা দরকার। এই যে দেখা গেল পহেলগাম, কী হল আপনার কাছে খবর ছিল না। আপনার যারা ছিল তারা করল টা কী! জম্মু কাশ্মীরের পুলিশ করলটা কী। আপনাদের অবহেলায় চলে গেল ২৬টা প্রাণ। আপনি বলছেন অনুপ্রবেশের কথা। আমরা দেশের স্বার্থে রাজনীতির উপরে উঠে কথা বলি।”


অপারেশন সিন্দুর প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ”যখন অপারেশন সিঁদুর-এর বিরুদ্ধে আমরা কিছু বলছি না। বাস্তব সত্য আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৫টি রাষ্ট্র ঘুরলেন, দেশের কথা বললেন, এক সুরে কথা বললেন। সেখানে এক সুরে যখন দেশের কথা তুলে ধরছেন আর আপনাদের সেই সময়টাই হল দেশের মধ্যে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মেয়েদের সঙ্গে অপমানসূচক খেলা তৈরি করার। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন সেখানেও উঠেছিল অপারেশন সিন্দুরের কথা। অপারেশন বেঙ্গলের কথা বলছেন ওদের রাজ্য সভাপতি! তার মানে টা কী! আপনারা জোর জবরদস্তি করার চেষ্টা করছেন। জাতীয় ইলেকশন কমিশনকে ব্যবহার করে। মেয়েদের পবিত্র জিনিস সিঁদুর, রাজনৈতিক বাজারে বিক্রি করছেন। কী করেছেন মেয়েদের জন্য।”
আরও খবর: ছিঃ শাহ! বিদেশ সফরে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে থাকা অভিষককে বাংলায় এসে আক্রমণ

আরজিকর প্রসঙ্গে অমিত শাহ এদিন বলেছিলেন, একজন মহিলা মুখ্য়মন্ত্রীর জমানায় আরজিকরের মতো ঘটনা হয়। পাল্টা চন্দ্রিমা, সাগরিকারা বলেন, ”আরজিকর আমরাই তো ধরেছি। রাজ্য সরকারের পুলিশ ধরেছে। উন্নাও হাথরাস কী হল। গোধরায় বিলকিস বানু কী হল। আপনাদের একটু ভাবতে হবে মেয়েদের নিয়ে এই খেলা করবেন না। বিজেপি রাজ্যে নারী সুরক্ষা যে নেই সেই নিয়ে আলাদা করে বলতে হবে?”
–

–
–

–

–

–

–

–
